Header Ads

কবিতায় জাগরণ (জুলাই- সেপ্টেম্বর ২০২০)

 


সম্পাদকীয়ঃ


পুরো পৃথিবী আজ দিশেহারা হয়ে পড়েছে করোনা মহামারির বিষাক্ত ছোবলে, কোনো ভাবেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না করোনার প্রতিকার! হত্তা কত্তা দাতা দেশ গুলো'ও মুখ থুবড়ে পড়েছে প্রকৃতির শাসনের কাছে, জানি না এর শেষ কোথায়, কবে!? একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিরুপায় করে দিচ্ছে মানুষকে জীবন যুদ্ধে,

যুদ্ধ একদিন শেষ হবে, করোনা মহামারিও বিদায় নিবে, পৃথিবী আবার হাসবে নতুন হাসিতে এ আশায় আলোর পথে চেয়ে প্রহর গুনছি সেই মাহেন্দ্রক্ষণের--- লেখা দিয়ে, শুভেচ্ছা বাণী দিয়ে যাঁরা বাড়িয়ে দিয়েছেন ভালোবাসার প্রখরতা, গভীর করেছেন বন্ধন, তাদের কাছে কৃতজ্ঞ "কবিতায় জাগরণ পরিবার" উন্মুক্ত হোক সাহিত্যের সীমানা, জয় হোক কবিতার, জয় হোক মানবতার!

সাথে থাকুন সবসময় পাশে আছি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে---



সম্পাদক

সাহিদা রহমান মুন্নী



যাদের লেখনী দিয়ে সাজিয়েছি এই সংখ্যা 


১.জেইনাল আবেদীন 

২.আমিনুল ইসলাম মামুন

৩.বিদ্যুৎ ভৌমিক 

৪.দালান জাহান 

৫.ইদ্রিস রহমান

৬.জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় 

৭.গোলাম রব্বানী টুপুল

৮.আসলাম প্রধান

৯. জাকারিয়া আজাদ 

১০.মাসুদ রানা

১১.করুণা আচার্য

১২.সবুজ সরকার

১৩.ফরিদুজ্জামান

১৪.মোঃ নাজমুল হোসেন তপু 

১৫.শক্তিপ্রসাদ ঘোষ

১৬.সাহিদা রহমান মুন্নী

১৭.বদিউল আলম বাচ্চু 

১৮.রুবেল হাবিব

১৯.সাবিহা নাজনীন  

২০.কাজী আনিসুল হক

২১.পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস

২২.নার্গিস পারভীন

২৩.মোজাম্মেল হক

২৪.তাসনিয়া খাঁন জারা

২৫.ইকবাল বাবুল

২৬.শাহাদাত হোসেন

২৭.শান্তা ইসলাম সু'আদ

২৮.রিলু রিয়াজ

২৯.ওয়াহিদ আল হাসান 



চেতনায় তুমি     

জেইনাল আবেদীন 



হে মহান নেতা! তোমাকে নিয়ে লেখার মত বিদ্যা নেই আমার,

তবুও লিখতে চেষ্টা করছি কিছু কথা যা আমাকে পুলকিত করে, গর্ব এনে দেয় বাঙ্গালী বলে যে পরিচয় দিয়েছ তুমি মোদের।

হাত কেপে ওঠে, কলম থেমে যায়, দু'চোখ ঝাপসা হয় তোমার ত্যাগের মহিমায়,

গর্বে বুক ভরে ওঠে পেয়েছি মানচিত্র, নিজস্ব পতাকা বিশ্বের বুকে তোমারই আত্ম ত্যাগের বিনিময়।


৪৮ থেকে ৭০ এই বাইশটি বছরের দিনগুলো পাকিস্তান সরকারের জেলখানায় দাবাতে পারেনি তোমার দেওয়া বাঙ্গালীর জন্য ন্যায্য ৬ টা দাবি,

আপোষ করনি তুমি, দিয়েছ বিলিয়ে জীবন যৌবনের সবই।

একাত্তুরের সাতই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে সেই বজ্র কন্ঠের দিক নির্দেশনা,

ওটাই ছিল বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতার ঘোষনা।

যে ঘোষনায় রক্তে মোদের পেয়েছিলাম স্বাধীনতার প্রেরণা,

তোমার দেওয়া চেতনায় দশ মাস যুদ্ধেই এনেছে স্বাধীনতা বাঙ্গলার মুক্তি সেনা।

তিরিশ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা আমাদের স্বাধীনতা,


এ শক্তি মোরা পেয়েছিলাম সেদিন তোমারই প্রেরণায় হে মোদের মহান নেতা।

নব বিজয়ের বাংলার মাটিতে এলে তুমি মুক্ত হয়ে,

পাকিস্তানের কারাগারেও তোমায় রাখতে পারেনি দমায়ে।

কি লজ্জা আমাদের আমরাই তোমাকে পারলাম না ধরে রাখতে,

পচাত্তুরের পনরই আগষ্ট ইতিহাসের কালো অধ্যায়,

কলঙ্ক মোদের ললাটে লাগলো স্বপরিবারে তোমার পবিত্র রক্তের বন্যায়।


হৃদয়ে মোদের যে ক্ষত হয়েছে ঐ হৃদয়বিদারক নির্মম কালো দিনটিতে,

রক্ত ঝড়বে অহর্নিশি বাঙ্গালী জাতির হৃদয়ের ক্ষত হতে।

তোমার ছয় দফার প্রতিকি আমার এই লেখায় রাখলাম ধরে,

হে বিশ্বের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু তুমি ছিলে, আছো এবং অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে শোষিতের অন্তরে। তোমার লড়াই ছিলো শোষনের বিরুদ্ধে বঞ্চিত বাঙ্গালী জাতির মুক্তির স্বাধীনতায়,

তাইতো তুমি বঙ্গবন্ধু হয়ে থাকবে আজীবন এধরায়।।।


................................................................................................................................

রোনা বিষয়ক ছড়ামেডিসিন   

                       আমিনুল ইসলাম মামুন


১.

কোভিড ঊনিশ

খুব শীঘ্রই তোর বিদায়ের

ক্ষণটা নিজেই গুনিশ।


২.

করোনা

সকলের এক কথা

তুমি কেনো মরোনা।

শীঘ্রই তুমি ঠিক মরবা

বিদায়ের খাটিয়াতে চড়বা।


৩.

এলোপ্যাথি হোমিওপ্যাথি কোথায় কবিরাজ

অলস সময় পার করবার নেই তো সময় আজ।

করোনাতে মরছে মানুষ আবিষ্কারে নামো

এ্যাই করোনা বেশ বেড়েছো, থামতে হবে, থামো।


৪.

