কবিতায় জাগরণ ( অক্টোবর ২০১৯ ) সংখ্যা
প্রচ্ছদঃ এম.আর.আইচ.সরকার
প্রকাশঃ ১ অক্টোবর ২০১৯
মূল্যঃ ৬০ টাকা
সম্পাদকের কথা
সময় ছুটে চলেছে আপন গতিতে,সেই সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে আমরাও ছুটতে চেষ্টা করছি সমতালে, এই ছুটে চলায় কখনো কখনো গরমিল হয়ে যায় পথের পিচ্ছিলতায় চলার গতি! তবুও এগুতে হবে এবং পাল্লা দিতে হবে বহতা নদীর মতো বয়ে যাওয়া সময়ের সাথে,এই পথ পরিক্রমায় যারা লেখা দিয়ে, সহযোগিতা করেছেন তাঁদের সকলের কাছে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, আপনাদের পাশে থাকার ভরসায় উজ্জ্বীবিত হই শত কষ্টে,শত সীমাবদ্ধতায়, এভাবেই সবসময় সাথে থাকুন পাশে রাখুন! বর্তমানে দেশ ও জাতি খুব অস্থির একটা সময় অতিবাহিত করছি ডেঙ্গু আতঙ্কে , সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কেটে যাবে এই ঘোর তমশা এটাই কাম্য! কবিতায় জাগরণ পরিবারের পক্ষ থেকে আবারো কৃতজ্ঞতা সকলের প্রতি যারা এক বিন্দু হলেও আন্তরিকতা দেখিয়েছেন!, পথে নেমেছি হাঁটার জন্য,পথ যতোই কঠিন হোক আমি হেঁটে যাবো এ আমার দৃঢ় প্রত্যয়! "কথা দিবেন কথা রাখার জন্য ভাঙার জন্য নয়"! জয় হোক মানবতার,জয় হোক কবিতার!! সম্পদক সাহিদা রহমান মুন্নী!
যাদের লেখায় সাজানো / অলংকিত এই সংখ্যাঃ
১. কাজী আনিসুল হক
২. মোঃ বদিউল আলম বাচ্ছু
৩. এস এম জুনেদ জামান
৪. দালান জাহান
৫. অভিলাষ মাহমুদ
৬. মাসুদা ইতি
৭. মুস্তাফিজুর রহমান
৮. শান্তা মরিয়ম
৯ . জেইনাল আবেদীন চৌধুরী (সৌদি আরব
১০.আব্দুল বাসেত
১১. রিলু রিয়াজ
১২. শক্তিপ্রসাদ ঘোষ
১৩.আসলাম প্রধান
১৪. সাকিব জামান
১৫. গোলাম রব্বানী টুপুল
১৬.অর্ণব আশিক
১৭.মাহবুব আহমেদ
১৮. মোবাশ্বীর হোসাইন
১৯. ওয়াহিদ আল হজাসান
২০. সবুজ সরকার ( পশ্চিম্বঙ্গ,ভারত)
২১.সাহিদা রহমান মুন্নী
২২. বিশ্বাস মিলি (গল্প)
কষ্ট ভোলার মন্ত্র
-কাজী আনিসুল হক
এই মেয়ে তুমি বাসবে ভালো?
হঠাৎ করে পোড়া বুকে ছুঁয়েছে আলো।
আঁধারঘন জীবনপটে জোনাক হাসে
নতুন চাঁদ করে খেলা বাঁকা ঠোটে।
ভাবনা ভুলে স্বপ্ন আঁকি নীলাকাশে
বোঁচা নাকে বিন্দু বিন্দু শিশির জটে।
তিলক ফোঁটা রয়েছে আঁকা বাম কপালে
ইচ্ছে জাগে আপন হতে গোপন রাতে।
চিবুক তুলে লজ্জা ভেঙে চুমু খেতে
ষোড়শী দেহ মোহনি বাঁকে চাই হারাতে।
এই মেয়ে তুমি হবে আগুন ?
অসময়ে বৃষ্টিজল কদম ফাগুন।
জানো তুমি আড় চাহনি করে মাতাল
হাসির রেশে তারা ঝরে বাতাস উতাল
কষ্ট ভোলার মন্ত্র মেয়ে ভালোবাসা।
.....................................................................
