Header Ads

কবিতায় জাগরণ (জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৪)

 



কবিতায় জাগরণ জুলাই-ডিসেম্বর ২০১৪

প্রচ্ছদঃ মানজুর মোহাম্মদ

মুদ্রণঃ খড়িমাটি

সম্পাদকঃ সাহিদা রহমান মুন্নী

মুল্যঃ ৬০ টাকা



সম্পাদকীয়


পথে নেমেছি,- কোনো ভয়, কোনো বাধায় থামবো না। এ প্রত্যয় দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর করেইআজ এই সম্পাদনার বিশাল যজ্ঞে অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়েছি। কালের বিবর্তনে যতই প্রতিকূলতাবাকরুদ্ধ করার পায়তারা করুক না কেন দমবো না, এগিয়ে যাব দীপ্ত পদক্ষেপে।


জাগাবো জাগরণ তুলবো নতুন যে কোনো সৃষ্টির।কবিত্বের কিংবা কবিতার জাগরণ হবেই আজ নতুবা আগামী কোনো এক মাহেন্দ্ৰ ক্ষণে।


“উম্মুক্ত হোক ছন্দের সীমানা”এই আশা ও বিশ্বাস আছে বলেই বেঁচে আছি।যারা কবিতায় জাগরণ-এ লেখা দিয়ে ঋদ্ধ করেছেন তাদের জানাই কৃতজ্ঞতা ।শান্তি-স্বস্তি আর নিরাপত্তায় থাকুক জীবনের সবটুকু সময়।


“উম্মুক্ত হোক ছন্দের সীমানা”

“জয় হোক মানবতার, জয় হোক কবিতার”



