Header Ads

কবিতায় জাগরণ(এপ্রিল-জুন-২০২০)

 


সময়ের হাত ধরে নানা প্রতিকূলতায় এগিয়ে যাচ্ছে জীবন, বিশ্বের মানচিত্রে করোনা ভাইরাস নামক এক ভয়াল মহামারী ছোবল দিয়েছে বিষাক্ততায়, তাই দেশ ও জাতি পার করছে এক মহাক্রান্তি লগ্ন, চায়নার উহান থেকে উৎপত্তি হলেও ছড়িয়ে পড়েছে আজ বিশ্বব্যাপী, লাশের মিছিলে ভারাক্রান্ত চারিপাশ, পৃথিবীর ২১৪ টি  দেশে ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা, এ পর্যন্ত বিশ্বে মৃতের সংখ্যা ৫ লাখ, ১৯ হাজার ছাড়িয়েছে ! মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১ কোটি ৮ লাখ, ৪৮ হাজার। আমাদের দেশেও করোনা মহামারীতে এই পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে দেশের ৬৪টি জেলার ১ লক্ষ ৫৩ হাজার মানুষ এবং মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৯২৬ জন ছাড়িয়েছে। জানি না এর শেষ কোথায়,,,,


কবিতায় জাগরণ পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক সমবেদনা সকল বিদেহী আত্মার প্রতি,,, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মোশত বার্ষিকী উপলক্ষে মুজিব বর্ষ পালিত হচ্ছে 


দেশ জুড়ে,, সবাইকে মুজিব বর্ষের রক্তিম শুভেচ্ছা! 

জয় হোক কবিতার, উন্মুক্ত হোক ছন্দের সীমানা! 


কথা দিবেন কথা রাখার জন্য ভাঙার জন্য নয়,,,

জয় হোক মানবতার,জয় হোক ভালোবাসার!

 



সম্পাদক, কবিতায় জাগরণ

সাহিদা রহমান মুন্নী


ঋতুর সাথে

জাকারিয়া আজাদ





ঋতুর সাথে আকাশ বাতাস

বদলিয়ে যায় মন

বদলিয়ে যায় খাওয়া নাওয়া

বদলিয়ে যায় ক্ষণ ।


গ্রীষ্ম কালে পাকা আমে

মন দিয়ে যায় দোলা

এই সময়ে সকল কিছু

যায় সহজে ভোলা ।


বর্ষা আনে মিষ্টি গানে

টুপ টুপা টুপ টুপ

কিচির মিচির পাখির ডাকা

সব হয়ে যায় চুপ ।


শরৎ আনে শরৎ পাখি

কিচকিচিয়ে ডাকা

মিষ্টি লাগে তবুও যেন

মন লাগেনা ফাঁকা ।


হেমন্তে যে বকুল ফুলের

মন মাতানো ঘ্রাণ

এমন তরো সুবাস পেলে

জুড়িয়ে যায় প্রাণ ।


শীতে আনে শিশির ভেজা

মুক্তো দানা দানা

শীতে আনে রসের পিঠা

রং বাহারি খানা ।


বসন্ত যে কাটে ভালো

কোকিলের- ই সুরে

মন পাখিটা যায় উড়ে যায়

দূরে বহু দূরে ।


.................................................................

বৈশাখ মানে

ইদ্রিস রহমান



বৈশাখ মানে প্রানের উৎসব

বাঙ্গালির মিলন মেলা

বাংলার সংস্কৃতি বাঙ্গালির ঐতিহ্য

কোটি প্রানের দোলা।


বৈশাখ মানে পান্তা ইলিশ

গাঁয়ের মাঠে মেলা

আল্পনা আঁকা মাটির কলসি

চরকা নাগরদোলা।


বৈশাখ মানে প্রেমিকের চোখে

প্রেমিকার চিরচেনা মুখ

লাল পেড়ে সাদা শাড়ি

আত্মার পুলকিত সুখ।


বৈশাখ মানে রমণীর ললাটে

ঊষার রাঙা রবী

সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা

রূপসী বাংলার ছবি।


বৈশাখ মানে ধুসর আকাশে

মেঘেদের আসা যাওয়া

সবুজ দিগন্ত লন্ডভন্ড

বৈরী মাতাল হাওয়া।


বৈশাখ মানে রুখে দাঁড়ানো

বুকে নিয়ে মনোবল

সাহসের সাথে মোকাবেলা

করে আসা চিরকাল।


.................................................................