শরতের বরিষনে
মোঃ বদিউল আলম বাচ্ছু
ভাদ্রের এই রজনীতে হঠাৎ বর্ষন ,
বর্ষার জমানো রাগ ঢেলে দিলে শরতের এই সময়ে ,
আমি বাতায়ন পাশে বসি দেখি অনবরত ,
ঝড় ঝড় শব্দে ঝড়িছে কেমনে ,
মনের কথা মনই জানে ,
গোপন কথা উঠছে মনে অসময়ের এই বরিষনে ,
স্মরনে আসে মোর ,তোমার কথা ভূলিতে নাহি পারি ,
তোমার ক্ষনিকের ভালোবাসা ,
হৃদয়ের চিরতরে গোপনে রয়ে যায় ।
বলেছিলে চিরতরে ভালোবাসিবে মোরে ,
কেনো ছেড়ে গেলে ,
কোন বা দোষে ভেবে নাহি পাই ,
আজ কেনো হায় ,
স্মৃতিরা দৌড়ায় পিছু নাহি ছাড়ে,
ভূলিতে না দেয় তোমায়,
তুমি বলেছিলে যে হাত ধরেছো আজি ,
ছাড়িবে না জীবন গেলে ও তা,
আজ তুমি কোথায় ,
আমি কোথায় বিরাজ করছি ,
বিধাতা জানেন শুধু তা ।
আজ বরিষনের রজনীতে ,
তোমায় শুধু মনে পড়ে ,
তোমার কপালে ভালোবাসার চুম্বন একে দিয়েছিলাম ,
বিধাতা শুধু জানেন,
বিধায় বেলায় দুজনের নয়নের কোনে ,
জলকনা চিক চিক করে উঠেছিলে ,
তা কি মনে নেই,
তুমি বলেছিলে আজীবন রাখিবে মোরে ,
তোমার হৃদয়ের গোপন গভীরে ,
ভূলে যেতে নাহি চাও ,
বিদায়ে সে দেখাটুকু ছিল হৃদয় ছিন্ন করা ,
আমি আজও ভালোবাসি তোমায় ,
জানিয়ে দিলাম ওগো মোর প্রিয়তম ।
শরতেরই কাশবনের ফুটন্ত কাশফুল,
উড়ে যাওয়া পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘগুলি তোমার স্মৃতি ,
ভূলিতে দেনা মোরে ওগো মোর চিত্তের ভালোবাসা,
আজো হৃদয়ের গোপন কোনে রেখেছি তোমার আশা,
একদিন আসিবে ফিরে ভালোবসে জড়িয়ে ধরবে আমায়।
..........................................................................................................
শরৎ ভালোবাসি
এস এম জুনেদ জামান
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
দোলছে কাশফুল বনে,
স্নিগ্ধ বায়ু লাগছে ভালো
দোল খেয়েছে মনে।
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
মন জুড়ানো ভোর,
গাছের ডালে গাইবে পাখি
ভিন্ন গানের সুর।
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
ভাদ্র আশ্বিন মাস,
কুয়াশা ঘেরা সকালটাতে
ভেজা দূর্বাঘাস।
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
জুঁই-শেফালি ফুটে,
কাশফুলেরা আমায় ধরে
চুমু দেয় যে ঠোঁটে।
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
রাতে চাঁদের আলো,
ছুটছে বেড়ায় জোনাকিরা
লাগছে কত ভালো।
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
প্রিয়ার নাকের দুল,
ফুল কুড়ানোর ছলে ছলে
বাঁধে খোঁপায় ফুল ।
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
রৌদ্র মেঘের খেলা,
এই বুঝিরে বৃষ্টি হবে
চাতক পাখির মেলা।
শরৎ বলতে এটাই বুঝি
প্রেয়সীর মুখের হাঁসি,
তাই তো আমি শরতকে
কত্ত ভালোবাসি।
..........................................................................................................
একটি পূর্ণ গ্রাস সূর্য গ্রহণের অপেক্ষায়
দালান জাহান
একটি পূর্ণ গ্রাস সূর্য গ্রহণের অপেক্ষায়
আজও বেঁচে আছি অনিমেষ
মমতার মাস্তুল ভেঙে কখন বাজবে
সেই ভয়ঙ্কর কলিং বেল
যার অপেক্ষায় তোমার দুয়ারে বসে থাকে
দুটি মস্তক বিহীন কালো বিড়াল।
একটি অভিভাবকহীন ফুলের কান্নায়
কখন জাহাজের মতো ভারী হবে বাতাস
কখন তোমার চোয়াল পোড়ে বেরিয়ে আসবে
দাঁত -ওয়ালা আগুনের নদী।
তুমি আগুন মাথায় নিয়ে দৌড়ে আসবে
গলাকাটা কবুতরের মতো
নামহীন বৃক্ষের দুর্ভিক্ষে
তাকিয়ে থাকবে হাজার বছর ধরে।
পৃথিবীর ওজনসম আক্রোশে
একটি ঝরাপাতা চেপে ধরবে
তোমার বোতামহীন শার্টের কলার
তুমি কতোটাই বুঝবে মদ্যপ মহিষ
একদিন যে রমণীর সাদা মাখনে
ফর্সা হয়েছিল তোমার অন্ধকার মুখ।
অনুভূতির উর্বর আগুনে
জ্বলতে জ্বলতে যার জ্বলে না অশেষ....
একটি পূর্ণ গ্রাস সূর্য গ্রহণের অপেক্ষায়
আজও বেঁচে আছি অনিমেষ।
..........................................................................................................