সাহিত্য আড্ডা আজ পুরো বন্ধ

হারিয়েছে জীবনের পরিচিত ছন্দ।

কাছে-দূরে সবখানে সবকিছু লক

করোনাকে তাড়াতে এঁটে যাও ছক।


৫.

করোনা তুই ভিলেন

হয়তো এখন পরে আছিস

আরাম কাপড় লিলেন।

আগুন কাপড় পরবি

জ্বলে-পুড়ে বিদায় নিতে

খাটিয়াতে চড়বি।


................................................................................................................................

রক্ষিত অতলান্তের জন্মভূমি 

                              বিদ্যুৎ ভৌমিক 



আপাতত এভাবেই বুকে পাথর চাপিয়ে ঋণাত্মক মনন দরজা খুলে ব'সে আছে; 

ওরা ওই পথ ধরে আসবে 

ক্যানভাসের স্মৃতি চোখের মলাট খুলে মন দর্পণে ফুটে উঠলে সরল ঠোঁট গুলোতে মৃত্যুর কথা 

অন্তর ঠেলে বেরিয়ে আসে! এখানে সব কিছু নীরব রয়েছে,

পথ ও পথিকের কথা বৃষ্টিতে ভিজেছে ….এবং গোপনে । 

এভাবেই চলছে সময়, এভাবেই গোপন তরঙ্গে পুষ্প কাননের 

ফুল গুলো গোরস্থানে মৃত লাশ গুলোর কাছাকাছি আসার স্বপ্ন দেখে চলে,


অন্য কোন দিনের মত রাত শেষে প্রভাত এসে সম্মুখে দাঁড়ায়; 

কেউ একজন পৃথিবীর কান্না মন পেতে শোনে! 

রাস্তার ওধারে নতুন অন্ধকার চুপ জেগে থাকে ওরা অভাগার ছদ্মবেশ নিয়ে ফেলে আসা সম্পর্কের খোঁজে সরলবক্রনির্বিশেষে চলেছে, --- 


তবু প্রাণ আছে, আছে অভিভাবকহীন মৃত্যু ভয় অনন্ত ভাসমান এই বহতা পথ চলা; 

রাস্তাও ওদের মত ক্ষুধার্ত তৃষ্ণার্ত নির্ঘুম থাকে । 

খুব এলোমেল হয়ে আছে প্রেম ও জীবন নির্জনতায় মন আঁধারিতে সব কিছু পাথর হয়ে আছে 

এই এক কঠিন সময়ে হৃদয় খুলে কাছে আসতে ইচ্ছা হয় স্বামী হারা কোন কোন অভাগিনীর 

কত দূর বিদীর্ণ অন্ধকারে চাঁদ ডুবে মরে আছে ঝিল দর্পণে, ---- 


প্রতিদিনের মৃত্যুর রাত গুলো শ্মশান ও গোরস্থানের ঘ্রাণে এভাবেই ঘুমন্ত ঘুমে স্বপ্ন ছিঁড়ে জেগে ওঠে! 

কোথাকার এক অচেনা দেবতা পথে পথে মানুষের অস্থি, চর্ম নিয়ে প্রতিপলে বহুবিধ খেলায় মাতে ছন্দহীন সময় একাই থেকেছে অদেখা; নেপথ্যে অপ্রমেয় এক আশ্বাস ক্যানভাস থেকে বেরিয়ে এসে মৃদু লজ্জায় ব'লে চলে পৃথিবীর তুমি ঘুমাও! ওরা এখনো হেটে চলেছে; পথ থেকে অন্য কোন পথে, ---- 

আগামী ইতিহাস চুপ হয়ে আছে বৃষ্টি শেষে হাল্কা বাতাসের মত!!


................................................................................................................................

শিল্পীত ক্ষুধা 

               দালান জাহান 



বিষন্ন মন নিয়ে শহীদ মিনারের দিকে 

হেঁটে যাচ্ছে কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ 

নজরুল মঞ্চে গলা উঁচিয়ে 

কবিতা পড়ছেন কবি মাকিদ হায়দার 


"ক্রন্দনসিক্ত একটি চুম্বনের মধ্যে" মা'কে রেখে কবিতাকুঞ্জে বসে লম্বা নিঃশ্বাস ছাড়ছেন 

"হুলিয়া" খ্যাত কবি নির্মলেন্দু গুণ 


লিটার লিটার রক্ত দিয়ে 

চোখ পাকিয়ে বসে আছেন অভিমানী কবি অসীম সাহা 

কিন্তু কোথাও কোন এক শোকে

মানুষ-মানুষ আকাশে লাল অচেনা পাখি 

আইশোলেশন কোয়ারান্টাইন মতো 

শব্দ বোমায় ঘরে-ঘরে শিল্পীত হচ্ছে 

মানুষের কণ্ঠক্ষুধা।  


হাসপাতালে পড়ে আছে মুমূর্ষু-বিজ্ঞান 

সব হচ্ছে কিছু হচ্ছে না 

পথগুলো হেঁটে যাচ্ছে

দীর্ঘ-বছর দীর্ঘকাল মানুষেরা হাঁটছে না।


................................................................................................................................

তুন ভোরের আশায়

                    ইদ্রিস রহমান



আর কতদিন কাটবে প্রভূ

এমন দুর্বিষহ দিন,

লক ডাউনে পড়ে এখন 

বেকার, কাজ কর্মহীন।


ঘরের বাহির হলে ভয়ে

দুরু দুরু মন

না জানি কার সংস্পর্শে......

ভাবায় সারাক্ষণ।


দেশে কিংবা পরবাসে

শ্রমিক দিশেহারা,

নিশ্চয়তা নাইযে কোন

ধুঁকে ধুঁকে মরা।


থমকে গেছে ভাগ্যের চাকা

জীবন কাকে বলে

ঘরে অনাহারে অর্ধাহারে

স্ত্রী কন্যা ছেলে।


এনজিওরা রাত পোহালে

দেবে এসে হানা

খাবার তরে নাইযে ঘরে

এক মুষ্টি দানা।


এমন হাজার পরিবারে

চলছে হাহাকার

সুযোগ পেলেই খাচ্ছে মেরে

গরিবের অধিকার।


লক্ষ কোটি টাকা দিচ্ছে

কেবল শুনি মিডিয়াতে

নেতার কাছের মানুষ গুলোর

পকেট ভারি তাতে।


মুখ চিনেও দিচ্ছে ত্রান

মেম্বার সাবের চেলায়

গরীবে না পাইলেও পায় 

ছলিম উদ্দির পোলায়।


চায় না বাঁচতে কারো দয়ায় 

যাদের মনে জোর

কাল রাত্রি বিদায় হয়ে

আসবেই নতুন ভোর।।


................................................................................................................................