যাদের নিপুন লেখায় সাজানো এই সংখ্যাঃ


১. অনুপমা অপরাজিতা,

২. অমিত বড়ুয়া,

৩. অনিন্দ্য আলক,

৪. অর্জুন কুমার ধর

৫. আকতার হোসাইন,

৬. আখতারুল ইসলাম,

৭. আনন্দ মোহন রক্ষিত

৮. আবদুল্লাহ মজুমদার,

৯. আবুল কালাম বেলাল,

১০. আরিফ চৌধুরী

১১. আল মুজাহিদী,

১২. আলেক্স আলীম,

১৩. আহমেদ পলাশ

১৪. ইমরান হোসেন এমি,

১৫. উৎপলকান্তি বড়ুয়া,

১৬. এম. আর. মনজু

১৭. এম. হেলাল বিন ইলিয়াছ,

১৮. এস ইলিয়াস বাবর

১৯. এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা,

২০. ওমর কায়সার,

২১. ওয়াসীম হক

২২. করুণা আচার্য,

২৩. জসীম মেহবুব,

২৪. জহির খান,

২৫. জুয়েল মাহমুদ

২৬. জাসেদ আলম,

২৭. জাহানারা ইসলাম,

২৮. তনুজা বড়ুয়া

২৯. তহুরীন সবুর ডালিয়া,

৩০. দীপালী ভট্টাচার্য,

৩১. দেওয়ান আজিজ

৩২. নজরুল জাহান,

৩৩. নাজিমুদ্দীন শ্যামল,

৩৪. নাওশেবা সবিহ্ কবিতা

৩৫. নির্মলেন্দু গুণ,

৩৬. নীহার মোশারফ,

৩৭. ড. সৈয়দ রনো,

৩৮. প্রণয় কান্তি

৩৯. প্রাকৃতজ শামিমরুমি টিটন,

৪০. ফারুক মাহমুদ,

৪১. ফারুক হাসান

৪২. বদরুনেসা সাজু,

৪৩. বিদ্যুৎ দেব,

৪৪. বিপুল বড়ুয়া,

৪৫. বিপ্রতীপ অপু

৪৬. বিশ্বজিৎ বড়ুয়া,

৪৭. বিশ্বজিৎ সেন,

৪৮. মঈন মুরসালিন,

৪৯. মনিরুল মনির

৫০. মহাদেব সাহা,

৫১. মোহাম্মদ নুরুল আবসার,

৫২. মোহাম্মদ নূরুল হুদা

৫৩. মোহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ্,

৫৪. মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী,

৫৫. মানজুর মোহাম্মদ

৫৬. মাহীরাজ মোহাম্মদ,

৫৭. মিলন বনিক,

৫৮. মোঃ আলী সারওয়ার

৫৯. মোঃ হারুন অর রশিদ,

৬০. মোহাম্মদ ইলিয়াছ,

৬১. মোহাম্মদ মিজান উদ্দীন

৬২. মৃনালিনী চক্রবর্তী,

৬৩. রমজান আলী মামুন,

৬৪. রহমান লতিফ

৬৫. রহমান রনি,

৬৬. রাজীব শীল,

৬৭. রেজাউদ্দিন স্টালিন,

৬৮. লাভলু চক্রবর্তী

৬৯. লিলি হক,

৭০. লীনা রহমান,

৭১. লুৎফুন নাহার হাসি,

৭২. সনেট দেব

৭৩. সুমনা সুমি,

৭৪. সুলতানা নুরজাহান রোজী,

৭৫. সাঈদুল আরেফীন

৭৬. সাহিদা রহমান মুন্নী,

৭৭. সিতাংশু কর,

৭৮. সিমলা সুর

৭৯. শামীম খান যুবরাজ,

৮০. শাহানা জেসমিন,

৮১. শাহানারা রশীদ ঝরনা

৮২. শাহাবুদ্দীন নাগরী,

৮৩. শিবু কান্তি দাশ,

৮৪. হাবীব সাখায়েৎ

৮৫. হাশিম মিলন,

৮৬. হোসনে আরা আলম

৮৭. অনুবাদ কবিতাঃ উইলিয়াম ব্লাইক অনুবাদক : মোঃ শফিউল আজম




অনন্ত আরেকটিবার

✍️অনুপমা অপরাজিতা


বৈরী বিরোধ অবহেলা মাখা নিরাশাটিকে

ধূ ধূ নীল শূন্যতায় উড়িয়ে দিয়ে

ব্যক্তিক সীমাবদ্ধতা ছুঁড়ে ফেলে

মননের আর মেধার স্ফুলিঙ্গের

অণুতে অণুতে আরেকটিবার উজ্জীবিত হতে চাই।


নভোচারী মনটাকে তামাট প্রতারণার

হাত থেকে তুলে এনে স্নায়ুর শিরায় শিরায়।

চাষ করতে চাই অপরাজিত প্রেম।


প্লাবনের ভাঙনের জলোচ্ছ্বাসে উর্বর করে

তুলতে চাই আমার সমস্ত পোড়োভিটে।

তন্দ্রাচ্ছন্ন অমলিন স্বপ্নের ক্যানভাসটিকে

রাঙাতে চাই ঝলমলে আত্মপ্রকাশের তুলিতে।


দুঃস্বপ্নের মরীচিকাকে মাড়িয়ে

পটেড বিবর্ণ প্রহরগুলোয়।

অচেনা ইচ্ছের প্রলেপ চড়িয়ে

আমি সংক্রমিত হতে চাই বাউরি বাতাসে

মেধাশ্রমিকের হাতে হাত রেখে

বোধের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বপন করতে চাই

সুশোভন হৈমন্তিক মগ্নতা।

.............................................................................


স্বীকারাোক্তি

✍️অমিত বড়য়া


ভালবাসি ভালবাসি বলে আমি ফাটাই গলা

তুমি বললে, ছলচাতুরি সবই ছলাকলা

আমি বলি, তুমি আমার বেঁচে থাকার নাম

তুমি বললে, আমার চাওয়া নারীর শরীর কাম

আমি বলি, না না।


তুমি বললে, পুরুষলোকের অন্ধিসন্ধি

তোমার আছে জানা।

না না বলে যারা।

ভণ্ড কপট তারা

আমিও শেষে সত্যটাকে স্বীকার করে নিই।

শরীরটাই আসল বলে তর্কে ক্ষান্ত দিই।

.............................................................................


আপডেট

✍️অনিন্দ্য আলক


নতুন করে শুরু করবো সব

সমাজের সেই নতুন নতুন খেলা,

জীবনের এই ক্ষণিক গলিপথে ।

নতুনের হয় স্বাগতম সারাবেলা।


দুরন্ত মন হতাশ হয়ে যায়।

পুরানোরা সব ঘিরে থাকে মোর পাশে,

পুরাননাকে পথ ভেবে আমি সবকালে

নতুনের দিকে যাচ্ছি আজি হেঁটে ।


পুরানো খেলা, পুরানো সাথী, পুরনো সেই স্মৃতি

পুরানো হতাশা, পুরানো আনন্দ, ধুয়ে মুছে হোক প্রীতি।

নতুনের দিকে চলে যাবে সবে, আমিও হয়তো যাব।

নতুনেরে পেতে পুরাননাকে ভোলা তা কভু হবেনাকো।

.............................................................................


একটি নারীবাদী কবিতা

✍️অর্জুন কুমার ধর


সকল কিছুই করতে পারি, আমার যেমন ইচ্ছে হয়

তুমিও কিছু কর বটে, সবটা কিন্তু তোমার নয়।

ইচ্ছে মত ঘুরি আমি, যেথায় যেতে ইচ্ছে হয়

নিজের মত চলতে গেলে, তোমার শতেক বাধা রয় ।


ঠিক ততটাই স্বাধীন তুমি, আমি যেমন দেখতে চাই

পান থেকে চুন খসলে পরে শক্ত শেকল তোমার পায়

স্বাধীনছার স্বপ্ন তুমি ইচ্ছে যত দেখতে পার

পুরুষতান্ত্রিক সমাজটাতে নারীজাতি হীনতায়


নারীপুরুষ ভিন্ন এতে, যত বলি একাকার

নারীর মনে নিত্য থাকে সমান হওয়ার হাহাকার

যেদিন থেকে নারী নিজ থেকেই মুগ্ধ হবে।

সেদিন থেকেই নারী জাতি বাঁধন হতে মুক্তি পাবে

.............................................................................


পাপ

✍️আকতার হোসাইন


আমার অন্বিষ্ট পাপ।

গ্লানিময় সকাল দুপুর

ক্রাচে ভার ভগ্ন পৌরুষ।

তার দৌড় আর কতদূর !


কোটরে নরক জ্বলা চোখ

ঢেকে রাখে কালো সানগ্লাস

সুগন্ধি কি লুকোতে পারে

ফুসফুসের দুর্গন্ধ শ্বাস !


আমার পামরী খাওয়া ক্ষেত

শস্যের বিশীর্ণ কঙ্কাল

গোত্তা খায় টিয়াদের ঝাঁক

পাহারায় ক্রুদ্ধ পঙ্গপাল।


আমার স্বয়ংবর পাপ।

শয্যাসঙ্গি আমি আজ তার

তুমি যদি গঙ্গাজল হও

ডুব দেবো না জেনে সাঁতার ।

.............................................................................


অচেনা দুজন

✍️আখতারুল ইসলাম


আমি আঁধার আর তুমি আলো

অথবা তুমি আধার আমি আলো

পরস্পর খুঁজে পেতাম চিনতাম

এখন আমাদের ভিতরে বাহির

পুরোটাই অদ্ভুত এক অন্ধকার

চিনি না দেখিনা খুঁজি না

কাউকে কখোনো কেউ আর

দু’জনের চোখে একই আলো আঁধার

সৌন্দর্য ডুবে আলো আঁধারের মাঝে

তাই তুমিও দেখ না আমাকে

হয়তো আমিও দেখি না তোমাকে

এমনিতে অনন্তকাল হাঁটছি

দু’জনার দুটি পা পৌছায়নি

হৃদয় দুয়ারের চৌকাঠে

এ যেনো অপরিচয়ের দুঃসহ

আমি আঁধার আর তুমি আলো

অথবা তুমি আঁধার আমি আলো!

.............................................................................


ছাড়বো না এই দেশ, মা ও মাটি

✍️আনন্দ মোহন রক্ষিত


রাত জেগে বসে আছি

তারাগুলো ডাকছে ইশারায়

যেন কতোকালের পরিচিতজন

কতো জনমের আপন।


আমার অস্তিত্ব জুড়ে বিশাল শূন্যতা

স্বাধীনতা শব্দটির মানে, মনের ভেতর

সরব বিপ্লব, সাগরের ঢেউয়ের

মতো দিশেহারা পাগলা নাচন।


স্বাধীনতার বিয়াল্লিশ বছর পরও

কেন পরাজিত শত্রুরা শহীদ মিনার ভাঙে

প্রাণের পতাকা পোড়ায়;

কীসের স্পর্ধায় তারা হিন্দুদের

ঘরবাড়ি পোড়ায়, মন্দির ভাঙে

পূজোর প্রতিমা ভেঙে উল্লাস ছড়ায়?