খুঁজে প্রেমের আকাশ
অভিলাষ মাহমুদ
মেঘলামন খুঁজে প্রেমের আকাশ এমন শরতে?
চঞ্চল মন অঞ্চল বন খুঁজে কোন হিয়ার পরতে?
হেয়ালি এ মন খেয়ালি কেমন প্রেমিক বিনে কে বুঝে?
কে কীসের আশায় মনোখেয়া ভাসায় কোন মোহনায় প্রেমতরী খোঁজে?
রুপোলি এ রাত খুঁজে সোনালি প্রভাত কোন সে সুখের আশায়?
পাওয়া না পাওয়া হারিয়ে যাওয়া কাউকে কাঁদায় কাউকে হাসায়?
আদরের ধন খুঁজে গীরি বন পেলে খুশি না পেলে মন কাঁদে দিবা নিশা।
আদরের ধন পথ গীরি বন খুঁজে যায় মন, না পেলে হারায় দিক কি- বা দিশা।
মায়ার বাঁধনে হাসি ও কাঁদনে হলে বেলা শেষ যাবে রে বুঝা কে আপন কে বা পর।
পেতে হলে জয় থাকিতে সময় আপনার সেবা কর।
রক্তের ঋণ শোধিতে ক'দিন? ওরে হয় কি আদো শোধ?
ওরে পাগলা মন সামলা তোর কবে হবে সেই বোধ?
প্রেম দিয়ে জয় কর যতো ভয় হ' রে প্রেমিক খাঁটি,
নইলে জীবনে বিফল সাধনে হবে তোর সব মাটি।
মেঘে মেঘে অনেক দেখি কেটে গেলো বেলা!
না ভেবে আর নতুন করে আবার খেল খেলা।
রবো ভালোবেসে নব আলো এসে আমাদের রাঙাবে,
হে নওজোয়ান হ আগোয়ান বিবেকের ঘুম কে ভাঙাবে?
কতো যে প্রেম কতো যে সুখ আর কতো যে জাগে বাসনা,
কতো হাত ধরি কতো পায়ে পড়ি করি যে কতো সাধনা।
বিবিধ রতন পাইলে যতন করতাম যদি এক খেয়ালে,
হতো না বিফল সাধনা সকল মরিতে হতো না আর টুকে মাথা কোনো দেয়ালে।
তাই ওরে বলি বুঝে শুনে চলি বন্ধুর পথ দুর্গম গীরি নদী,
এখই নে রে শপথ নইলে হারাবি পথ কাঁদবি নিরবধি।
..........................................................................................................
সারাজীবন হোক না শরৎময়
মাসুদা ইতি
এখন আমাদের শরৎ বেলা
তুমি আকাশ আমি সাদা মেঘ
কখনও কাশবন.....
তুমি নীল আর আমি শুভ্র সাদায়..!
সেজেছি মনের অজানা দোলায়...
আমি দিচ্ছি সাড়া তোমার বাতাসে দোলে...
দেখছে দিগন্তে উড়ে যাওয়া পাখী
ভালোবাসায় আকাশ মধুর আলিঙ্গনে
মিশে যায় শ্বেতশুভ্র কাশবনে..!
তোমাতে আমাতে হাওয়ার স্পর্শ
মেঘ ফুলের খেলা চলে শরৎ জুড়ে...!
আকাশ তুমি শুভ্রই থেকো
মেঘ কালো আর নয়..!
শরৎ শুভ্রতায় কাটিয়ে দিবো
সারা জীবন হোক না শরৎ ময়...!
তোমার মন খারাপের বেলায়..
তুমি বৃষ্টি হবে, আকাশ তুমি আমায় ছুঁবে...!
আমি কাশফুল ভিজে লুটুপুটি
লাজে মরি মুখ তুলিনা...
উষ্ম ছোঁয়া দিও তুমি এক আকাশ হেসে...!
আমি আবার দোলবো দেখো...
লাজ শরমের মাথা খেয়ে
তোমায় ভালোবেসে...!
..........................................................................................................