তঙ্ক: কোভিড – ১৯

                 জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় 



মেঘে কোনো সংকেত ছিল না অথবা শব্দ মৃদু বসন্তবাতাসে

জলও শান্ত ছিল ফড়িংয়ের ওড়াউড়ি নীরব শুকনো মরা ঘাসে।

পরিযায়ী ঘরবাঁধা শেষ শীর্ণ দিনের পর ফিরে যাবে শিকড়ের টানে

জীবনের ক্লান্তিক্লেদ ভোরের শিশির হয়ে ঝরে পথে বা বাজারে-দোকানে।


ঈশান কী উত্তর অথবা পশ্চিম বিপদের বার্তা ছিল মানুষ শোনেনি

অণুর চেয়ে ক্ষুদ্র বিষ কাঁটাময় ধুতরোর মতো কত জীব?কেউতো গোনেনি।

ছদ্ম-মৃত কণাগুলি সুযোগের খোঁজে ঠিক ধ্যানমগ্ন বক একপায়ে জেগে

তীক্ষ্ণ কাঁটা গেঁথে নেয় চিহ্নহীন শরীরের অঙ্গে থাকে লেগে।


শ্বাসনালী ফুসফুস রক্ত বা কলাকোশ জুড়ে চুপিচুপি অরোধ্য পাপ

সে এক দুর্দম বিষ সন্ত্রাসে বিশ্ব কাঁপায় জাগায় সন্তাপ। 

চেনা যত অক্ষম অস্ত্র ব্যর্থ হয়ে আস্তাকুঁড়ে যায় নতুনের সন্ধান চলে

জানা নেই কী যে হবে কাল বন্ধ যত দৈনন্দিন স্থবির হয়েছে সব পলে।


মানুষের সুরক্ষা প্রাচীর তুচ্ছ করে শত্রু ওড়ায় বিজয় কেতন

করোনা রক্ষাকবচ ভাঙায় ব্যর্থ সব গবেষণা ওষুধবিষুধ ভাঙে মন।

নিয়মিত বদলায় রূপ ও কৌশল কাল শত্রু জীবনের দুর্জয়

কবে সেইদিন?যেদিন শত্রুকে শেষ করে সব জয়ধ্বনি দেবে যাবে ভয়।


আপদ বিদায় শেষে শামুকের খোল মুক্ত হয়ে বিজয় মিছিল কবে?

নিজেকে বন্দি রেখে মুক্তির প্রতীক্ষায় সাবধানে সময় কাটিয়ে যেতে হবে।

তারপর আতঙ্ক ঠেলে মানুষ ভেসে যাবে সাফল্যের আনন্দধারায়

মুক্তির অমৃতে হবে নবসৃষ্টির মহাযজ্ঞ মাটি জল বিশুদ্ধ হাওয়ায়।


................................................................................................................................

রোনা মরো না

           গোলাম রব্বানী টুপুল



করোনা রে করোনা

তুই কেন মরো না

মারো শুধু ম্যান

সারাদিন দুনিয়াতে

করো ঘ্যান ঘ্যান।


করোনা রে করোনা

দুনিয়াটা ছাড়ো না

হলো তো বহুত

একবার বলে যাও

কবে হবে ভূত।


করোনা রে করোনা

মোখলেস - বরুনা

আর কত খাবি

এইবার থাম্ ভাই

তোর কাছে দাবী।


করোনা রে করোনা

বেদখলি চরও না

আমাদের ভূমি

কোথাথেকে এলে ভাই

ছেড়ে যাও জমি।


................................................................................................................................

বিশ্বাসীদের পথ

              আসলাম প্রধান 



বিশ্ব থেকে যাচ্ছে কমে সকল বিলাসিতা 

দিকে দিকে বাড়ছে কেবল কবর এবং চিতা ।

যে-সব রাস্তা ব্যস্ত ছিল ভোগ-উপভোগ দিতে 

পথগুলো সব একে একে ঘুরছে বিপরীতে?

অন্ধকারের বাড়াবাড়ি, দিনের আলো হরা-

কে ইশারায় পড়াচ্ছে সেই আঁধারকে হাতকড়া!

যে-সভ্যতা পঙ্কিলতার বিষাক্ত দংশনে 

বিষে কাতর, আজ উপশম হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে ।


বিপদ এসে নুয়ে পড়া লক্ষ সাপের ফণা-

মানবজাতির একটুখানি স্বস্তি ও সান্ত্বনা ।

ক্ষণস্থায়ী এই জীবনের সামান্য সময়ে

চিন্তাশীলে থাকবে কেনো আঁধার-অবক্ষয়ে!

সহজ সরল সত্য যে-পথ, যে-মোহনায় মিলে,

সেই মোহনায় রেহাই খোঁজে বিশ্বাসী, মুসকিলে।


................................................................................................................................

লো বুঝি বর্ষা

জাকারিয়া আজাদ



এলো বুঝি এলো বর্ষা 

আকাশটা নেই আর ফর্সা 

রিম ঝিম ঝিম বৃষ্টি ঝরছে

আকাশের মেঘ যেন ঐ 

ছুটে ছুটে নিরালায় পড়ছে

জানিনাতো জানিনা হায়

প্রিয়াটা কি যেন কড়ছে!


প্রিয়া যদি থাকতো কাছে

হতাম ভিজে একাকার

কোথায় প্রিয়া কোথায় প্রিয়া

পাইনাতো পাইনা দেখা তাঁর।


................................................................................................................................

র্ষা কাল

            মাসুদ রানা



আমাদের দেশ ছয় ঋতুর দেশ।

গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরত, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত!

এখন চলছে বর্ষাকাল!

চারিদিকে পানি থৈ থৈ করছে।

নদীনালা, খালবিল পরিপূর্ণ পানিতে!

এই সময়টাতে আমাদের দেশে দেশী মাছের খুব ছড়াছড়ি!

কৈ, টাকি, পুটি, খইলসা, ভেরা (মেনি মাছ বলে অনেকে), মলা,ঢেলা, সিং মাগুর সহ নানা পদের দেশী মাছে সয়লাব হয়ে যায় সকাল বিকালের মাছের বাজার!

এই সময়টাতে কিন্তু দেশী ফলেরও ছড়াছড়ি পড়ে যায়!

যদিও এখন প্রায় সব সিজনেই সব ধরনের ফল পাওয়া যায়!


এই সময়টাতে বিলের ধারে ও ছোট ছোট নৌকা নিয়ে অনেকেই যান বিলে বড়শী দিয়ে মাছ ধরতে!

বিলের মাঝে ফুটে থাকে শপলা ফুল, পদ্মফুল!

ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বিলের ধারে ব্রীজের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে পানিতে!

সাঁতরে গিয়ে উঠিয়ে আনে শাপলা,

এই শাপলার সাথে থাকে সালু!

যেটা খুব মজা করে খায় অনেকেই।

শাপলার ডাটা চিংড়ী মাছ দিয়ে রান্না করলে কিন্তু খেতে বেশ লাগে!