ব্রীড়াবতী রাতে

জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়



যদিও নদীটি খুব ছোটো তবু তার সুরে আছে জাদু ঢের

যদিও ঘোলা জল শ্রাবণে তবুও ডাকে সুর আগুনের

খুনসুটি তরঙ্গ থামে না শরপাতা প্রতিকূল দুলে যায়

আয়নায় ভাঙা ছবি ঝিকমিক আজ তারা চোখ রাখে জ্যোৎস্নায়।


ঘাসবন জুড়ে দেখি হাওয়া বয় জোনাকিরা ছুটে আসে ঝাঁকে ঝাঁক

কিছু দূরে বাঁক আছে নদীটির সেইখানে কোন পাখি দেয় ডাক?

বেদনা জরোজরো এই রাত সেই তো সঙ্গিনী আজ রাতে

দরোজা নিরুদ্ধ মগজে কেন্দ্র অভিমুখ টান জাগে।


সে ও কেন্দ্রিত এক পথে স্বপ্নপূরণের প্রিয় বাঁক

যা কিছু ছুঁড়ে ফেলে যেতে চাই ভুলের খেয়ালই আজ থাক।

এক একটা রাতে নদী রাক্ষসী বিরক্তি নিয়ে বলে যাও যাও

আমিতো বহতা রয়েইছি আর যা কাজ আছে সেরে নাও।


.................................................................

নববর্ষ

তুলোশী চক্রবর্ত্তী



নববর্ষে চলো মোরা আনন্দে মাতি

সখী চলো সবে মিলে নানা ফুলের মালা গাঁথি,

নতুন বছর নতুন প্রভাত আসছে:পার হলে বছরের শেষ রাত্রি

চলো সবে আনন্দে মাতি,


আহা! রাত পোহাবে পাখির ডাকে নববর্ষের আগমনী গানে,

নদীনালাও গান গাইবে আপন কলত্রানে,

প্রজাপতি ও ডানা মেলে উড়ে যাবে সকলকে নববার্তা দিতে,

আর ফুলে ফুলে নৃত্য করে বেড়াবে প্রফুল্ল চিত্তে,


ওহে পুরানো বছর, সমযের সাথে তোমায় জানাই শুভ বিদায়

বছরের এই অন্তিম দিনের শেষ নিদ্রায়,

প্রদীপ জ্বেলে শাখ বাজিয়ে বরণ করেই নিবো ,নব দিনের নব সন্ধ্যে,

বৈশাখের নব ধূসর বিকেল তো কেটেই যাবে আম কাঠালের গন্ধে,


নববর্ষে চলো মোরা আনন্দে মাতি,

সখী চলো সবে মিলে নানা ফুলের মালা গাঁথি ।


.................................................................