তোমরা কি বোঝ না সংখ্যালঘু মানুষগুলোর

আহত প্রাণের হাহাকার, নীরব ক্রন্দন,

প্রতিকারহীন প্রতিবাদের ভাষা?

এটাতো একাত্তর নয়, নয় একানব্বই, বিরানব্বই

কিংবা দু'হাজার এক।


এবার ক্ষান্ত হও, নমিত করো সীমারের তরবারি

আর কতো প্রাণ চাও, দেবো, তবুও

ছাড়বো না এই দেশ, মা ও মাটি...।

.............................................................................


ভালোবাসার পদ্য

✍️আবদুল্লাহ মজুমদার


আমি তো ছিলাম-

তোমার খুব কাছাকাছি এখনো আছি

যেমনি তুমি চেয়েছো অথবা যেভাবে

সূর্যোদয়ের স্নাত ক্ষণ থেকে

সূর্যাস্তের অন্তিম লগ্নটি পর্যন্ত

স্বপ্নের দেয়ালে সুখের আলপনা একে

যেভাবে চেয়েছিলে; ঠিক সেভাবে...।


আমি তো আছি-

তোমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি

হৃদপিণ্ডের প্রচুর রক্তক্ষরণ নিয়ে।

ভালোবাসার পদ্য লিখে সারাক্ষণ

যেভাবে তুমি চাইছে; সেভাবেই...।


আমি থাকবো! হয়তোবা থাকবোনা

তোমার দু'নয়নের স্বপ্নের রঙিন প্রাসাদে

যেমনি ছিলে; আছে তেমনি নয়

স্বপ্নের প্রাসাদেও প্রতিটি বালুকণার সাথে

সহস্র জনম ধরে...।

.............................................................................


মুখে হাসি ফিক

✍️আলেক্স আলীম


তোমার চোখে চোখ রেখেছি

হাত রেখেছি হাতে

দিন কেটে যায় রাত কেটে যায়

সুখের ভাবনাতে।


তবু তুমি মাঝে মাঝে

চোখ করছো লাল।

একটু এদিক ওদিক হলে

ফুলিয়ে রাখো গাল।


ওসব কি আর মনে রাখি

ভালোবাসাই ঠিক

ভালোবাসার অত্যাচারে

মুখে হাসি ফিক!

বিচারপতি হাবিবুর রহমান

আবুল কালাম বেলাল


যে মানুষটি সত্য পূজক

সেই মানুষটি সুন্দর

সুন্দর সেই মানুষই হয়

মহৎ এবং গুণধর।


সবার কাছে বরণীয়

স্মরণীয় হন যে খুব

ব্যক্তিত্বে ঝিলিক ফোটে

অনন্য আদর্শ রূপ।


এমনতর সত্য পূজক

সুন্দরের পূজারী

বিচারপতি হাবিব ছিলেন

তারই ধ্বজাধারী।

.............................................................................


সুন্দরের দিকে

✍️আরিফ চৌধুরী


তোমার সৌন্দর্যের পূর্ণস্নান দেখতে গিয়ে।

নুলিয়া হবো আমি, সতত উজ্জ্বল নদীর জলে

তুমি তৃপ্তি মেটাবে অনাবৃত দেহের ছন্দে

ভেজা স্নানে জলকেলির খেলা শেষে

জলের শরীরে হেঁটে গেলে উঠোনে

বকুল বিছানো ছিলো যে পথে ।


তোমার শরীরে সুন্দরের ফুল ফুটে আছে।

শীতরাত্রিতে রক্তে জাগে যৌবনের দাবি

তবুও দিনরাত্রি করতলে ধরে আছি

অপেক্ষমান তোমার ডাকের আশ্বাস,

বুকের কাছে জাগে নির্জনতা

বিষন্ন কোলাহলে মাতাল প্রেমিক

বুকের গহীনে জ্বেলে রাখি অনল আয়ত।


এক নির্জনতায় তোমার ছায়া মূর্ত হয়ে উঠে

সন্ধ্যার সাথে অন্ধকারের মাখামাখি সময়ে

একবার ফিরে তাকালে দক্ষিণের জানালায়

দেখবে অনন্তকাল আমি হেঁটে বেড়াই

মানুষ যেভাবে পুড়ে

নিজ হাতে নিজেকে পোড়াই, তোমার ছায়ায়।

.............................................................................


অস্তিত্ববাদীর মৃত্তিকা দর্শন

✍️আল মুজাহিদী।


পৃথিবীর সব চেকপোস্ট আর সীমান্ত দেয়াল

দ্বিখণ্ডিত করে আমার আত্মার সপ্তর্ষিমণ্ডল।

সৌর মহাদেশ আর আমার পৃথিবী ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হতে থাকে।

আমি ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হতে থাকি- দ্রাঘিমার কতো ডিগ্রি