অচেনা এক বৃষ্টিকে
মুস্তাফিজুর রহমান
চিঠি -১
ক
সেদিন একটু রোদ্দুরের জন্য
অপেক্ষা করতে করতে
সারা বেলা চলে গেল
ছেঁড়া ছেঁড়া কলাপাতা ।ফিঙেদের চেঁচামেচি
বার বার মনে করে দিচ্ছিল তোমার কথা
সেদিন তোমার জন্য
অপেক্ষা করতে করতে
ভেঙে গেল হাট
এক মাথা মেঘলা আকাশ
দুপুরের চুড়ুইটা উড়ছে
একবার এদিক একবার ওদিক -
লম্বা চালাঘর ।এক কোনে
ছেঁড়া চট উইপোকা আঁকা ক্যানভাস,
গরুর গাড়িগুলো এক এক করে
ফিরে গেল সব কোলাহল নিয়ে
তখনও আমি খুঁজে বেড়াচ্ছি তোমায়
- একটু একটু রোদ্দুর,
রাস্তা পার হয় কলো পিঁপড়ে সারি সারি ধূলোবালি ওড়ে, গুমোট বাতাস
ঘামে ভেজা সার্ট, অস্থির সার্টের বোতাম
তখনও আমি দাঁড়িয়ে রয়েছি
তোমার জন্য -
বটগাছের ঝুরি বেয়ে লতাপাতা হাঁটে
আনমোনা বনফুল সুগন্ধী
হঠাৎ কালো মেঘ জমে ওঠে পশ্চিমে
ঘন কালো মেঘ -
এবার বুঝি তোমার আসার সময় হল...
খ
ধীরে ধীরে বৃষ্টি নামল
এবার বুঝি নৌকা এসেছে ঘাটে
আর তুমি বাঁশ-বাগানের ঝিরিঝিরি
পেরিয়ে আসবে -
তোমার বৃষ্টি ভেজা চুলের খোপা
তোমার বৃষ্টি ভেজা হলুদ আঁচল
আমার মনে পড়ে যাচ্ছিল বার বার
সেই শিরিষ গাছেদের কথা
যারা তোমার বন্দীকরে রেখেছিল
এক ফালি রোদ্দুরে...
গ
বিকেলটা ঝিমিয়ে এলো
আকাশ মেখেছে গা-ভর্তি জাফরানি রং
সুনসান ফাঁকা রাস্তা
দেরি করে ফেরা পাখিরা দ্রুত ডানা ঝাপটায়
উড়ে যায় গাছে গাছে
নিজস্ব বাসায় ...
.........চিঠি - ২
স্পষ্ট একটা নীল চোখ কুড়িয়ে পেলাম
অনন্ত সূর্য রঙের টিপ
প্রচ্ছন্ন ধূলিধূসর মেঘ ঝরাপাতা
তোমার ঠোঁটে ছেঁড়া আধ্-ফোটা কুঁড়ি
বিস্বাদ অশ্রুময়-
শিশির বা শিশিরের মতো স্নিগ্ধ
এক নিবিড় অসম্পর্ক ভাঙা
যুদ্ধের পর যুদ্ধহীন
শরীরের ওপর পড়ে আছে স্তব্ধ রৌদ্দুর
বাতাসের বিপরীতে উড়িয়ে দিই ধূলো
সারি সারি প্রতীক্ষার সাঁঝবাতি জ্বলে
একটা সম্পূর্ণ চাঁদ বা চন্দ্রমুখী
ভিজে যায় রাতের পর রাত
জড়ো করা কিছু ম্লান ঋণ শোধ
আমি চিনি সেই সঠিক চুম্বন
বন্ধ আকাশের দ্বার কিংবা আকাশ বোধ ...
..........................................................................................................
অসহায়
শান্তা মরিয়ম
আর কতো প্রান গেলে শান্ত হবে দেশ?
আর কতো বাবা- মা হবে নিঃশেষ?
দেশ তোমায় ভালোবাসি প্রতিটি প্রেক্ষাপটে,
তোমায় নিয়ে দেখি কতো নানা কিছু রটে।
তোমার বুঝি দুঃখ দশা হবে না আর শেষ?
দুঃখে যেমন সুখেও তেমন তুমি প্রিয়ো দেশ।
পাক-বাহিনী মা বোনদের দেয়নি কোনো মান,
অনেক মা বোন নিজ জীবনের করলো অবসান।
দেশটাকে রক্ষায় কতো বোন হলো পতিতা,
কে দেবে সেই মা বোনদের হলো ক্ষতি যা।
সেই তো ছিলো মাতৃভূমি রক্ষা করার লড়াই,
এগুলোই তো ছিলো গর্ব এদেশেরি ছিলো বড়াই।
আজ তবে এ যুদ্ধ কিসের বুঝতে পারি না কিছু,
নারীরা কেনো হচ্ছে ভোগ্য নিচ্ছে পুরুষ পিছু।
দেশতো আমার হলো স্বাধীন সেই যে অনেক আগে,
নারীর শরীরর খেতে আজও পশুর ইচ্ছে বেশী জাগে।
ওরা কি তবে পাক-বাহিনীর রক্ত দিয়ে গড়া?
তাইতো ওরা আইন মানে না তাদের হয় না নড়া চড়া।
..........................................................................................................
" শরতের অবক্ষয়"
জেইনাল আবেদীন চৌধুরী,
শরতের অবক্ষয় সেতো কবেই হয়েছে!