বৈশাখ তুমি

মোঃ বদিউল আলম বাচ্ছু



বৈশাখ তুমি নিয়ে আসবে ,

গ্রীষ্মের প্রথম দিবস নিয়ে ,

তীব্র দাবদাহে,

বসন্ত কে বিধায় দিয়ে ,

নিয়ে আসবে নবীন বছর ,

পুরাতনী সব দুঃখ,বেদনা ভুলিয়ে,

তোমায় স্বাগতম হে বৈশাখ ,

তুমি এসো আনন্দের বার্তা নিয়ে ,

তুমি এসো প্রনয়ের উৎসব হয়ে ,

তুমি এসো ইলিশ-ভাজা আর পান্তা-ভাতের উৎসবে ,

তুমি এসো কিশোর- কিশোরীর গানে গানে,

তুমি এসো মানব-মানবীর প্রানে প্রানে ,

বৈশাখ তুমি গ্রীষ্মের প্রথম দিন,


বর্ষবরণের প্রথম ক্ষণ ,

রবী উদিত হওয়ার সাথে সাথে ,

গাইবে সবাই এক সাথে


এসো হে বৈশাখ, এসো এসো ,

এসো হে বৈশাখ, এসো এসো


তাপস নিঃশ্বাস বায়ে ,মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে

বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক যাক যাক

এসো এসো...


বাঙ্গালীর নববর্ষ উৎসবের ক্ষণ ,

বাঙালির কৃষ্টি করিবে সৃষ্টি,

করিবে নৃত্য,

করিবে গান ,

করিবে কবিতা আবৃতি,

লালপাড়ে সাদা শাড়ি,

পড়ে কানে দুল,

কিশোরী সাজিবে দিয়ে খোপায় গাঁদাফুল,


বৈশাখ তোমার আগমনে চলছে আয়োজন ,

গ্রাম-গঞ্জে ,শহর-নগরের মুক্তাঙ্গনে,

করবে সবাই নবীন বছরের উৎসব উদযাপন ,

হবে মিলন গানে-গানে,নাচে-নাচে ,

মানুষে মানুষে মুখরিত হবে রমনার বটমূল,

আসিবে সেথায় সব জাতি একসাথে মিলে ,

আনন্দে -আনন্দে,তালে-তালে ,

ভূলিয়া ধর্ম,জাতি ,কূল ,


বসবে মেলা,ভাসিয়ে আনন্দের ভেলা,গাইবে বাউল ,

বাজবে বাঁশী

বৈশাখ তোমাকে বরন করার প্রতিক্ষায় আছে ,

কোটি কোটি বঙ্গবাসী ,

বৈশাখ তোমার কল্পনায় আমি ব্যাকুল,

তুমি আবার হঠাৎ কালবৈশাখীর ঝড়ের

তান্ডব নিয়ে আসো ,

করে দাও সব কিছু উলটপালট,

তাই মনে হয় কবি লিখেছিলো,


“ধ্বংসের নকীব তুমি দুর্বার, দুর্ধর্ষ বৈশাখ

সময়ের বালুচরে তোমার কঠোর কণ্ঠে

শুনি আজ অকুণ্ঠিত প্রলয়ের ডাক॥


চৈত্রের বিশীর্ণ পাতা রেখে গেছে শেষ চিহ্ন সালতামামীর,

ফাল্গুনের ফুলদল [কোকাফের পরী যেন] আজ শুধু কাহিনী স্মৃতির,

খর রৌদ্রে অবসন্ন রাহী মুসাফির যত পথ-প্রান্তে নিঃসাড়, নিশ্চল,

আতশের শিখা হানে সূর্যরশ্মি লেলিহান, ঝিমায় মুমূর্ষু পৃথ্বিতল,


রোজ হাশরের দগ্ধ, তপ্ত তাম্র মাঠ, বন মৃত্যুমুখী, নিস্তব্ধ, নির্বাক;

সূরে ইস্রাফিল কন্ঠে পদ্মা মেঘনার তীরে

এস তুমি হে দৃপ্ত বৈশাখ ।”


বৈশাখ তোমার অপেক্ষায় আছি তোমাকে করিতে বরন ,

বৈশাখ তুমি বাঙ্গালীর নতুন বছর নবীন বরন

বৈশাখ তুমি নবীন সুরে গাওয়া বাউলের একতারার গান ,

বৈশাখ তুমি নবীন কিশোরীর নৃত্যরত লাবন্যময় ছন্দ ,

বৈশাখ তুমি আমার হৃদয়ের দুঃখ ভূলে যাওয়া নবীন আনন্দ ।


.................................................................