নিচে নির্বাসিত হতে থাকি: এ মৃত্তিকা উপত্যকা থেকে

নির্বাসিত হতে থাকি।


যদিও আমি এবং আমার আত্মসমগ্র আত্মার একক প্রগাঢ় রক্তিম জলবিন্দু

দ্যাখো, ধাতব যন্ত্রের মধ্যে কোনো হৃদয়-প্রমিতি নেই।

একটি ঈগল কতোবার বায়ুমণ্ডলকে দ্বিখণ্ডিত করে

কী রকম উল্টেপাল্টে দ্যাখে সুনীল দিগন্ত।


আমি মহাপৃথিবীর মাত্রাগ্রাম অতিক্রম করে সীমান্ত দেয়াল

পাড়ি দিয়ে ছুটে যাই রহস্যের সেরেনাদে, সংগীত প্রপাতে

হে সীমান্ত রেখা, দ্রাঘিমার কতো ডিগ্রি নিচে এখন দাঁড়িয়ে আছি

পানাম নগর থেকে হেঁটে যাই।


তোমার রহস্য নগরীতে মানুষের প্রাচীন স্বদেশে ফিরে আসি

অস্তিত্ববাদীর মতো ছিড়ে ফেলি সময়ের দেহের শেকল

সবার ভেতর আমি বেঁচে আছি। আমিও তোমার আত্মার কাছে।

চল যেতে চাই, সঁপে দিতে চাই আত্মার পারদপুঞ্জ

সত্তার সমগ্র বিভা। এই গ্রহে এই গৃহে এ সংসারে।


বড়োই দুর্ভিক্ষ এখন হে সময়, হে পার্থিব কাল

কেউ কোনো কিছু আর অপার্থিব রেখে যেতে পারি না আমরা।

আমদের সোনালী ঈগল উড়ে যায় যেন পৃথিবী অক্ষরেখায়

ভ্রাম্যমাণ জলীয় বুদ্বুদ এ মৃত্তিকা আমার সত্তায়

উজ্জীবিত করে গুল্মময় হরিৎ উদ্ভিদ।

.............................................................................


অভিমান

✍️আহমেদ পলাশ


এক সাথে চলতে

কিছু কথা বলতে

হয় শত ছল

তাই বলে ভালোবাসায়

ধরে কী ফাটল?


সবখানে জেদ আছে

আছে বহু রাগ

তাই বলে ভালোবাসা

করা যায় ভাগ?


সবখানে জড় উঠে

মনেও তো হয়

তাই বলে ভালোবাসা

দূরে দূরে রয়?


জানি ফিরে আসবে

ফের ভালোবাসবে

বাড়াবে দু’হাত

মিটিমিটি হাসাবে

ভালোবাসায় ভাসাবে

জাগাবে প্রভাত।

.............................................................................


প্রেমের ছন্দ

✍️ইমরান হোসেন এমি


বৃষ্টির ছন্দ আজ

করিতেছে খেলা

হোক না দু’জনার মিলনমেলা।

মায়াবী তোমার দুটি আঁখি

লজ্জা নিয়ে আমায় ডাকি ব

লল এসে চুপি

তোমার মিষ্টি চেহারা

বড্ড ভালোবাসি!

.............................................................................


তোমার ভোলা সেই জানালায়

✍️উৎপলকান্তি বড়ুয়া


তোমার খোলা জানলায় মোহন সুরের চির প্রথা আছে।

তোমার খোলা জানলায় আলোর দীপ্তি প্রসন্নতা আছে।

তোমার খোলা জানলায় রোদের সতেজতার ডানা আছে।

তোমার খোলা জানলায় চাঁদের মায়ার সুতো টানা আছে।


তোমার খোলা জানলায় মেঘের হালকা-জমাট মনও আছে।

তোমার খোলা জানলায় দখিনা হাওয়ার সম্ভাষণও আছে

তোমার খোলা জানলায় আদর স্বপ্নের অবাধ ছোটা আছে

তোমার খোলা জানলায় উদার টবেতে ফুল ফোটা আছে।


তোমার খোলা জানলায় আছে বিশাল আকাশ সাগর তাও

লোমার ভোলা জানলায় আমার প্রবেশাধিকারতে দাও।

.............................................................................


কেমন আছো

✍️এম. আর. মনজু


কাঠ ফাটা রোদের তাপদাহ গরমে

ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির

বিষন্ন শুকনো পাতায়


পথিকের পথ চলা মর্মর শব্দ

শালবনে মহুয়ার গুঞ্জনে কেমন আছ পথিক।

মানুষের উরুমন- আর প্রিয়তমা কেমন আছ তুমি?


ভালো কি তোমার মন?

আমি তো তৃষ্ণার্ত কাক

অনাবৃষ্টির দাহে জলে পুড়ে হই থাক।

.............................................................................


তোমার জন্য অপেক্ষা

✍️এম. হেলাল বিন ইলিয়াছ


বহু দিনের পরে তোমার হাতে হাত রেখেছি,

ভালবাসার বন্ধনে- স্বপ্নের বিনির্মাণে।

বধু সেজেছ, আজি এসেছো বরণ্য পথে

কুচকাওয়াজে এ ঘর, ঐ ঘরে

হাসছে সবাই সুখের নীলিমাতে।

তুমি আমার আত্মার আত্মীয় হবে

ভালবাসার রঙ ছড়াবে।


পুলকিত মনে আছে যত প্রেম, যত ভালবাসা

সবি উৎসর্গ তোমাকে বিয়ের প্রীতি বাঁধনে।

অতীতকে ভুলে নতুনত্বের বন্ধনে

ঝগড়া নয়- মীমাংসা সমঝোতা দুজনে

রাগ নয়- থেকো না অভিমানে।

প্রজ্জ্বলিত স্বপ্নকে আলোকিত করতে

অপেক্ষায় আছি তোমার...।

.............................................................................


ভালোবাসার দেনা

✍️এস ইলিয়াস বাবর


ভালোবাসি বলেই এখন বেড়ে গেল দেনা

কেমনে বলো বিকিয়ে দেব এমন সাধের কেনা।


নতুন পথের পালে এবার লাগছে বিষম হাওয়া

তাইতো স্বপন ছুটে চলে অসমতার পাওয়া।


সব ছুটেছে ঐ মোহনায় করো না কেউ দেরি

আনন্দ আর উল্লাসেতে ধরছে খুশির ফেরি।


ভালোবাসি বলেই এখন বেড়ে গেছে দেনা

মুক্ত পাখি ভুল করেনা পথটি আছে চেনা।

.............................................................................


মাঝে মাঝে

✍️এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা


মাঝে মাঝে মনে হয়

এই পৃথিবীর সব ভালো

তোমার মাঝে অবগাহন করে আছে

নক্ষত্রের উজ্জ্বল আলো।

যদিও উদাসীনতার শাণিত ছুরিতে


দ্বিখণ্ডিত আমার অন্তর

প্রায়ই কাঁদে মন প্রাণ

তবু মনে হয়

এই পৃথিবীর সব ভালো।


মাঝে মাঝে মনে হয়।

এই পৃথিবীর সব ভালো

আমার আশেপাশের মানুষগুলোর


মন নয় কাজল-কালো

যদিও তারা আমাকে

ক্ষত-বিক্ষত করে

রসনার ধারালো অস্ত্রে

কথার বিষাক্ত ছোবলে

তবু মনে হয় এই পৃথিবীর সব ভালো।


মাঝে মাঝে মনে হয়।

এই পৃথিবীর সব ভালো

যদিও পরিচিত মানুষগুলো


সুক্ষ্ম জাল বোনে

আমাকে বন্দী করে

সীমাহীন কষ্টের কারাগারে

তবু মনে হয় এই পৃথিবীর সব ভালো।

.............................................................................