যেদিন তোমাদের মেকি সভ্যতা তোমাদের গ্রাস করেছে,
আমি দেখেছি নদীর বুকে পাল তোলা নৌকার অবক্ষয়,
মাল্লার দাঁড় টানার ঝুপ ঝাঁপ সুরেলা শব্দের বিলীন ,
মাঁঝির কণ্ঠের ভাটিয়ালি গান হাড়িয়ে যাওয়া,
নদীর পার দিয়ে গুন টানা,
শরতের কাঁশফুল সেতো আজ কল্পনায় জং ধরারই সামীল
তোমাদের কথিত সভ্যতায় শুধু মেকিতে ভরা;
আন্তরিকতা, স্নেহ-মায়া মমতা ভালোবাসা আজ শব্দে বন্দী
ইংরেজিতে তোমরা বলো গিভ এন্ড টেক এখন তার ই জয় জয়কার
কতটা হৃদয় বিদারক, একবার ভেবে দেখো তো, মা-বাবার জন্য বানিয়েছো বৃদ্ধাশ্রম!
কতটা অবক্ষয় হলে এমন অমানবিক উন্নতি তোমাদের হতে পারে?
প্রকৃতির শোভা আর সৌন্দর্য্যের কবর দিয়ে রচনা করেছো আধুনিক শহর,
যেখানে নেই কোন প্রতিবেশী, ভালোবাসার মমত্ব, আছে দুটো শব্দ হায় আর হেলো
তোমরা আজ বুভুক্ষ, সব খেতে প্রস্তুত, অর্থ আর সম্পদের মোহে এক দৌড় প্রতিযোগিতায় দৌড়াচ্ছ ,
গন্তব্যের নেই কোন সীমানা, তাইতো তোমাদের শান্তির স্থলে সুখের প্রাচুর্য্য
পান্থা-ইলিশ আজ তোমরা ফ্যাশন করে খাও, যা ছিল বাঙালির প্রাণের খাবার
মুখে আছে বড় বড় বুলি, অসৎ পথে অর্থ আর সম্পদে করছো ভারী যার যার ঝুলি,
মনুষত্বকে বিসর্জন দিয়ে লাশের উপর হামাগুড়ি চলছো ছুটে মরীচিকার পিছনে ;
অর্থের মানদন্ডে যদিও তুমি ধনি, মনুষত্বের ম্যাপ কাঠিতে তুমি নর্দমার পঙ্কিল কীট
জাগাও তোমার ঘুমন্ত মানবতাকে, প্রকৃতির রূপে হয় যদি মুগ্ধ তাহলেই ফিরে পাবো শরতের মনোভিরাম সৌন্দর্য্য
স্বার্থক ও ধন্য হবে আমাদের জন্ম, মানুষরূপী পশুর হবে পরাজয়, মনুষত্বের হবে চির জয়
শরতের কাশফুলের শুভ্রতায় সব কালিমা যাবে ধুঁয়ে মুঁছে, তাই যেন হয় আগত শরত
মানুষ মানুষের জন্য, যবে হবে এমনটি, তবেই হবে মোদের মানব জীবন ধন্য
এসো আজ করি মোরা এই শপথ,
অন্যায়ের কাছে হবো না কভু নত।
..........................................................................................................
ভাবনার আকাশে সাদা মেঘ
আব্দুল বাসেত
অর্পিতা!
মধ্য আশ্বিনেও তোমার দেখা মেলেনি
বলেছিলে, ঈশানকোণে সাদা মেঘ জমা হবে
যেন তাবৎ সাদার মেলায় ভূপৃষ্ঠ মার্বেল
রঙে থৈ থৈ করবে......!
তারপরেই আচম্বিতেই তোমার আগমন ঘটবে
অনেকটা রাজসিক ভঙ্গীতে।
জানো অর্পিতা, আশ্বিনের প্রথম দিন থেকেই
ঈশানকোণে চাতকের মত আমার চেয়ে থাকা
না, অর্পিতা ভেবোনা হাল ছেড়ে দিয়েছি
অথবা তোমাকে মনে রাখার কোন দায় নেই,
সবই ঠিক আছে .........
এছাড়া আমার কিই বা করার আছে
আমি শুধু প্রতীক্ষা করতে পারি,
জেগে থাকতে পারি প্রহরের পর প্রহর।
তুমি ফিরলে একবার নৌবিহারে যাবো
কতদিন যাওয়া হয়নি বলো তো.....
জোছনা মেখে জোছনা রাতে ঠিক চলে যাবো।
এবারে কিন্তু তোমার কোলে মাথা রেখে শুয়ে পড়বো আর তুমি একের পর এক কবিতা, গান গেয়ে শুনাবে।
না, অর্পিতা তোমার কোন কথায়
এবার শুনবো না........!!!!!!
...........................................................................................................