তুমি হও মঙ্গোল সেনা

নার্গিস পারভীন



এই মনের সুখগুলোকে সে-ই খেয়েছে!

এক ছোঁয়াতেই বসুন্ধরার সব নিয়েছে!

অহর্নিশি বুকে খালি কান্না চলে-

দুর্বিষহ কাটছে সময় হাসির ছলে!


কেউ কি আছো ফিরিয়ে দেবে সুখ আমার?

কঠিন খরায় হবে বাদল বেশুমার?

অঙ্গ জুড়ে নাচবে হাওয়া হৈহৈ!

বৃষ্টি ছাড়াই বন্যা হবে থৈথৈ!


কালবোশেখী গুড়িয়ে দে যা আছে!

ধ্বংস হবো জেদ ধরেছি আয় কাছে!

নিটোল প্রেমের ব্যাকুলতা মর না তুই!

নীলচে শাড়ি ছেড়ে এবার আগুন ছুঁই।


আজকে আমার মন হয়েছে দুর্বিনীত বন্য চিতা!

বল্গা হরিণ শিকার চাই ভাল্লাগে না ঘাসপাতা!

এসো তুমি মঙ্গোল সেনা খাপখোলা তলোয়ার!

জ্বালিয়ে দাও চারু নগর কপটতার সব দুয়ার!


.................................................................

বৈশাখ

দালান জাহান



কোথায় গেল গুড়ের পায়েস

মুড়ি-মড়কি খই

পান্তা-ভাতে শুকনো মরিচ

টক-মিষ্টি দই ।


কোথায় গেল কাঁচের চূড়ি

মণ্ডা-মিঠাই ভাঁজা

জরি-ফিতে কদমা-আপেল

ভিন্ন স্বাদের খাজা ।


কোথায় গেল ষাঁড়ের লড়াই

বলীখেলার দিন

মহাজনের খাজনা আদায়

আম-কৃষকের ঋণ।


বদলে গেছে বৈশাখ এখন

চাষাভূষার সন

গরীব-ধনীর রসিকতায়

ইলিশ কিনে ডন ।


.................................................................

বৈশাখে

আমিনুল ইসলাম মামুন



বৈশাখে চাষী  ভাই

মাঠে গায় গান

বাতাসের তালে দোলে

সোনা সোনা ধান।


কাঁচা-কাঁচা কতো আম

ঝুলে আম গাছে

ঝড় শেষে শিশুমন

আনন্দে নাচে।


তারা সবে দল বেঁধে

যায় আম কুড়াতে

এর কোন নেই তুল

শিশুপ্রাণ জুড়াতে ।


বৈশাখ আসে যেন

আমে আর ধানে

বৈশাখী এই রূপ

বল কে না জানে?

বৃস্টি আসবে

ডরিন আহম্মেদ।


বৃস্টি আসবে

গাছগাছালি, নরম ঘাস,

শহরের জনপদ,

পাখপাখালি ভিজবে।


ভেজা ফুল, বকুল, জারুল

অশোক বৃক্ষমূল

ভেজা ঘ্রান শুকবে,

একদিন বৃস্টি ভিজাবে।


ভিজে যাবে মেঠোপথ

অশ্বথ, বট, উঠোন প্রাকৃতিক জনপদ,

হিংসা আর লোভের থাবার মত

তপ্ত সুর্য ঢেকে দেবে ঘনমেঘরথ।


আসবে  তুমুল বৃস্টি!

কচিঘাসের মত মায়ামমতারা ভিজবে!

এ ধরা আনন্দে ভাসবে

তুমুল ভিজবে, ভাস


.................................................................