দেবীর প্রার্থনা

✍️ওমর কায়সার


আরাধ্য তোর ছিলাম আমি

নিয়েছি সব আরাধনা

মহাকালের নিয়ম ভেঙে

তোর কাছে আজ এ প্রার্থনা।


বাগানে আর যাসনে ভোরে

ফুল দিয়ে আর কিছু হবে?

পোড়ার গন্ধ যায় না ঢাকা

পাপড়িগুলোর সে সৌরভে।


ঘরপোড়া ছাই পূজার অর্ঘ্য

বাসন্তি তোর অঞ্জলিতে।

বিলাপমাখা কণ্ঠে কি তুই

মনের মন্ত্র পারবি দিতে?


আমার না হয় মাটির শরীর

অচল থাকি বাক্যহারা

তোর তো আছে উষ্ণস্রোতের

টগবগে ওই রক্তধারা।


নিভিয়ে দিতে পারিসনি তুই

অগ্নিশিখা চোখের জলে

কুরুক্ষেত্রে অসম এই

যুদ্ধ হলো কী কৌশলে !


মন্দিরে তুই আসিস নে আর

পুণ্য পেতে শূন্য মনে

পূজার পর্ব আগুন খেলায়

সাঙ্গ হলো বিসর্জনে।

.............................................................................


ওসব কথা থাকনা এখন

✍️ওয়াসীম হক


ওসব কথা থাকনা এখন অন্য কিছু বলি

সময় হলে ফুটবে গোলাপ আজকে না হয় কলি

তাড়াহুড়ো নেইতো কিছু বন্ধু চলো ধীরে

সঁঝের আগে ফিরবে পাখি আপন আলোর নীড়ে


আকাশ ভরা তারার মেলা মিষ্টি চাঁদের হাসি

বলার তো আজ নেই প্রয়োজন তোমায় ভালোবাসি

অন্ধকারে খুঁজে পেলাম বন্ধ চোরাগলি।

ওসব কথা থাকনা এখন অন্য কথা বলি।

.............................................................................


দুষ্ট মিষ্টি কৈশোর

✍️করুণা আচার্য


আবেগে টলমল, দুরন্ত কৈশোর

অবিরাম ছুটে চলে ক্লান্তিহীন,

উল্লাসে কাটে দিন তাড়ে নাড়ে বাজে বীন

সাজ সাজ ধুমধাম কলোরব।

যেন এক টলটলে সমুদ্র,

বারিধারা কলকলে অমলিন।


এই যেন নিশ্চপ, এই যেন হৈ হৈ,

এই যেন চঞ্চল এই যেন অপরূপ।

ফুটে ফুল লাল নীল স্বপ্নের নীলিমায়

চোখে মুখে অবিরাম আনন্দ খিলবিল।


বন্ধ রয়না সে জানালায় উঁকি মারে

যেন এক কালবৈশাখী ঝঞা

আকাশ-পাতাল ভেদ করে যেতে চাই শূন্যে উড়ে

দুর্গম মরু মনে হয় যেন এক বিন্দু ছায়া

আসিবে নিমিষেই ঘুরে।


ধরণীর গতি হয় নাকো ক্ষয়

দৈত্য দানোয় নেই কোনো ভয়

যেন এক প্রকাণ্ড বীর

বিশ্ব করিবে জয়।

প্রেমের তাজমহল

জসীম মেহবুব


ভালবাসার অথই জলে ঝাঁপ দিয়েছি প্রিয়া,

তুমি আমার হলুদ বরণ পঙ্খি হলুদিয়া ।

হলুদ বরণ ডানার নিচে কুসুম কুসুম উম,

জনম জনম দেয় আমাকে ভালবাসার ঘুম।


সে ঘুম আমার নাইবা ভাঙুক, নেই অনুতাপ তাতে,

বুকের তাপে ঘুমিয়ে যাবো হারিয়ে যাবো রাতে।

কী প্রয়োজন রাত পোহাবার? আঁধার লাগে ভালো,


তোমার আমার হৃদয়জুড়ে জ্বালবো প্রেমের আলো।

রাতের কালো নদীর ধারা বইবে ছলাৎছল,

তোমার জন্য গড়বো আমি প্রেমের তাজমহল।

.............................................................................


ইচ্ছে করেই

✍️জহির খান


ইচ্ছে করেই জলের সাথে

আগুনের সহবাস

ইচ্ছে করেই আগুনের সাথে

জলের সহবাস


এই শহর প্রেমের শহর

আগুনের সাথে জলের প্রেম

এই শহর ধুলোবৃষ্টির শহর।

জলের সাথে আগুনের প্রেম


শহরের অলিগলি জানে

রক্তজবার গোপন মায়া।

কতশত চোখের টানে

জলের উপর আগুনের ছায়া

.............................................................................


এইবার আমি তোমারে লইয়া ঘর করুম

✍️জুয়েল মাহমুদ


এইবার আমি তোমারে লইয়া ঘর করুম।

পর করুম আমারে,

চর জাগছে জানো না…

বুকের মধ্যে চর জাগছে…


সেই চরে ভিটা করুম ছিটামু আদর…

চাদর বিছামু মায়ায়

ছায়ায় বইসা পান্তা খামু


আর পলি মাখা জমিনে আগামী দেখুম

বাদামী রং ধরামু ঠোটে

জোটে যদি আরো তোমার স্বাধীনতা…

.............................................................................


অদম মানবতা

✍️জাসেদ আলম


দূর ভাগ্যের পরিক্রমা

টাকা শব্দ আমার সাথে

কোনো ভাবে মিলে না।

মন শব্দ খোঁজে

মমতাময়ী মা।


উচ্চারণটা বার-বার শিখছি

উষ্ণায়ন প্রভাব বেশি

সময়ে থাকতে পারে না।

দিনের স্বপ্ন চোখ

উঠিয়ে কথা বলে

রাতের স্বপ্ন চোখ

জুড়িয়ে বৃষ্টি ঝরে।


তাতে ও ক্লান্ত নয়।

অদম মানবতার নেই

ব্যাঙ্ক ব্যালান্স নেই ।

গোলাবর্তী আশ্চর্য বোধক!