অরুণিমার শরৎ আকাশে
রিলু রিয়াজ
অনেক প্রশ্নের উঁকি ঝুঁকি - মেলিনি উত্তর
না বলা কথা গুমড়ে কাঁদে বুকের ভেতর।
সাগরে বেঁধেছি শয্যা- অগনিত কান্নার ভিড়
লক্ষ্যবস্তু আমাতেই স্থির -বাঁকালে ধনুকের তীর।
নি:সঙ্গতার যাঁতাকলে হয়ে আছি জীর্ণ
খসড়াতে অভিন্ন আমি -পরিচ্ছন্নে ভিন্ন।
বিশ্বাসের বেড়ীবাঁধে সন্দেহ উপচে পড়ে
বিবর্ণ ক্ষতরা পৈশাচিক উল্লাসে ফেরে।
জীবনের রোজনামচায় কত কিছু বদলে যায়
তাই কি বদলে গেলে তুমি- বেলা অবেলায়?
অরুণিমার শরৎ আকাশ-আমি ভাসমান মেঘ
একাকি চলেছি হেঁটে- শিঁকে তুলেছি আবেগ।
..........................................................................................................
শরৎ
শক্তিপ্রসাদ ঘোষ
গ্রীষ্ম বর্ষার ধূসর অতীত
ছায়া নেমে আসে
শরৎ
উপাসনার ঝুলবারান্দা
জুড়ে
পাহাড়ের নীল মেঘ
ধূ-ধূ করে
শীতের ইশারা
মধ্যবয়সী মায়ের
জল তুলে রাখে
আলপনার
বটের মত বাবা
ছাতা খুলে রাখে
শিরোনামে পুজোর বার্তা।
..........................................................................................................
মানবতার বন্ধু
আসলাম প্রধান
হে পুরানো, গৌরবর্ণ
অট্টালিকা- বাড়ি
পাহারাতে, জড়সৈন্য-
রাজ্য-জমিদারি,
শত শত বর্ষব্যাপী-
সাক্ষী আজো তারি !
থেকো সাক্ষী-
আরো বহুকাল
রেখো ধরে
ইতিহাসের হাল ।
আছি লক্ষ-কোটি প্রজা
রাজা থেকে দূরে-
ঠিকানা কী ? অল্পস্বল্প
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কুঁড়ে
সর্বঘরে সুখ-দু:খ,
স্বপ্ন রাখা মুড়ে !
স্বপ্নগুলো
শক্ত-কঠিন, ইট-
দন্ত ভাঙে
উই-পতঙ্গ, কীট !
ছদ্মবেশি-স্বার্থান্বেষী-
তদ্দ্বারা শাসিত
কুশাসনে অস্থিমজ্জা
সর্বদা কম্পিত
শিরা-উপশিরা দ্রোহ-
রক্ত প্রবাহিত !
সামর্থ্য কার,
তুলে একটি হাত !
বে-ইনসাফে
করবে প্রতিবাদ!
বজ্রকণ্ঠে মহাবীর
ভাষণ দাগাল!
ঘুমন্ত বাঙালি, ডেকে
জাগাল, ওঠাল !
অনন্ত বৈষম্য, দৈন্য
দুর্দশা পাল্টাল !
কণ্ঠ'টি কার ?
নেতা শেখ মুজিব-
মানবতার
সজন সে, পার্থিব!
..........................................................................................................
আর্তনাদ
সাকিব জামান
লুকিয়ে আমি আমার মায়ের শাড়ির আচল তলে
মরতে আমি চাইনাকো ভাই বাচবো এ কৌশলে
আর কতকাল অনিরাপদ আমার মাতৃভূমি
রক্ষা করো ওগো মাবুদ রক্ষা করো তুমি ।
আমিতো ভাই দুগ্ধশিশু মায়ের কোলে থাকি
মায়ের আচল তলে শুয়ে নানান স্বপ্ন আঁকি।
বাবা কোথায় ? তাঁর সাথেতো হয়নি পরিচয়
কোন অভিমান নিয়ে তিনি করছেন অভিনয়!
বাবা বোধহয় বাজার থেকে আনবে নতুন গাড়ি
নয়তো পুতুল নতুন পোশাক নিয়ে ফিরবে বাড়ি।
অস্ফুটে কে বললো যেনো বাবাই আমার নাই
বাবা ছাড়া ভাললাগে কি বলতো কেমন হয় ?
বাবা নাকি সত্য পথে জিবন দিছেন ঢেলে
মাকে তিনি বলে গেছেন জিবন দিবে ছেলে
তবে কেন মায়ের কোলে আর লুকিয়ে থাকা
মুক্ত করতে মাতৃভূমি মায়ের আচল ফাকা ।
..........................................................................................................