যারা খেয়েছেন তারাই শুধু উপলব্ধি করতে পারবেন।


এই বর্ষাকালে ট্রলার ভাড়া করে অনেকেই যায় পিকনিক করতে!

বিলের মাঝ দিয়ে যখন ট্রলার চলে ফাটফাট শব্দ করে তখন পিকনিক দলের মানুষগুলো স্পিকার বক্স বাজিয়ে নেচে নেচে আনন্দ করে!

চলতে চলতে কোন এক চরে গিয়ে দুপুরের খাওয়া সেরে আবার ফিরতে শুরু করে গন্তব্যে।

সারাটা দিন কেটে যায় পানির সাথে সন্ধি করে।


এই সময়ে গাছে গাছে থাকে আম, কাঠাল ও জামের মৌমৌ গন্ধ।

গাছের দিকে তাকালেই চোখে পড়ে পাকা আম।

ঢিল ছোড়ে কেউ গাছে।

পাকা আম মাটিতে পড়ে।

সেই আম খাওয়ার মজাই আলাদা।

কেউ কেউ আবার গাছ থেকে কাঠাল পেড়ে দুইতিন জন গাছের নীচে বসেই সাবাড় করে দেয় আস্ত কাঠাল!  


গ্রামে এই দিনে যখন ঝড় হয় তখন সবাই অপেক্ষায় থাকে কখন ঝড় থামবে।

ঝড় থামার সাথে সাথেই কার আগে কে যাবে আম কুড়াতে!

ঝড়ের দিনে আম কুড়াতে বেশ লাগে কিন্তু! 


ক্ষেতে মাঠে ঘাটে ব্যাঙ এর একটানা শব্দে যেন পরিপূর্ণতা পায় বর্ষার রূপ!


বৃষ্টিতে বাচ্চাদের দৌড়াদৌড়ি,

ক্ষেতে হাল চাষের পর যখন মই দেয়া হয়

তখন সেই মইয়ের পিছনে পিছনে ঘুরে ঘুরে ধরা হয় বিভিন্ন রকমের দেশী মাছ।

সে এক অভূতপূর্ব আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।


এই বর্ষার আবার কুফলও আছে।

যারা নদীর পাড়ে বাস করে তারা পড়ে নানা বিপাকে!

পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির পানি একাকার হয়ে সৃষ্টি হয় বন্যার।

গ্রামকে গ্রাম ভাসিয়ে নিয়ে যায়।

ক্ষতি হয় ফসলের।

আশ্রয়হীন হয় অনেকেই।

বন্যার পানিতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঘরবাড়ী, গাছপালা, গরু ছাগল

এমনকি অনেকের স্বপ্নও তলিয়ে যায় এই বন্যার পানির সাথে সাথে!

কত গৃহহীন মানুষ আশ্রয় নেয় রাস্তায় খোলা আকাশের নীচে!

ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তাদের আগামীর পথচলা।

ক্ষুধার্ত আর অসহায় মানুষগুলোর চেহারার দিকে তাকালে মনটা হুহু করে উঠে!

একমুঠো ভাত আর একটু আশ্রয়ের জন্য কতটা অসহায় বোধ করে তারা।

কতটা অসহায়ত্বের মাঝেই কাটে এই নদী পাড়ের মানুষ গুলোর জীবন!


এই বর্ষা আমাদের দেয় অনেক কিছু।

আবার নিয়েও যায় কম কিছু না!

এই দেয়া নেয়ার দোদোল দোলায় ভেসে চলে আমাদের জীবন।

কেউ পায় আনন্দ

আবার কেউ সব কিছু খুয়ে হয়ে যায় নিঃস!!!


................................................................................................................................

মরা এখন কালের গর্তে  

                        করুণা আচার্য 



আমরা এখন কালের গর্তে সবাই ডুবে আছি 

জানি না কে মরি আর কে যাবে গো বাঁচি।


সারাক্ষণ ভয়ে ভয়ে কাটাই দিবারাত্রি

জানিনা কার নিভে যাবে কখন জীবন বাতি।


আমরা কেনো করোনাতে যাচ্ছি সবাই ভাসি 

চিকিৎসার হাল ধরবে বলো কোন্ দেবতা আসি।


মুখের ভাষা বুকের বল আজ যে এলোমেলো

কান্না ভরা দু'চোখ সদা জ্বলছে ছলছল।


গৃহ বন্দী হয়ে আছি যেন শূণ্যে করি বাস 

দিনে দিনে কেটে গেলো তিন চারটি মাস। 


আরো কতো যম যাতনা সইবো এই কপালে 

ক্ষুধার জ্বালায় ক্ষুধার্তরা এখন মৃত্যু কোলে।   


এমন দিনেও পাষন্ডরা আছে চুরির তালে

শক্তিশালী রাজাও আজ জড়িয়ে যাচ্ছে জালে।   


মৃত্যু ভয়েও কাঁপে না প্রাণ অবতারের দল

এই দুর্দিনে বাড়ছে আরো অপশক্তির বল। 


কারো মনে দেখছি না সুখ আলো ঝলমল

সবাই মিলে ভোগছি যেন নিজের কর্মফল।


................................................................................................................................

ভচর

        সবুজ সরকার



ভিজে ওড়নার যে নিজস্ব সুবাস আছে

টের পাইনি, যখন পেলাম

তখন হাজার যোজন দূরে ।


ফি বছর

একবুক হিমেল বাতাস আর

দামাল বৃষ্টি এলে পরে

কবিতা না পেয়ে, শঙ্কা বাড়ে -

সপসপে জীবন তৈলাক্ত খাদ্যের মতো

বেশি হলেই বদহজম।


তার চেয়ে ঢের ভালো

কাঁচের জানালার ওপার থেকে দেখা। 

যেন বিকাশ ভট্টাচার্যের চিত্রপট।

কোন এক অজানা শিল্পী এঁকে চলেছেন

কুঁড়ে ঘর, ছাতা মাথায় প্রেমিক যুগল;

খিচুড়ি ও ইলিশ মাছে রসস্থ বাঙালি। 


বর্ষাকাল মানে

নিজের থেকে নিজের পালানো,

এক উভচর জীবন যাপন।


................................................................................................................................