আমি আছি, শব্দ আছে,

আর আমার মুখের ঠোট

টা উচ্চ সুরে শব্দ করছে।

.............................................................................


চৈত্রের দুপুর

✍️জাহানারা ইসলাম


চৈত্রের দুপুর

উদাস মন

খা খা প্রান্তর।

ডাল হতে ডালে

শাখায় প্রশাখায়

ক্লান্ত পাখিকুল।

বসে বসে ঝিমোয়।

মাঠ ঘাট শুন্য খা খা

জনমানব নেই কোথাও।

পথ প্রান্তরে মরীচিকার ঝিলিমিলি ।


দাদুর হাতের পাখা

বৃথাই নড়ে চড়ে

গরমে হাঁস ফাঁস

প্রাণ করে আঁই টাই।

এমন সময় কনে ডেসে আসে

কোকিলের কুহু কুহু তান

আকুল হয়ে ডেকে চলে

প্রাণ সখি তায়।


নিঃসঙ্গ চিল আকাশে গোত্তা খায়।

তীব্র কণ্ঠে চেঁচিয়ে প্রতিবাদ জানায়।

চাতকের মত আমি ভাবি

এক পশলা বৃষ্টি আসুক।

নেমে ধরনীর বুকে।

শান্ত স্নিগ্ধ হোক চরাচর

শান্তির বারি সিঞ্চনে।

হোক পুত পবিত্র এই

জীবকুলের আবাস ভুমি ।

.............................................................................


তুমি চলে এসো এক বরষায়

✍️তনুজা বড়ুয়া


আমার শহরে মেঘ গর্জন

প্রস্তুতি- অকাল বর্ষণ,

হিমেল স্পর্শে তুমিময় এক প্রেমের চিঠি,

আঙুল বুলিয়ে অক্ষরগুলো আমি পরখ করি,

চুম্বনগুলো মেখে নেই আঁখি পল্লবে

বেদনার কিছু অংশ তার কাছেই বন্দি থাক!

আমার শহরে বৃষ্টি হবে

ঋণ আছে শত চিঠির।


সূর্য লুকোচুরির আড়াল

ঘোলাটে আকাশে আমিও চিঠি লিখি

তুমি চলে এসো এক বরষায়

.............................................................................


বাঁক

✍️তহুরীন সবুর ডালিয়া


গোপন ক্ষরণ হয়ে কেন এসে

দাঁড়াও সম্মুখে?-।

আমি ভুলেছি মন্বন্তর, জলোচ্ছ্বাস।

প্রিয়মুখ হারানোর রক্তাপুত স্মৃতি

ভুলেছি সন্তের শূন্যতা।

এখন লবণাক্ত কালো মাটিতে

ফুটেছে আবার রৌদ্র-আশা,

শিল্প সঞ্চরণ, সৃজন অনাদি।

এখন জেগেছে আবার নতুন

প্রেম সম্ভাবনা

চোখের শিরায় জেগেছে

হিরন্ময় স্বপ্ন নিলয়।

বেদনাবোধের যাতনা সর্ব শরীরে।

তবু হৃদয়ে আমার শান্তির অন্বেষা।

বেগবতী নদীরও থাকে বহু বাঁক।

.............................................................................


ভালোবাসা কেবলি আশা

✍️দীপালী ভট্টাচার্য


ভালোবাসা কি বীজগণিতের

কোন সূত্র

ভালোবাসা কি ব্যাকরণের

কোন নিয়ম।

ভালোবাসা কি ইতিহাসের

কোন ঘটনা।

ভালোবাসা কি তথ্য প্রযুক্তির

কোন নিয়ামক

ভালোবাসা নিয়ে ভাবি আর

করি আশা

এর নাম ভালোবাসা।

এর নাম স্বপ্ন আশা

হৃদয়ের অ্যালবামে আঁকা

এক বরষা।

যা বারে পড়ে

মেঘলা আকাশ মুক্ত করতে

পারে অথবা যার।

কালো মেঘ কখনো কখনো

পরিষ্কার আকাশ

আর মেঘলাও করে

দিতে পারে

ভালোবাসা তাই

ভাবতে ভাবতে

বুঝতে বুঝতে

বারবার তার কাছে কেবলি আশা।

.............................................................................


করছি ভীষণ ভুল

✍️দেওয়ান আজিজ


তোমার সাথে প্রেম করে আজ

আমার সর্বনাশ।

তুমি আমায় প্রেমের ছলে।

দিলে গলায় ফাঁস


আমি হলাম গোবেচারা

ভাবছি তোমায় আপন

তোমার সাথে ইচ্ছে ছিলো

করব জীবন যাপন


আমার যতো টাকাকড়ি

সব তুমি আজ গিলে

আইসক্রিমের কাঠির মতো

আমায় ছুঁয়ে দিলে


তোমার মুখে মেকি হাসি

বুকে বিষের হুল

তোমার প্রেমে পরে আমি

করছি ভীষণ ভুল।

.............................................................................


যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাও

✍️নজরুল জাহান 


এ জীবনে কোনো ক্ষতি নেই 

যদি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাও 

শুধু মনে রেখো। 

দিন-রাত্রির কোনো ফাঁকে 

ভুলে থেকো, পরের বার মনে করো 

আবার ভুলে থেকো, আবার মনে করো

এভাবেই সম্ভব অনন্তকাল মনে রাখা 

এর চেয়ে বেশি কিছু চাই না।


তুমি সময়ের প্রাচীরের ভেতর 

আমি প্রাচীরের বাইরে নই। 

আকাশটাকে দেখলে বুঝবে, 

ওটা আমাদের প্রাচীরের মধ্যে আটকে রেখেছে, 

ও কখনোই আমাদের মুক্তি দেবে না। 

আর আমরাও পরস্পর থেকে দুরে যেতে পারি না।

.............................................................................