শারদীয় রাতের মিছিল
গোলাম রব্বানী টুপুল
রাতের আকাশে হেলে শারদীয় চাঁদ
চারিদিকে নিজঝুম আঁধারের হাত
বন্দি নগরী আজ দিশে-কূল হারা
সুখহীন পাখি গুলো ভুলোমন সারা।
নদীর কিনারে দোলে কাশফুল শত
কতজন এসেছিল আজ তারা গত
ভোর ভোর পূবাকাশ লালিমা ফোটে
কোথা'হতে এলো পাখি সঙ্গী সে জোটে।
রাতের প্রহর ছিল রহস্যে ঘেরা
ঘুম-ঘোর বিছানায় স্বপ্নের ডেরা
জানালা গলে নামে জোসনার ঢল
এমন নিশীথ সখা সুখ বেনোজল।
..........................................................................................................
মুক্তিযুদ্ধের ফসল
অর্ণব আশিক
আমাকে জ্ঞান দিবেন না, নীতিবোধ শেখাবেন না
যেদিন হনুফার একমাত্র যুবা ছেলেটিকে রাজাকার ধরে নিয়ে গেল
হরিদাসির কিশোরী মেয়ে আলোমতি হলো ধর্ষিতা
কোথায় ছিল আপনাদের জ্ঞান নীতিবোধ?
অনেক দেখেছি, ৫২ ভাষা আন্দোলন,
৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০ এর জলোচ্ছাস-নির্বাচন; কী না দেখেছি।
শুনেছি নেতাদের উন্নয়নের কথা, দেখেছি স্বার্থের হানাহানি
শুধু ভোট পাওয়ার গলাবাজি, ক্ষমতা দখলের কারসাজি
দেখেছি ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ- হনুফা আজ নি:সন্তান, আলোমতি বদ্ধ উন্মাদ
রাজাকার কেরামত মুন্সী পতাকাবাহী গাড়ীতে চড়ে
দাড়োয়ান হযরত আলী বড় শিল্পপতি
মুক্তিযোদ্ধা কামাল শেখ হাসপাতালের ফ্লোরে ধুকছে
ঔষধের অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
রহিমদ্দি হাজরা চুয়াত্তর বছর বয়সে এক হাতে রিক্সা চালায়;
যুদ্ধে সে হারিয়েছে একটি হাত, দুটি জোয়ান ছেলে, স্ত্রী-যুবতি কন্যা
কোথায় ছিল সে সময় এই জ্ঞান, নীতিবোধ ?
স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পরও, রাত পোহালেই শুনি খুন জখম রাহাজানি গুমের খবর,
সাহসি সাংবাদিক সাগার-রুনিসহ অসংখ্য সাংবাদিকের খুন রহস্যাবৃত, বিচার নাই।
খুন হয় মুক্ত মনের মানুষ ড:হুমায়ুন আজাদ, অভিজিত রায়।
আমাকে জ্ঞান দিবেন না নীতিবোধ শেখাবেন না
আমি মানুষ, আমি বুঝি মানুষের মধ্যেই জ্ঞান আর নীতিবোধের অবস্থান
মানুষের মধ্যেই আমি আমার জ্ঞান আর নীতিবোধকে খুঁজি;
রাজনীতির নীতিকথা নয়,
স্বাধীনতার বিবর্ণ ছবি নয়
রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-জীবনানন্দ
আর শেখ মুজিবের সোনার বাংলা চাই।
..........................................................................................................
বিজয়ের চেতনা
মাহবুব আহমেদ
ষোলই ডিসেম্বর ঊনিশ'শ একাত্তর
একটি স্মরণীয় দিন।
এ দিনে হয়েছিলাম
আমরা শত্রুমুক্ত
চোখে ছিল সোনালী স্বপ্ন
স্বাধীনতার স্পর্শে ছিলাম বিমোহিত
ভেবেছিলাম
হাসি আর আনন্দে
ভরে উঠবে জীবন
সুদৃঢ় হবে প্রীতির বন্ধন।
কিন্তু কি হয়েছে?
হয়েছে মনুষ্যত্বের চরম অবক্ষয়
নৈতিক চরিত্র কলংকময়।
ফলশ্রুতিতে
হিংসা বিদ্বেষের রাজত্ব
জাতীয় সত্ত্বা ম্রিয়মাণ ।
তাই আসুন
নিঃস্বার্থ দীক্ষায় হই উজ্জীবিত
ছিনিয়ে আনি বিজয়ের
সেই দুর্লভ অমৃত।।
..........................................................................................................
শ্রেষ্ট অবদান
মোবাশ্বীর হোসাইন
রক্ত গেলো বিজয় এলো
গেলো কত প্রাণ,
তিরিশ লক্ষ শহীদানের
শ্রেষ্ট অবদান।
জীবন দেয়া নয়তো সহজ
রক্ত দিতেও চায়না,
দেশের জন্য জীবন দিলো
নেইতো কোনো বায়না।
মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে
দৌড়ে গেলো রণে,
সেই স্মৃতিটা দেয় যে নাড়া
আজো সবার মনে।
তারাই ছিলো বীর সাহসী
তুচ্ছ করে প্রাণ,
ইতিহাসে শ্রেষ্ট হলো
জীবন করে দান।
..........................................................................................................