মার কবিতা 

              ফরিদুজ্জামান


 


আমার কবিতা আকুতির শিস স্নেহ মমতার বিধৃত খাতা 

আমার কবিতা দুষ্টমি রোদে শুকনো পাপড়ি বুকে জমা ঘ্রাণ

আমার কবিতা ঘুম ভাঙা ডাক ঘুঘুর দুপুর বনটিয়া ছাও

আমার কবিতা ভোরের শিশির আম কুঁড়োনের চন্দ্র আবেগ


আমার কবিতা জোনাক পোকার জ্বল জ্বলে দ্যূতি তারার আকাশ 

আমার কবিতা রামধনুকের বিচ্ছুরণের সাতরঙা শেড

আমার কবিতা লজ্জাবতির পাতা কুঁকড়ানো ঝড়সড়ো ক্ষণ

আমার কবিতা ভর দুপুরের সোনালু ফুলের হলুদিয়া তেজ 


আমার কবিতা পলাশ শিমুল গোলাপ বনের লালের গিলাপ

আমার কবিতা শিউলি বকুল হিজল তলার ফুল কার্পেট 

আমার কবিতা দ্রোহের বারুদ প্রতিবাদীস্বর ভাঙনের গান 

আমার কবিতা স্বৈরাচারকে হটানোর তেজ সেরা হাতিয়ার


আমার কবিতা কাঁটাজোঁক মুখে ঢেলে দেয়া এক খাবলা লবন 

আমার কবিতা মনের ময়ূর সোনার নায়ের বৈঠা পবন


................................................................................................................................

শেষ বিকেলের গল্প

               মোঃ নাজমুল হোসেন তপু 





না, কোন গল্প নয়, এ এক বিশেষ অভিব্যাক্তি

ফিরে যেতে চাই সেই শেষ বিকেলে, লিখতে চাই সেই বিকেলের গল্প

যে বিকেলে ছিল তারুণ্যের উদ্দীপনা, ছিল রঙিন স্বপ্ন

ছিল ধূসর মেঘ, রঙধনু আর ধানক্ষেতের সুবাতাস

আবেগ ছিল, ভালবাসার সেই বিকেলে


তোমার মনে পড়ে সেই শেষ বিকেলের রূপসার পাড়ের কথা?

থাক সে কথা, ফিরে যেতে চাইলেও তো আর হবেনা সেটা

কিংবা কাশবনের ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে দুজনার হারিয়ে যাওয়া

আবার শিমুলের সাইকেল ধার নিয়ে তোমাকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবার কথা

এখন মনে পড়লে সত্যিই নস্টালজিক হয়ে যাই আমি


দাদার কথা মনে আছে তোমার?

সেই শেষ বিকেলের ঘুড়ি উড়ানোর কথা

মামার দোকানের চটপটির কথা

কিংবা নিরালা মোড়ের ফুচকার কথা

হয়ত ইউরোপে গিয়ে দিব্যি ভুলে গেছ এসব


জানো, সেদিন একা একা ড্রাইভ করছিলাম সেই রূপসা হাইওয়েতে

রাস্তার পাশে দাড়িয়ে খুঁজে ফিরছিলাম সেই শেষ বিকেলের গল্প

হঠাৎ পিছন থেকে দেখি, আমাদের মত করেই দুজন রিকশায় ঘুরে বেড়াচ্ছে

সময় বদলেছে, শেষ বিকেলের গল্পে যুক্ত হয়েছে নতুন চরিত্র

কিন্তু বদলে যাইনি শেষ বিকেলের গল্পের দৃশ্যপট


হয়ত তুমি এখন ম্যাকডোনাল্ডস এর কফি খেয়ে

রোবোটিক শহরে সময় পার করছ

তবু স্বাদের দিক থেকে আমাদের বিকেলটাও কিন্তু মন্দ ছিল না

আমি আবার ফিরে যেতে চাই সেই ঘাসের গল্পে, মাঠের গল্পে, নদীর গল্পে

আর অভিনয় করতে চাই সেই শেষ বিকেলের কোন এক চরিত্রে


................................................................................................................................

বৃষ্টিতে

      শক্তিপ্রসাদ ঘোষ



রোদ চিকচিক দুপুর বেলা

রোদ চিকচিক টিনের চালা

একলা বসে করছি খেলা

হঠাৎ করে মেঘের ছাতা

ধরলো আকাশ ভরে

চারদিকে মেঘ গুরুগুরু

বইছে বাতাস বৃষ্টি শুরু 

একটা পাখি ভিজে জলে 

আশ্রয় নিল গাছের তলে

হাসগুলো খুশি খুব 

পানকৌড়ি দিচ্ছে ডুব 

নৌকোগুলো খাতার

বৃষ্টির জলে দিচ্ছে সাঁতার।


................................................................................................................................

হায় কবে!!

       সাহিদা রহমান মুন্নী



করোনার ছোবলে,

বিশ্বের নেই ঘুম-

চাল চুরি, দুর্নীতি,

নিত্য নতুন ধুম!


অসহায় অবলার,

থাবা দেয় খাবারে-

অনুদান অফুরান

সেলফীর বাহারে!


মন থেকে হীনতা,

আর কবে ভাগবে-

বিবেক'টা এ'জাতির,

হায় কবে জাগবে!

 ...............................................................................................................................