স্বপ্ন দেখার কথকতা

✍️নাজিমুদ্দীন শ্যামল

 

এক অদ্ভুত সুন্দর স্বপ্ন দেখব বলে। 

খুব তাড়াতাড়ি রাতের আহার সেরে 

ঘমিয়ে পড়েছিলাম। 

আহা! স্বপ্ন দেখার আগেই 

ঘুমের মাঝে মৃত্যু এসে দরজায় কড়া নাড়লো; 

তারপর দরজা খুলে তার সাথে বেরিয়ে দেখি । 

ঘুটঘুটে অন্ধকার চারিদিকে। 

গাছের পাতাগুলো সবুজ, কিন্তু কালো। 

অনুমানে পা পড়লেও পথ বেশ খানিকটা এগিয়ে গেলো। 

দরজা খুলে তাহার সাথে গেলেও 

পথের প্রান্তে ভীষণ আমার একা লাগলো; 

তবুও আমি একা একা আশা করি 

স্বপ্নটা আমি দেখবোই একদিন। 

কিন্তু কেউ বিশ্বাস করে না যে, 

খুব তাড়াতাড়ি সব কাজ শেষে ঘুমালেও 

আমরা স্বপ্ন দেখতে পারি 

কেন না, স্বপ্ন দেখার আগেই তো 

ঘুমের মাঝে কেউ এসে আমাদের 

ডেকে নিয়ে যায় প্রতিবার। 

ফলে আমাদের স্বপ্ন দেখাটা। 

অনিশ্চিত হয়ে পড়ে অনন্তবার।

.............................................................................


প্রেম বুঝিনা

✍️নাওশেবা সবিহু কবিতা


প্রেম ট্রেম বুঝিনা 

ভালোবাসা খুঁজিনা 

ভালোবেসে খাবি খায় 

যার প্রেম যায় যায়

ভালোবেসে কি হবে 

ভালোবাসা থাক তবে !

.............................................................................


আবার যখনই দেখা হবে

✍️নির্মলেন্দু গুণ 


আবার যখনই দেখা হবে। আমি প্রথম সুযোগেই 

বলে দেব স্ট্রেটকাট ‘ভালবাসি'। 

এ রকম সত্য ভাষণে যদি কেঁপে ওঠে, 

অথবা ঠোটের কাছে উচ্চারিত শব্দ থেমে যায়, 

আমি নবাগ্রে দেখাবো প্রেম। ভালাবাসা, বক্ষ চিরে 

তোমার প্রতিমা, দেয়ালে টাঙানো কোন প্রথাসিদ্ধ । 

দেবীচিত্র নয়, রক্তের ফ্রেমে বাঁধা হৃদয়ের কাচে। 

দেখবে নিজের মুখে ভালবাসা ছায়া ফেলিয়াছে, 

এরকম উন্মোচনে যদি তুমি অনুরাগে মুছা যেতে চাও 

মুছা যাবে, জাগাবো না, নিজের শরীর দিয়ে কফিন বানাবো, 

ভালবাসি বলে দেব স্ট্রেটকাট, আবার যখন দেখা হবে।

.............................................................................


একুশ শতকের কবিতা

✍️নীহার মোশারফ 


ঠিক এভাবেই চলে যায় সময় আমাদের। 

সময় যেন এক বৃদ্ধ যাযাবর। 

ঘুরে দেখে সে পৃথিবীর পথ। 

এতটুকু তড় সয় না। সুখ সয় না। 

সয় না ঠোটের কোণে দেখা চিরায়ত হাসি। 

সময়ের দু'চোখে আজ অসহ্য কান্না ভাসে, 

ক্ষুধার্ত মানুষের চিৎকার ভাসে হাওয়ায় হাওয়ায়...। 


ওড়ে যন্ত্রণার পাখিদের খসে পড়া পালক। 

সত্যিই সময় যেন ক্ষণিকের অতিথি হয়ে ঘুরে বেড়ায় চারপাশ। 

দেখে ব্যাবিলনের নিঃশেষ উদ্যান, বিষন্ন নগর, 

পোড় খাওয়া মানুষের প্রতিচ্ছবি। 

এখনও কি শোষকেরা রক্ত চুষবে 

খেটে খাওয়া মানুষের? 

আর কত রক্ত ঝরাবে ওরা সভ্যতার বুক থেকে? 

ছুড়ে দেবে কেমন সনাতন বিশ্বাস? 

তবে কি এখনও কুচক্রের আদলেই বাঁচতে হবে 

একুশ শতকের নবজাতকদের? 

নায়াগ্রার জল কী সুপেয় হবে না আর? 

টোকিও শহরে কী আর জ্বলবে না ঝলমলে রাতের বাতি? 

এমন ভাবনায় কেঁদে ওঠে নিশিজাগা দুখিঅন্ধকার । 

জেগে ওঠে দূর রাতের এক চিলতে ব্যথা। 

দাউ দাউ বুকের আগুন...।

.............................................................................


নারী

✍️ড. সৈয়দ রনো 


আকাশের অফুরন্ত আঙিনায় 

ঘুরে ফিরে নারী মান। 

কখনো কোমল কখনো কঠিন। 

আবার কখনো কখনো ছন্দহীন।


প্রকৃতির শ্রেষ্ঠ অলঙ্কার। 

সভ্য সমাজের হাতেখড়ি 

প্রকৃতির রূপে মিশে 

ভিন্ন ভিন্ন রূপ ধরে নারী 

অশান্ত উচ্ছঙ্খলে দলে পিষে 

নিঃশেষ করে। 

রক্তে উন্মাদনার নেশা ছড়ায় 

ধ্বংসের বীজ বোনে।


আত্ম-অহমিকায় গর্বিত নারী 

বড়ত্বের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। 

জন্ম দেয় সোহাগ দেয়। 

মায়ার জালে আবদ্ধ করে।


মমতায় আটকে পড়ে নারী 

বিবেকের তাড়নায় রঙিন স্বপ্ন দেখে। 

তবু ছলনার কমতি নেই। 

পদভারে অশান্ত হয় পৃথিবী।


মানুষের গুণ বিচারে 

এগিয়ে নারী। 

ধ্বংস করে সৃষ্টি করে।

স্বপ্ন দেখায় স্বেচ্ছাচারী হয়ে 

প্রকৃতিকে বিনষ্ট করে।

.............................................................................