আইসো তুমি বৈশাখীতে

রুমা শিকদার



আইসো তুমি আইসো এবার

বৈশাখী এই মেলাতে,

ঘুরবো দুজন সারাদিন

চড়বো নাগর দোলাতে।।

আইসো তুমি আইসো এবার

বৈশাখী এই মেলাতে।


পাঞ্জাবীটা পইরো তুমি

আমি নতুন শাড়িতে,

মেলার ভিড়ে রঙ বেরংয়ে

থাইকো তুমি আমাতে।।

আইসো তুমি আইসো এবার

বৈশাখী এই মেলাতে।


কিনে নিবো রেশমি চুড়ি

পরবো আমার  হাতে,

রিনিঝিনি বাজবে নূপুর

আমার দুটি পায়েতে।।

আইসো তুমি আইসো এবার

বৈশাখী এই মেলাতে।


.................................................................

থাকতে সময় বুঝলি না

অভিলাষ মাহমুদ



নো- নোয়া মাথা তার চরণে।

থাকতে হবে যার শরণে।


ভে- ভেলকি কিছু দেখিয়ে গেলাম,

কে যে কেমন বুঝে পেলাম।


ল- লম্ফ ঝম্ফ করিস না আর,

সয় না পৃথিবী পাপের ভার।


ক- কতোটা আর করবি রে পাপ?

এখন তো চেয়ে নে রে মাপ।


রো- রোদন কর্ রোজ গভীর রাতে,

মাপ পাবি তুই হয়তো তাতে।


না- নাই মহৎ কেউ তারে চেয়ে,

তার দয়াতে যাবি পার পেয়ে।


ভা- ভাবনার সময় আর পাবি না,

না চাইলে মাপ পার পাবি না।


ই- ইদারকা মাল ওদার দিয়ে,

আপনা ফায়দা লুটে নিয়ে।


রা- রাখলি কোথায় পাপের ধন?

বাঁচাবে তোরে কোন সে জন?


স- সময় থাকতে বুঝলি না কিছু,

শেষেই বুঝলি তোর সবই মিছু।


.................................................................

তবুও মন ভাগ করে দিতে হয়

বিদ্যুৎ ভৌমিক



অহরহ চোখের জলে রোদ ভিজেছে !

খোকা ঘুমালো,পাড়া জুড়ালো পদ্যপাড়ায়

বৃষ্টি আমার অনেক কালের উপোষ ভেঙেছে কল্পরোদে

সেই যে আমার নতুন কেনা একটা নদী ;

বেশ পুরাতন  একটা আকাশ

সেই খানেতে একটু একটু বেড়ে ওঠা

জীবন নিয়ে অতলান্তিক পদবীবিহীন তথাকথিত।


আপাতত স্বপ্ন গুলো  রাতের ভেতর আয়ুহীন বিরল প্রজাতির...

সকাল এলেই অশরীরী শূন্য শূন্য বিমূর্ত এবং মায়াময়  কৃপণ ।

যখন আমি  হাত এগিয়ে ধরতে যাব ;

ভালোবাসা আমায় দেখে মহাশূন্যে ভীষণ হাসে ; অমানবিক,


তবুও যেন ভাগ করে দেই এই আমিকে মনের কাছে ,

অতল থেকে অন্তর্বর্তী স্মৃতির গুলো আন্তর্জাতিক

কবিতা গুলো অন্ধকারে ভূতের মতো ছায়াছন্ন !

আমার থেকে কি পেয়েছি ; একাকীত্ব ?


বৃষ্টি কি অতীব জরুরী ,

কারণ বারণ আয়না থেকে দৃশ্যত ভুলে ভরা !

এই আগুনে পুড়ছি আমি ; ভাসছি যেন  নিঃসঙ্গ নানামুখী

খুব চিনেছি যুবতী নদীর অগুনতি ঢেউ

মন হারানো  ছলাকলায় প্রবাহমান এইতো আমি ;

নৌকো ভাসে অথৈ জলে!!


বৃষ্টিটাকে ছুঁয়ে ছুঁয়ে বাতাস শাড়ির পাড় ভেঙেছে অপৌরুষে

এটা শুধুই তোর জন্যেই!