তিনিই মহা শক্তিশালী, সর্বশ্রেস্ট ক্ষমাকারী

                                       বদিউল আলম বাচ্চু 



সাদেক আলী মারা গেছে করোনার কারনে, 

চারিদিকে শুনি গুঞ্জনে,

না ফেরার দেশে চলে গেছে সখিনা খাতুন, 

আমেনা বেগম, রহিমউদ্দিন, করিমউদ্দিন, সুজন,

প্রতিদিন হাজার হাজার মানব মানবী,

মর্ত্যের মায়া ত্যাগ করে যাচ্ছে চলে না ফেরার দেশে,

মৃত্যূর জন্য অপেক্ষা করছে 

আরো লক্ষ লক্ষ জন করোনা ভাইরাসে ।


চারিদিকে চিৎকার,কান্না ,হাহাকার ,

প্রিয়জন হারিয়ে, উম্মাদ সবাই,

নাই কেউ কোনো জানাজায়, 


নাই কেউ মৃতের সৎকারে,


নাই কোন যোগাযোগ কারো সাথে কারো,

গ্রামে, গঞ্জে, নগরে, বন্দরে আতংকিত সবাই

ভয় সবার করোনা এখন সারা দেশে,

একি হলো বিশ্বময়,

লক্ষ লক্ষ মানব মানবী হারিয়ে যাচ্ছে

প্রানঘাতী করোনা ভাইরাসে ।


থামিয়ে দিয়েছে বন্ধু বান্ধবের আড্ডা, 

থামিয়ে দিয়েছে আনন্দ উৎসব, 

থামিয়ে দিচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ, 

থামিয়ে দিচ্ছে পারিবারিক বন্ধন,

থামিয়ে দিচ্ছে জীবনের স্পন্দন,

থামিয়ে দিচ্ছে বিশ্বের অর্থনীতি,

মরছে মানব বাড়ছে ক্ষুধা ।


হিংসা, বিদ্বেষ, অহংকার, ব্যাভিচার

কুশাষন, অবিচার, অপচিকিৎসায়,

অনাচারে ছেয়ে গেছে সারা ধরাধাম,

পাপে পাপে ভরে গেছে মর্ত্যের শূন্যস্হান,

দূর্নিতী করে উপার্জন করা অর্থ 

এখন দিচ্ছে না কোনো সুফল,

মূহুর্তেই থামিয়ে দিচ্ছে তনুর রক্ত চলাচল,

প্রকৃতি আজ নিস্তব্ধ,

প্রকৃতি আজ স্বার্থপর,

কেউ কারো নয় ।


প্রয়োজন হচ্ছে না পরমানু বোমার, 

প্রয়োজন হচ্ছে না মরনাস্ত্রের, 

সৃষ্টিকর্তার দেওয়া একটি রোগই 

কেড়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ প্রান,

নেই কোনো ভ্যাকসিন, 

নেই কোনো মেডিসিন,

মৃত্যূ যখন আসবে পরপারে যেতেই হবে 

শুন হে আদমসন্তান,নেই কোনো পরিত্রান ,

ওহে আদমসন্তান, জপ সৃষ্টিকর্তার নাম,

ক্ষমা চেয়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে করো পাপমোচন, 

একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জীবন রক্ষাকারী, 

তিনিই মহা শক্তিশালী,সর্বশ্রেস্ট ক্ষমাকারী।


................................................................................................................................

কডাউন ধোঁকা

          রুবেল হাবিব



লকডাউন শোডাউন

চলছে চলবেই

যারা ভীত তার দেখে

নান কথা বলবেই।


ঘোরাঘুরি বাজারে

শব্জি পাই তাজারে

রোজ রোজ নিব কিনে

খাবো মাছ ভাজারে।


লকডাউন লকডাউন

বাঙালি বলে ধুর

এর বাড়ি ওর বাড়ি

যাওয়া আসা ঘুর ঘুর।


মাঠে মাঠে হবে খেলা

মোড়ে মোড়ে বাতচিত

চা পান সিগারেটে

লুডু খেলা হারজিত।


লকডাউন মানে হোল

ঈদ কালীন ফুর্তি

বিয়েশাদি খানাদানা

পেট পুরো পুর্তি।


পাড়া পাড়া মহল্লাতে

মারামারি রোজ রোজ

নেতা নেতা শোডাউনে

চলাচলে দিলখোশ।


ঘুরেফিরে দিনশেষে

বলে শোন খোকারে

রোগ ব্যাটা এলে পরে

দিব তাকে ধোঁকারে।  


................................................................................................................................

তৃপ্ত তৃষ্ণা

             সাবিহা নাজনীন  



তুমি রুক্ষ, 

তুমি নিষ্ঠুর, 

তুমি হৃদয়হীনা, 

এত ভালোবেসেও প্রতিদান শুধুই অবহেলা।


তুমি শূন্যতা,

তুমি হাহাকার, 

তুমি ব্যর্থতা,

সুখের বদলে দুঃখের ঘনঘটা। 


তুমি স্মৃতি বিজড়িত ব্যথা,

তুমি সান্তনাহীন কথা,

তুমি সময়ের কঠিন স্রোতে ভেসে যাওয়া ভালোবাসা,

আমি আজ কিনারা বিহীন নদীর নৌকা।                


একসময় খুঁজেছিলাম তোমায় হাজার লোকের ভিড়ে,

তুমি হারিয়ে গিয়েছিলে এক নিমিষে।

চেয়েছিলাম তোমায় প্রতিটি নিঃশ্বাসে,

তুমি পাড়ি দিয়েছ ভীনগ্রহী আকাশে।


সেই থেকেই জীবনটা বড় রংচটা,

এই বৃষ্টি ভেজা প্রকৃতিতেও 

তুমি না পাওয়াই থেকে যাওয়া আমার এক      অতৃপ্ত তৃষ্ণা


................................................................................................................................

ভালো থাকুক বাংলাদেশ

                          কাজী আনিসুল হক



পাপের বোঝা অনেক ভারী

খোদার আরশ কাঁপে

সময় থাকতে জপ নাম

রাগ ভুলে অনুতাপে


আকাশ থেকে গজব নামে

করোনা সয়লাব

মরছে মানুষ পথে ঘাটে

এ কার জয়লাভ


বাঁচতে হলে বুঝতে হবে

সচেতন থাকা চাই

যথা সম্ভব বাড়িতে থাকো

এছাড়া উপায় নাই


সাবান দিয়ে বিশ সেকেন্ডে

জীবানুরা হবে শেষ

মুখোশ পরো বাহির হলে

ভালো রাখো পরিবেশ


ভালো থাকুক চির সবুজ

প্রাণ প্রিয় বাংলাদেশ।


................................................................................................................................

দি মনে পড়ে 

            পূর্ণচন্দ্র বিশ্বাস


একটা ঘুরঘুটে অন্ধকার নিঝুম রাত

ফেলে রেখে যাচ্ছি

স্বপ্ন দেখো নদী- জল -

বাঁকা নৌকো চলকানো ঢেউ


একটা খাঁ খাঁ দুপুর

একমালা ভাদ্রুরে রোদ রেখে যাচ্ছি

সিদ্ধ ধান ভিজে মশাল শুকিয়ে নিও


শুধু তোমার জন্য একটা

কবিতা লিখে যাচ্ছি

তাতে সাত সুর বেঁধে

তোমার নিজের গলায়

একটিবার অন্তত গেয়ো


দেওয়াল আলমারিতে

কয়েকটি বই রেখে যাচ্ছি

শোবার সময় অন্তত একটি বই

মাথার বালিশের পাশে রেখো


মহাকাশের মতো ফাঁকা একটা

ক্যানভাস রেখে যাচ্ছি

সঙ্গে কিছু রং তুলি

অকারণে আচড় কেঁটো ।


................................................................................................................................

কটি কণ্ঠ

          নার্গিস পারভীন



আমার কাছে স্বাধীনতা মানে-

একটি বজ্রকণ্ঠের আহবান!

আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে ছাপিয়ে ওঠা বিপ্লবী মন্ত্রবাণ!

একটি অঙ্গুলি ইশারা! যেন স্বয়ং মহাকাল!

মুহূর্তে বেজে ওঠে রক্তে দামামা চাই নতুন সকাল!


আমার কাছে স্বাধীনতা মানে-

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান!

টগবগে বর্ষীয়ান তরুণের পদভারে হিল্লোলিত রেসকোর্সের ময়দান!

ধূলিসাৎ সপ্তম নৌবহর চাইনিজ রাইফেল ঐ কণ্ঠের কাছে!

ভালোবাসার এমন মন্ত্রে তন্ত্রে তন্ত্রে বাজাতে বীণা একজনই আছে!


সে তো কালপুরুষ! চিনেছিলো চাঁদ-তারা পতাকা!

