মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ্
সাক্ষাৎকারঃ
বর্তমান সময়ের প্রতিশ্রুতিশীল কবি ও লেখকের তালিকায় যে ক’জন তরুণ কবির নাম উঠে আসে তাদের মধ্যে অন্যতম, আলোচিত একটি নাম হল কবি মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ্। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী এই তরুণ লেখক কবিতার পাশাপাশি ছড়া, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, নাটক, গীতিকবিতাসহ জাতীয় পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লিখে চলেছেন। মাসিক ভিন্নমাত্রা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে নিয়মিত চার বছর ধরে পত্রিকাটি প্রকাশ করে যাচ্ছেন। সেই সাথে শিশুতোষ ছড়া, কবিতায় ও সিদ্ধহস্ত।
২০১৩ সালে বইমেলায় কিচির মিচির প্রকাশনী থেকে শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ ‘ডাকাত মামা’ প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপকভাবে আলোচিত ও শিশুমহলে সমাদৃত হয় এই গ্রন্থটি। ইতোমধ্যে একক ও যৌথভাবে প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা সতেরটি। মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহর জন্ম ২২ নভেম্বর ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পিরোজপুর জেলার পত্তাশী গ্রামে। পিতা মরহুম আব্দুস সাত্তার ছিলেন একজন স্বনামধন্য শিক্ষক। ৮ ভাই বোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ম্যাগাজিন সম্পাদনার পাশাপাশি আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির বাংলা বিভাগে তিনি অধ্যাপনা করছেন।
ইতোমধ্যে বহু দেশ ভ্রমণ করার সৌভাগ্য হয়েছে তার। কবিতায় জাগরণ এর পক্ষ থেকে
সাহিত্যের নানা দিক নিয়ে একান্ত সাক্ষাতকারের অংশ বিশেষ তুলে ধরা হলো। সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছেন সাহিদা রহমান মুন্নী।
কবিতায় জাগরণ :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
প্রথম লেখালেখি মজলুম' নামের একটি কবিতা যা বাগেরহাট থেকে মজলুম' নামের একটি স্মরণিকায় প্রকাশিত হয়।
কবিতায় জাগরণ :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
১৯৯২ সালে ছাত্র অবস্থায় অভিব্যক্তি’ নামে প্রথম বই প্রকাশিত হয়। সেই বই প্রকাশের পর আমি যেহেতু ছাত্র ছিলাম আমার অভিভাবকগণ পিরোজপুরে আমার বাবার কাছে জোড় আপত্তি ও অভিযোগ করে চিঠি লিখেছিলেন যে, সে পড়ালেখা বাদ দিয়ে বই লেখা শুরু করেছে এবং ছেলে খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু পরবর্তী সকল ক্লাসে ভাল। রেজাল্ট করার কারণে তাদের সে অভিযোগ টিকেনি। কারণ আমার ডাবল মাস্টার্স এর দু'টোতেই সৃষ্টিকর্তার কৃপায় ফার্স্ট ক্লাস ছিল।
কবিতায় জাগরণ :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
বাংলা সাহিত্যের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলতে গেলে। এর ইতিবৃত্ত আলোচনা করা দরকার। বাংলা সাহিত্যের ইতিবৃত্তে তিনটি ভাগে। বিভাজন করা হয়েছে। প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগ। কেউ কেউ
আধুনিক যুগের পর অত্যাধুনিক যুগের প্রবর্তন করতে চেয়েছেন। প্রাচীন যুগের সুত্রপাত পাল রাজত্বের শুরু থেকে এবং শেষ সন রাজত্বের পতনকাল পর্যন্ত । বংলা সাহিত্যের মধ্যযুগটি বহুদুর পর্যন্ত বিস্তৃত। মোটামুটি ত্রয়োদশ শত থেকে অষ্টাদশ শতক পর্যন্ত। একালে প্রাচীন যুগের চিন্তাধারার পরিবর্তন ঘটেছে। ধর্মীয় বোধের পরিবর্তন ঘটেছে। শিল্প চিন্তায় এবং সাহিত্য চিন্তার পরিবর্তন ঘটেছে। মধ্যযুগের সাহিত্য অনেক ব্যাপক এবং বিস্তৃত। এর গতিপ্রকৃতি ও বিচিত্র ধরনের। বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের সূত্রপাত অষ্টাদশ শতকে এই অঞ্চলে। ইংরেজদের শাসন প্রতিষ্ঠার পর থেকে।