বিজয় মিছিল
ওয়াহিদ আল হাসান
বছর ঘুরে ডিসেম্বরে
আসলে একটি দিন
ষোল তারিখ বীর বাঙালির
বাজে কানে বীণ।
বিজয় কেতন উড়লো যেদিন
মুক্ত বাতাসে
নতুন সুরুজ হাসলো সেদিন
পূবের আকাশে।
রক্ত নদী শেষে পেলাম
লাল সবুজের দাগ
মা হাসে বাবা হাসে
ভাঙছে বোনের রাগ।
বিজয় মিছিল হচ্ছে শুরু
আয়রে তোরা আয়
শিশুকিশোর দলে দলে
ডাক যে দিয়ে যায়।
..........................................................................................................
বিদ্যাসাগর- ফিরে দেখা দু’শ বছর
সবুজ সরকার (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত)
দু’শ বছর বড় কম সময় নয়
যে পথ ছিল মেঠো, শ্বাপদ সঙ্কুল
ঠ্যাঙ্গাড়েরা অপেক্ষায়, নতুন শিকার;
চৌরাস্তা নিয়ত ছোটে আজ নিয়ন আলোয়
অশান্ত, উদ্ভ্রান্ত মনে, হৃদয় বিকার ।
দু’শ বছর বড় কম সময় নয় ।
অজ্ঞতার মাইল ফলক ছোঁয় রুপকথা পরী
ক্ষীণ দেহ, আধ-পেটা ওজস্বী-মন,
অতিসাধারণ মাঝে যেন হীরক দ্যুতি
হে বাঙালী, তোমায় আজও বুঝতে না পারি ।
বড় কাজ আসলে একার,
যত বড় বাধা তত খিদে বাড়ে
পেছনে টানার শক্তি আজও পিছু নেয়
এখনো সময় আছে ফিরে এসো দ্বারে।
দু’শ বছর বড় কম সময় নয় !
..........................................................................................................
আমার কেউ নেই
সাহিদা রহমান মুন্নী
হিম হিম মৃদু মন্দ বাতাস মাঝে মধ্যে হীরক দানার মতো অল্প স্বল্প শিশির বিন্দু রুপালি নূপুর পায়ে আষ্টে জড়িয়ে ধরে---
শীতের আগাম বারতায় জমে যাচ্ছে মন কিবা স্বপ্নীল অনুভূতি- কিছুতেই স্বপ্ন ঘুড়ি উড়তে চাচ্ছে না গতিয়মান পৃথিবীর আকাশে---
শরীর থেকে চন্দন হলুদের গন্ধ শুকায়নি, মাত্র গাঢ়ত্ব পাচ্ছিল মেহেদীর রং, যৌবনের উষ্ণ নিঃশ্বাস প্রথম বারের মতো বুঝতে চাচ্ছিল শীতের কম্পন!
ঠিক তখনি মিলিটারি ট্যাংক নিয়ে শতশত বুট জুতার শব্দে, বুলেটের শব্দে চারিদিকে তীব্র মাতম শোনা যাচ্ছিল, বাঁচাও -বাঁচাও ছাড়ো ছেড়ে দে শয়তান!
থমকে গেলাম আমি, অনুভবে বিভোর বন্ধ চোখ খুলে শুধু একটিবার চেয়ে দেখলাম তোমায়, কি যেন বলবে তুমি, আমিও কোন কিছু না ভেবেই তোমার চরণ ধুলি নিতে নোয়ালাম শরীর বাড়ালাম হাত, ওমনি আজরাঈলের হুংকারে দুয়ার ভেঙে ছুটে এলো ১০/১২ জন, না ১৫/২০ জন, না-না ২৫/৩০ জন দানব চুলের মুঠি ধরে ছুড়ে ফেলল ফুলসজ্জার ফুলেল বিছানায় —চোখের সামনেই ডলে, মচলে কুচঁলে দিল তোমায় কুকুর বিড়ালের চেয়েও নির্মমভাবে! তোমার শরীর শীতল হবার আগেই হিম করেদিল আমায়,
আমার সবকিছু, সবকিছু! ভোতা অনুভূতি নিয়ে জীবন্ত লাশের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছি সেই ৭১ থেকে আজো,এখোনো প্রতিনিয়তই---চারিপাশের সব কিছু আজ বিবর্ণ হয়ে গেছে,সমাজ বর্জিত বিরাঙ্গনা আমি!
আজ পৌষের হিমহিম শীত আবার এসেছে,আমি শুধু সেই হিম হয়েই রয়ে গেলাম!চারিপাশে সবার সব আছে,সবই আছে, শুধু আমার কেউ নেই, কিচ্ছু নেই!লাল সবুজের তপ্ত আগুনে পোড়া জীবন্ত লাশ আমি, আমার কেউ নেই-----
কোন মন্তব্য নেই