কাল থেকে তুই দশটা খাতায় নাম লিখেছিস ভালোবাসায়,

এখান থেকেই অবিশ্বাসে পুড়ছি আমি অমানবিক অপ্রমেয় ,

সেই যে আমি অনেক কালের স্মৃতির ভেতর  তোকেই খুঁজি

অশেষ আমার কষ্ট টুকু  তোর  জন্য ।


এভেবে ঠিক  মুখ  এঁকেছি , তল ছুঁয়েছি সর্বনাশে

যদিও আমার কথায়  কবিতার  ভাজ পড়েছে অনেক  আগেই ,

তবুও তোকে  এই অবেলায় লিখছি চিঠি

এইতো  ছুঁলাম বৃষ্টি রাতের শরীর তোকে ;

আদিগন্ত অথচ তুই সেই অদেখা !!


.................................................................

শ্রমের মূল্য

করুণা আচার্য



শ্রমিকের ঘামে ভেজা মাঠ-ঘাট রাজপথ

দিবানিশি শ্রমে কাটে শ্রমিকের চলা রথ।

বিশাল দালান আর রাজ প্রাসাদ ইমারত

শ্রমিকের শ্রমে গড়া হীরা- মতি জহরত।


ফুলে - ফলে ফসলেতে কৃষকের অবদান

কলে আর কারখানায় শ্রমিকের গড়া মান।

গ্রীষ্মের খরা রোদে পোড়ে পিঠ আগুনে

দুঃখে ভেজা চোখ যেনো ব্যথা ভরা ফাগুনে।


ইট ভাটা মাটি কাটা বহু বহু যায় প্রাণ

পেটে নেই ভাত তবু জোটে নাতো কোনো ত্রাণ।

বর্ষায় ভিজে জলে ভাসে তারা বন্যায়,

দিন যায় রাত আসে সহে কতো অন্যায়।


অবহেলা অবজ্ঞায় কাটে দিন শ্রমিকের

সেই দিকে হুশ নেই ধনী আর মালিকের।

শ্রমিকের দাম দিতে মালিকের কত ছল

আসলে শ্রমিক হলো প্রাণ শক্তি বাহুবল।


.................................................................

চৈত্রের অবসানে আসে বৈশাখ 

    এস এম জুনেদ জামান



অতীতের ভুলত্রুটি ব্যাথা গ্লানি 

সকল বিভেদ-দ্বিধা করে দূর, 

চৈত্রের অবসানে এলোরে বৈশাখ নববর্ষের সূর। 


পুরোনো দিনের সকল জরাজীর্ণতা মুছে ফেলি 

করি নতুনের সত্য আহ্বান। 

জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গায় নতুনত্বের জয়গান। 


নববর্ষের পূণ্য-প্রভাতে আমরা মহৎ 

পরম আশ্বাসে আত্মবিশ্বাসে আমরা ধন্য, 

চিত্তের হীনতা দূর করে বৈশাখ হয় পূণ্য। 


তার সান্নিধ্যে আনন্দের-স্পর্শে জাগে অনুভূতি 

উপলব্ধি করতে পারি যে আমরা পরিপূর্ণ জাতি,

আত্মীয়-স্বজন সবাই মিলেমিশে গাই গীতি। 


উৎসবে- আনন্দে মেতে উঠি হাজার অনুষ্ঠানে 

ব্যবসায়ীদের 'হালখাতা' আপ্যায়ন ক্রেতার মিষ্টান্নে,

আরো থাকে বিভিন্ন খাদ্যদি, জমে উঠে গানে গানে। 


জাঁকজমক পূর্ণভাবে নববর্ষ বাঙালির গর্ব 

চৈত্রের অবসানে আসে বৈশাখ-ই  সর্ব,

নতুন সূর্য উদিত হয়  উৎসবের প্রথম পর্ব।


.................................................................