রাওয়ালপিন্ডির পিন্ডি চটকাতে জন্ম নেয়া বাঙালির প্রাণ-বলাকা!

জনগণ বিমোহন সম্মোহনকণ্ঠ! কণ্ঠেই বাংলা স্বাধীন!

বিশ্বের যত বীর, যত অস্ত্র ম্লান! সবই এক কণ্ঠের অধীন!


এমন করে কখনো বেজেছিলো কি অর্ফিয়াসের বীণা?

যেন প্রমিথিউস! বিক্ষত হয়েও ফেরত দেবে না অগ্নিকণা!  

এসেছে নতুন ভোর জ্বলজ্বলে সূর্যদীপ্ত স্বাধীনতা!

সব দিয়েছে কেবল একটি কণ্ঠের হিমালয়সম দৃঢ়তা!

................................................................................................................................

রোনার পরের বিশ্ব

                         মোজাম্মেল হক



ভাবতেও শরীর শিহরিয়া উঠে

সৃষ্টির আদীকাল হতে এইরূপ

ভিভীশিখাময় দূরযোগ এসেছে ।


আজকের মতো তখন কার দিনে

বিশ্বের মানুষ ততটা গিয়ান বিঞগানে

উন্নত ছিলনা শিল্প উন্নয়নের নামে

বিশ্বের আবহাওয়া আজকের মতো

এতো বিষাকত রূপে কলোশীত ছিলনা ।


বিশ্বের একদেশের সাথে আর এক

দেশের যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নতিও

আজকের মতো তত উন্নত ছিলোনা ।


যার কারণে জীবন ধংসী ছোঁয়াছে ব্যাধি

এক দেশ হতে আর এক দেশের

মানুষের শরীরে সংক্রানমিত হতে পারতোনা।


আজ বিগগানের উন্নতির জন্যে যোগাযোগের

ব্যাপক উন্নতির কারণে ব্যাবসায়ীক কারণে

পৃথিবীর এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের

যোগাযোগ মানুষের আসা যাওয়ার সম্পর্ক


আমুল পরিবর্তীত হওয়ার ফলে পৃথিবীর

দূরত্ব অনেক কমিয়ে এসেছে যে কারণে

এই ঘাতক করোনা বিশ্বের প্রায় সব কটি

দেশ জুড়ে মৃত্যুর তাণ্ডব ছড়িয়ে দিয়েছে ।


শুধু করোনার কারণে মৃত্যু নয় করোনার

আক্রমণ হতে বাচাবার জন্যে যেসব জরুরি

ব্যবসতা গ্রহণ করতে সরকারদের লকডাউন

আর সসিয়েল ডিসটেংডিং আইন করে


মানুষকে ঘরের বাইরে যাওয়া অফিস আদালত

ফেকটরী বন্ধকরে দেওয়ার কারণে যে বেকার

সমস্যার সৃষ্টি হবে তার পরিনতি করোনার

ছেয়েও যে ভীভিষিখার সৃষ্টি করবে তা ভাবতে

শরীর শিহরিত হয়ে উঠে ।


বিশ্ব জুড়ে কোটি কোটি মানুষ অনাহারে

মৃত্যুবরন করবে এই সব অসহায় মানুষের

কথা তাদেরকে বাচার কি উপায় কেউ কি

তার কথা ভাবছে?


বিশ্বের সবচেয়ে বলবান অর্থ সম্পদ অস্ত্রের

ভাণ্ডারী গনতন্ত্রের মুখোশের অনতরালে লুকিয়ে

থাকা দেশে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ

গনতন্ত্রের রাজনীতির বলী হয়ে মৃত্যুর বরণ


করে চলছে ইউনাইটেড নেশন নামের খেলা

ঘরের উপরে খেপেগিয়ে বিশ্বের মানুষের

এই চরম বিপদের সময় কি আচরণ করছে?


করোনাভায়রাস মানুষের সৃষ্ট হউক কিংবা

প্রকৃতির সৃষ্টি হউক প্রাকৃতিক উপায়ে একদিন

থেমে যাবে যারা বেচে থাকবে তাদেরকে নতুন

এক পৃথিবী নতুন এক মানবিক সমাজের কথা

ভাবতে হবে এটাই হবে করোনার করুণা?


কিন্তু মানুষের জন্যে এই মহত পথে এগিয়ে যাওয়া

কি যতটা ভাবাযায় ততটা সহজ হয়ে উঠবে?

কারণ করোনা চলেযাবে তাহলে তাদের অস্ত্রের

কি হবে, তাদের অস্ত্রের ভাণ্ডার তো ঠিক থাকবে?

তাদের শক্তির দম্ভ সম্পদের লোভ বেড়ে যাবে

তার পরিনতি হয়তো করোনার চেয়ে আরও

ভিভীশিখাময় হয়ে উঠবে যার পরিনতির কারণে

বিশ্ব জুড়ে যুদ্ধ বিগ্রহের সৃষ্টি হতে পারে?


এই চরম পরিনতি হতে বিশ্বের মানুষকে

কিকরে বাচাতে হবে বিশ্বের প্রতিটি দেশের

জনগণকে এখন থেকে চিন্তা ভাবনাকরে

সেই সব দেশের গনতন্ত্রের মুখোশ পরা

জনগণের সম্পদ লুটেরাদেরকে চিনতে হবে

তাদেরকে দেশ পরিচালনা থেকে বাদ দিতে হবে?


................................................................................................................................

COVID-19

TASNIA KHAN ZAARA



We have legs,

But can't go outside,

We have hands,

But can't drive the car,

We have eyes,

But can't see the outside world,

We are not prisoners!

But now we are prisoners!


And our house,

Is the police station!

And our cars,

Is the ambulance!

And our room,

Is the jail!

AH! What a world!

Everything is online!


We have excellent brains,

But failed to make the vaccine!

The world is very mine to us,

Because 1 time,

We cross the limit of a human being!

Yes! 1 time the Earth has carried, shouted!

But we didn't listen!!!

So, now is our time to pay!

Now we are the earth!!


And COVID-19,

Has opened our eyes! 

So, when this virus will be gone!

Pls everybody pls keep Ur eyes open!

Don't close Ur eyes again!!!

OR else COVID-19, 

May come again!!!

In a dangerous way!!!


................................................................................................................................