উনবিংশ শতাব্দীতে ভদ্র বাংলা সাহিত্যের বদৌলতে এ সাহিত্যে ধর্মাস্ত্র, উপদেশ, ইতিহাস, জীবনী, কাব্য ও রোমান্টিক উপাখ্যান বিষয়ক বহু গ্রন্থই রচিত হয় যাদের হাত থেকে তারা হলেন, মীর মোশারফ হোসেন, কায়কোবাদ, ঈশ্চরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, বঙ্গিম, মধুসুধন দত্ত, শেখ আঃ রহিম, পন্ডিত রিয়াজুদ্দীন মাশহাদী, রবীন্দ্রনাথ , নজরুল, ফররুখ, গোলাম মোস্তফা, সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী, আবু জাফর শামসুদ্দীন, জীবনানন্দ দাশ, বুদ্ধদেব বসু, জহির রায়হান, মুনির চৌধুরী,
শওকত ওসমান, আলাউদ্দিন আল আজাদ, আনিসুজ্জামান, রফিক আজাদ, নির্মলেন্দু গুণ, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ, শামসুর রহমান, আশরাফ সিদ্দিকী, সৈয়দ আলী আহসান, রাশেদ রউফ, রেজাউদ্দিন স্টালিন প্রমুখ।
কবিতায় জাগরণ :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
বাংলা সাহিত্যের দুর্দিন বা সুদিন বলার কোন অবকাশ নেই। কারণ,
বর্তমান কবি, সাহিত্যকগণ অনেক আধুনিক ও বিজ্ঞানমনস্ক। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে তাই লেখকগণ
তাদের দায়িত্ববোধ এবং সাহিত্যের সকল শাখায় বিচরণ খুবই সন্তোষজনক দেখা যাচ্ছে।
কবিতায় জাগরণ :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
আমি দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে পারি কারণ আমি মাত্র। কয়েক মাস আগেও কোলকাতা ভ্রমণ করে এসেছি। সেখানে কয়েকটি প্রোগ্রামে যোগদান করে আমি যা দেখেছি এপাড় বাংলার সাহিত্যের মান এবং ভবিষ্যৎ অনেক সূদুর প্রসারী এবং মানোত্তীর্ণ ও কালত্তীর্ণ। কারণ একজন লেখকের লেখা। মানের দিকে কালোত্তীর্ণ হবে এটাতো খুব স্বাভাবিক। আজকে হয়তো একটি লেখা আবেগের বসে লিখে ফেললাম, দুইশ বছর পরে সেটাই আন্তজার্তিক পরিমন্ডলে আলোচনার বিষয়বস্তু হতে পারে এবং আমার লেখনীতে এমনটিই চেষ্টা এবং আশা করছি।
কবিতায় জাগরণ :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
সমাজের সকল অসংগতি এবং অমিত সম্ভাবনাই আমার লেখার প্রতিপাদ্য।
কবিতায়-রোমান্টিকতা, গদ্যে- সমাজের প্রতিচ্ছবি, শিশুসাহিত্যে-সম্ভবনা ও দিক নির্দেশনা। গানে, হৃদয়ের আকুতি সম্পাদনায়-একটা নতুন কিছু।
কবিতায় গণজাগরন :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
একটি প্রবাদ আছে “আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ” তেমনি আজকের লেখাটি যেন দেশ, কাল এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য যেন সাহিত্যের এ্যাসেট
হিসেবে রেখে যেতে পারি এমনটি আশা করি।
কবিতায় জাগরণ :
মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
আমার প্রিয় উক্তি : সকল মানুষকে নিজের মত করে ভালবাসুন।
প্রিয় মূহুর্ত : প্রিয়জনকে কাছে পেলে।
প্রিয় ব্যক্তিত্ব : হযরত মুহাম্মদ (সা.)
প্রিয় খাবার : সকল হালাল খাবার
প্রিয় রং: গোলাপী ও সাদা।
প্রিয় ফুল: বেলী ফুল।
প্রিয় সময়: সকাল।
প্রিয় কবি : কাজী নজরুল ইসলাম।
প্রিয় গান : নজরুলগীতি ও আধুনিক বাংলা গান।
সবচেয়ে বেশী শুনি : বিভিন্ন কারীদের কণ্ঠের কুরআন তেলাওয়াত।
সবচেয়ে বেশী পছন্দ করি : কারো প্রশংসা করা।
সবচেয়ে অপছন্দ : পরনিন্দা করা।
সেরা বাক্য : সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎসঙ্গে সর্বনাশ।
কবিতায় জাগরণ :
মহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ :
আমার অন্তরের অন্তস্থল থেকে এর দীর্ঘপথ চলা ও শুভ কামনা রইল।
কোন মন্তব্য নেই