করোনা তোমার কৃপা 

জেইনাল আবেদীন চৌধুরী



গাহি সময়ের গান,

করোনা তোমায় হাজার সালাম তুমিই মহিয়ান।

আল্লাহ প্রদত্ত মহামারীর হয় আগমন তখন,

সৃষ্টির জীব মানুষের মাঝে গর্হিত কাজ হয় যখন।


কোথায় এখন ধর্ষকের দল, যারা নরপিচাশ,

দধের শিশু ও বৃদ্ধা মায়েরাও ছিল না নিরাপদ।

আজ তোদের পশুত্ব দেখা করোনার সাথে লড়ে!

আল্লাহর আরশ কেপেঁছিল তোদর পশুত্বের পশারে।


তাইতো আল্লার করূণায় এই করোনা এসেছে ধরায়,

পালা দেখি এখন, পলানোর মত জায়গা আছে কোথায়?

মুমিনেরা কখনো ভয় পায় না আল্লাহর বিধানের,

সর্বদা তাঁরা প্রস্তুত আছে আল্লাহর ডাকের।


কোথায় তোদের বর্হিঃবিশ্বের নামিদামী হাসপাতাল?

ব্যাংক ভর্তি অজশ্র টাকা সোনা-গহনার মালামাল।

এসব এখন কোন কাজের না ভাইরাস করোনায়,

সময় এসে গেছে শেষ বারের মত শুদ্ধ হয়ে নে তৌবায়।


গাহি সময়ের গান,

আল্লাহর দুনিয়ায় সকলেই আমরা সমানে সমান।

ধনী হয়ে গরীবের প্রতি কর যে অবিচার,

আল্লাহর দরবারে এসব অন্যায়ের হবে ঠিকই সুবিচার।

সেদিন তোমার এই ধন-সম্পদের থাকবেনা কোন দাম।


শুধু কাজে আসবে এই দুনিয়ায় করেছ ভালো কিছু কখন।

আমি ভয় পাই না এই করোনারে ভয় পাই শুধু তাঁরে,

তিনি যদি আমায় রক্ষা করেন, আছে কি সাধ্য করোনা'র?

তবুও আমরা সতর্ক থাকবো, মেনে চলবো দেশের আইন।


আল্লাহর ইচ্ছায় করোনার মাঝেও থাকতে পারে আল্লাহর করূণা।

প্রবাস থেকে সকল স্বদেশীর জন্য করি প্রার্থণা,

বাংলাদেশের প্রতি আল্লাহ যেন করেন করূণা।।


.................................................................


অরুণিমা- একটি শুদ্ধতম মুখ

রিলু রিয়াজ



আমি এখন ভিজতে পারি

জলে,রোদ্রে,পূর্ণিমায়

যেতে পারি সবুজ অরন্যে

যেথা অরুণিমার পথচিন্থ পাওয়া যায়।


ফুসফুস পূর্ণ করে নিতে পারি দম

আমি ঘোর বর্ষায় ফোটা বিরহী কদম।

তোমার করতলে নিদ্বিধায় রেখে যেতে চাই

বিশ্বাসের সব কটি বিশ্বস্ত আঙুল।


যদি তুমি একটি নদী হও

আমি হবো নদীর পূর্ণ জোয়ার

ব্যক্তিগত বাগান হও যদি তুমি

আমি হবো অদ্ভুত বসন্ত তোমার।


অসমাপ্ত জীবনের অবশিষ্ট দিনলিপি

মুখরিত হোক তোমার পদচারনায়

ভরন্ত ভালোলাগায় তোমাতেই করবো স্নাণ

আমার যা কিছু পুঁজি,ক্ষয়িষ্ণু অভিমান

অরুণিমা-তোমাতেই লগ্নি, নীরব সমর্পণ।


.................................................................