দুঃসময়ের কবিতা

                      ইকবাল বাবুল



রাত পেরোতেই ঘুম যায় টুটে

খুব ভোরে ভোরে সূর্যিটা ওঠে

আমার উঠোনে ঝলোমলো সেই পাঠায় আলোর রথ

আমি ভালো জানি আমার জন্যে কারা চেয়ে থাকে পথ


পথের দু'ধারে ফোটা ফুলগুলি

কী রকম করে আকুলি বিকুলি

আমাকে না দেখে তারা একে একে মাথা কুটে কুটে মরে

শেষ হলে দিন মুখটা মলিন অভিমানে যায় ঝরে 


কচি দুর্বা ও থানকুনি পাতা

মেলে ধরে যেনো সবুজাভ খাতা

ঐ মেটোপথে আমি যদি যাই মেতে ওঠে তারা সুখে

কিনতু তারাতো জানে না আমার কতো অভিমান বুকে


দীঘিটার পাড়ে ঘন বাঁশবন

বাতাসের সাথে করে শন শন

শাদা কানিবক কতো তার শখ এসে ঝাপটায় ডানা

খুব চেনা তাই আমাকে তাদের ভালো করে আছে জানা


ফড়িঙের ছানা নীল প্রজাপতি

আমিও তাদের বুঝি মতিগতি

সারা বন জুড়ে ওড়ে ওড়ে ঘুরে মেলে ছোট ছোট পাখা

এরকম করে অভিমানটুকু কতো যায় ধরে রাখা ? 


সেই কবে থেকে কতোদিন ধরে

দেখিনি তাদের আমি চোখ ভরে

তারাও আমাকে দেখছে না বলে মন থাকে বড়ো টানা

বলো- ফুল পাখি কি করে বেরোই ডিঙিয়ে মায়ের মানা


ঘর থেকে তাই দিয়ে দেখি উঁকি

আকাশে মেঘেরা করে আঁকিবুঁকি

ধীরে ধীরে নামে সন্ধ্যার ছায়া - মায়া ছড়িয়ে দেয় পথে

বোঝাতে পারি না কিছুতে আমার মনটাকে কোনো মতে


উঠোনে ঝিঙের মাচানের পাশে

ঝাঁকে ঝাঁকে কতো জোনাকিরা আসে

আমাকে না দেখে অভিমানে তারা জ্বলে আর শুধু নেভে

এঘরে ওঘরে পায়চারি করি একা একা মরি ভেবে। 


কতো কথা তাই বলতে ব্যাকুল, সব কথা মুখে ফোটে ? 

বুকের ভেতরে তোলপাড় করে ভালো লাগে নামোটে।


................................................................................................................................

র্ষাকে স্মরণ

          শাহাদাত হোসেন



বৃষ্টি এলো উদাস বনে

গাছ-গাছালির শান্ত গাঁয়ে,

বৃষ্টি এলো ঝড়-তুফানে

বজ্রপাতে আঘাত আনে!


বৃষ্টি এলো আকাশ থেকে

মেঘের সাথে করলো আড়ি,

বৃষ্টিরা সব তাল-মিলিয়ে

টিনের ছালে পড়ছে ভারি!


বৃষ্টিরা আজ পড়ছে জোরে

বর্ষাকে বেশ স্মরণ করে,

বর্ষা তুমি আসলে বুঝি

প্রবল ঝড়ে দিচ্ছো উঁকি!


থাকলো তোমার প্রবল ঝড়

মাঝে মাঝে বর্ষারা হয় ভয়ংকর,

এই না বুঝি হলো মেঘ

বৃষ্টিতে আজ বেলাশেষ!


বর্ষা তুমি শান্ত প্রাণে

দাওনা কিছু উদাস দুপুর,

তপ্ত রোদে খিলখিলিয়ে

হাসবো না হয় একটা দুপুর!


মাঝে মাঝে থামুক না হয় একটু ঝড়

রোদ-বৃষ্টি জীবনভর,

মাঝে মাঝে দাওনা খোলে-

হিমেল বাতাস উদাস মনে!


................................................................................................................................

২০শের ডোজ করোনা

               শান্তা ইসলাম সু'আদ



খেয়েছ সাপ, ব্যাঙ, কুইছা,

দেখ নাই হাগুর পর হুইছা!

বাছ নাই হালাল হারাম,

করেছ শুধু আয়েশ-আরাম।


বাদ দেও নাই শিয়াল শকুন,

দুই নাম্বারি ছড়াইছ দ্বিগুণ।

পড়তে দেও নাই হিজাব,পবিত্র কালাম,

মুসলিমদের করেছ গোলাম।


পড়তে দেও নাই নামাজ,কোরআন,

আবিষ্কার করবে সূর্য, কোরান।

কৃত্রিম এই দুনিয়াতে,

সংসার করবে রোবট নিয়ে।

থাকবে মঙ্গল গ্রহে,

ধরবে না মহাপ্রলয়ে।


অধিক পাপে আজ দুনিয়াতে,

প্রশ্বাস নিতে পার না মুক্ত বাতাসে।

অধিক পাপে,রোজ খাইতেছ করোনা,

প্রভুর ডোজ কেন হজম করতে পার না?

কোরআনের আছে হাজারো করোনা,

সময় থাকতে খুলেই দেখ না!?!


................................................................................................................................

সুখ শোকের খুনসুটি

                       রিলু রিয়াজ



কোথাও স্বস্তির নিঃশ্বাস কোথাও অতিকায় দীর্ঘশ্বাস

কখনো প্রত্যাশার হাতছানি কখনো অনাকাঙ্খিত সর্বনাশ।

কোথাও আশীর্বাদের জোছনা মাঙে মন

কখনো জীবনের অনাড়ম্বর পার ভাঙ্গে অকারন।

বড় অদ্ভুত এই প্রাাপ্তি অপ্রাপ্তির খেলা

ঘরে ফেরে পাখি সন্ধ্যাবেলা বড্ড একেলা।

সুখ ও শোকের খুঁটি পোঁতা প্রেমের মৃত্তিকায়

বিশ্বাস-অবিশ্বাসের দোলাচলে লুকায়িত প্রেম

রহস্যময় কুহেলিকায়।

রঙ্গময়ীর রঙের ছটায় ভরা বসন্তের হাঁড়ি

আমার আকাশ জুড়ে অবিরাম বর্ষন

আষাঢ় শ্রাবণ - ফাগুন নিয়েছে আড়ি।


................................................................................................................................

বাদল দিনের স্মৃতি 

                   ওয়াহিদ আল হাসান



সবার ছিল বাল্যকাল দুরন্ত 

পাখির মতো মন ছিল উড়ন্ত।


বাদল দিনে মনটা আবার 

আপ্লুত হয় বারেবারে

 শৈশবের সেই দিনের পরশ 

লাগত যদি জীবন দ্বারে।


বর্ষাকালে টিনের চালের 

রিমঝিমঝিম বৃষ্টি গানে 

মনটা হতো পাগলপারা 

বন্ধুরা সব মাঠে ঘাটে 

খেলার মাঝে ডুবে থেকে 

করতাম মজা নিষেধ ছাড়া।


পড়লে মনে এমন দিনের স্মৃতি। 

বুকে জাগে হাহাকার আর প্রীতি।



--- সমাপ্ত ---

আপডেট থাকতে ভিজিট করুনঃ

www.kobitayjagoron.com


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.