জনস্বার্থে রচিত করোনা ভাইরাসের পুঁথি

      ইফতেখার আহমেদ।



শোন শোন দেশবাসী, শোন দিয়া মন,

কিছু কথা শুধাই আজি, করিয়া  বর্ণন।

বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে গেছে করোনা ভাইরাস,

দেশে দেশে, প্রবাসে  সে  করিছে   সন্ত্রাস।

অবশেষে বাংলাদেশে ভিসা পাইয়া সে,

ধীরে ধীরে ঠাঁই নিল মানুষের মাঝে।


সর্র্নাশা  করোনা কাইরাস বড়ই  প্রাণঘাতী,

সতর্ক যদি না থাকে কেউ, হবে তার ক্ষতি।

ঘরে থাক, পরিচ্ছন্ন থাক,মান স্বাস্থ্য নীতি।

বের হলে্ই আক্রান্ত হবে দেখাও ভয় -ভীতি।


বাসা-বাড়ি রাখ মুছে,,বাখ পরিষ্কার,

গৃহকর্মীকে কর বারণ  না আসিতে আর।

পেপার ওয়ালা, দুধ ওয়ালা  আসিলে তবে ঘরে,

না আসিতে কর বারণ বিনয়ী সূরে তারে।


সাবান কিংবা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোও সকলে,

বাহির থেকে ঘরে কেউ প্রবেশ করিলে।

পরিচ্ছন্ন থাকুন, ধূয়ে রাখুন, হাত- মুখ আর নাক,

গরম জলে ধূয়ে ফেলুন বাহিরের পোষাক।


আসবাবপত্র ,জুতা সেন্ডেল আছে যত  ঘরে,

ডেটল কিংবা  স্যাভলন দিয়ে মূছে রাখুন তারে।

টাকা পয়সার মাঝে থাকে ময়লা, জীবাণু যে  কত,

লেনদেন করার পরে, হাত করিবেন ধৌত।

বদ অভ্যাস ছাড়ুন সবে,হাত নিবেন না  মুখে,

নোংরা হাত দিবেন না  কভূ, নাকে আর চোখে।


এড়িয়ে চলুন জন সমাবেশ, থাকুন সবাই ঘরে,

প্রয়োজন হলে বের হরেন মাস্ক ব্যবহার করে।

এই ভাবেতে  চলুন সবাই, সুস্থ থাকুন ভাই,

করোনা ভাইরাস দেশ থেকে যাবে যে পালাই।

দোয়া-কলমা পড়ুন সবাই ঘরেতে বসে,

ক্ষয় ক্ষতি  আর হবেনা - করোনা ভাইরাসে ।


.................................................................

মুক্তির কান্ডারী,,

    সাহিদা রহমান মুন্নী



দুরুদুরু কাঁপে বুক,

কি জানি কি হয়রে-

চারিদিকে মহামারী,

করোনার ভয়রে!


বাতাসটা থমথম্ ,

নিষ্প্রাণ পরিবেশ-

করোনার ছোবলে,

আতংকে জাতি,দেশ!


কতো প্রাণ ঝরে গেল,

আর কতো ঝরবে-

কেউ নেই তুমি ছাড়া,

মুক্ত কে করবে!


বাঁচাও এ দুনিয়া,

পানাহ্ দাও মহিয়ান-

মুক্তির কান্ডারী,

হে দয়াল রহিমান!!


.................................................................

পহেলা  বৈশাখ

  এস বি জামান আরিফা



বৈশাখ তুমি আমার----

শৈশবের পুতুল  বিয়ের  খেলার  সাথী,

তোমাকে নিয়ে দুঃখ বেদনায়

আমরা বাঙ্গালি জাতি।

বৈশাখ তুমি আমার ----

নবান্ন উৎসবের নতুন ধানের পিঠে খাওয়ার স্মৃতি,

তোমার  তরে পেয়েছি আমরা 

শত সহস্র  ভালবাসা ও প্রীতি।

বৈশাখ  তুমি আমার----

বাঙ্গালির আদর্শ মায়ের 

এক উৎসবমুখর দিন,

তোমাকে দিয়ে পূন্যাহের মধ্যে

হালখাতায় শোধ হয়  ঋণ।।



--- সমাপ্ত ---

আপডেট থাকতে ভিজিট করুনঃ

https://kobitayjagoron.blogspot.com


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.