বদলে দেব তাসের দেশ

✍️প্রণয় কান্তি 


এ তো দেশ নয়। 

এ দেখি আজব গবেষণাগার বেহেশতে যাবার 

এখানে দেখছি নেই ব্যক্তির কোনো ইচ্ছে। 

আছে কঠিন সেই নিয়ম তাসের দেশের মতো 

এদের শিশুরা তাই বেহেশতেই যায়। 

পারে না যেতে মহাকাশে কিংবা আলোর সকাশে

পারে হতে বিজ্ঞানী কি মানবতা-সন্ধানী। 

পারবে কি কখনো যদি বেড়ে ওঠে শিশু 

এ কুশিক্ষার কারাগারে? 


বড় অদ্ভুত তাদের শিক্ষণ... 

শিশুদের তারা কখনো শেখায় পৃথিবীটা গোল আর ঘূর্ণমান 

আবার শেখায় সে পৃথিবীই স্থির আর সমতল বেহেশতি কিতাবে 

এ শিক্ষার ফলাফল তাই ঘোড়ার ডিমের মতো 

এভাবেই হয়ে থাকে মেধার সমূহ বিনাশ 

আর পরিণামে হয় দেশের সর্বনাশ


তোমরা কারা থাকো এ সিংহাসনে পরম্পরায় 

বদলাবে কি এ তাসের দেশ 

দেবে কি ব্যক্তিকে প্রকৃত স্বাধীনতা। 

আনবে কি যথার্থ ধর্মনিরপেক্ষতা 

অবিকল্প বিজ্ঞানমুখী শিক্ষাব্যবস্থা 

আর নারী-পুরুষের পূর্ণ অধিকার-সাম্য 

যা প্রগতির অন্যতম কাম্য


জানি করবে না পরিবর্তন কোনো 

তোমরা ক্ষমতালোভী 

তবে শোনো 

আমি তাসের দেশে আসা সেই আগন্তুক 

বাঁশি বাজিয়ে নাড়িয়ে দেব শিশুদের মন 

বদলে দেব ওদের 

ওরাই শেষে বদলাবে দেশ


অচেনা-অজানা বলে আমায় কোরো না হেলা 

শিশুদের আমি মুক্ত করবোই

মেঘে মেঘে হয়ে গেল অনেক বেলা।

.............................................................................


দেশটা আমার কষ্টে আছে

✍️প্রাকৃতজ শামিমরুমি টিটন

 

আমি কিছু ক্ষুধার্থ দেখি

বুকে কষ্ট জাগে। 

কিছু দুর্নীতিবাজ দেখি। 

বুকে কষ্ট বাড়ে, 

কিছু মানুষখেকো দেখি 

হৃদয় (আমার) কষ্টে মরে!


তারা ক্ষুধার্থের অন্ন খেয়েছে, 

দেখে নি ক্ষুধার্থ: 

দুঃখু মিয়ার সব কেড়েছে। 

জানে না দুখু 

তারা আমার দেশ খেয়েছে, 

কেঁদেছে (আমার) দেশ।


আমি কিছু নষ্টমনের মানুষ দেখি

দেশকে নিয়ে প্রেম খেলে; 

ফাকা কথার খৈ ফুটায়, 

নীতি দেখায় প্রেমের ছলে। 

জীবন গেছে মরেছে সে 

পাক ধরেছে চুলে, 

দুর্নীতিতে প্রেম খেয়েছে। 

দেশ মরেছে শেষে; 

রাজার খেলা, খেলে জুয়া 

দাবাড় সে সাজে, 

বেজায় চলে কাত করেছে। 

যোলো কোটি কাঁদে!


আমি কিছু ধূসর-মেটো মানুষ দেখি

নিত্যকাজে চিত্ত বিকায়; 

দেশের সুখে জীবব্রতে, 

শ্যামল বুকে কষ্ট ঝরায়; 

দেশপ্রেমেরই সাধক তারা, 

আদিম ধরায় ফসল ফলায়!


আমি কিছু সফেদ-সাদা মানুষ দেখি

জীবনপ্রাতে সত্যব্রতে; 

বড়-চাকরি মোটা ভাতে 

নিত্য আয়ে দিন কাটায়, 

বিত্ত পুড়ে কষ্ট করে 

চিত্তসুখে কষ্ট ঝরায়!


কদিন বল বাঁচা যে যায় 

কষ্টটারে কষ্ট দিয়ে? 

ভ্রষ্ট পথে নষ্ট সুখে 

কষ্টটারে বোঝে নি কেউ; 

কষ্টটা যে আসছে ধেয়ে। 

দেখে নি কেউ কষ্টটারে;


ধুকেধুকে কাঁদছে যে দেশ। 

দেশমাতারই কষ্ট বুকে, 

মায়ের কান্না উঠছে ফুসে 

কষ্টটা যে বাড়ছে ক্রমে, 

কদিন তুমি বাঁচবে বল  

দেশমাতারে কষ্ট দিয়ে? 

তার চেয়ে কি হয়না ভালো। 

কষ্টটারে বুকে ধরি, 

যেমন করে দেশপ্রেমীকে 

কষ্ট করে দেশ গড়েছে, 

দেশমাতারে ভালোবেসে 

কষ্ট নিয়ে সুখে মরে!


চলোরে ভাই যুদ্ধে নামি 

দেশটা আমার কষ্টে আছে; 

সবার সুখে কস্ট করি, 

সবার মুখে দেখব হাসি; 

কষ্টে আছে দেশটা আমার 

যুদ্ধে নামি চললারে ভাই।

.............................................................................


তুমি আমার

✍️ফারুক মাহমুদ 


তুমি আমার... 

জীবন স্পন্দন হৃদয় হরণকারী মৌমিতা 

তুমি আমার... 

রবীন্দ্রনাথের শেষের কবিতা। 

তুমি আমার...  

মধুসূদনের সনেট কবিতার দ্বিতীয় ধারা 

তুমি আমার... 

হৃদয়গ্রাহী প্রেম উপখ্যান বীরজারা। 

তুমি আমার... 

একুশের প্রথম প্রহর প্রভাত ফেরী 

তুমি আমার... 

হৃদয় আকাশে দোদুল্যমান স্বপ্নচারী। 

তুমি আমার... 

জাতীয় সংগীতের দ্বিতীয় চরণ 

তুমি আমার... 

সোনায় সোহাগ মনমাতানো বর্ষবরণ।

.............................................................................


চোখ

✍️ফারুক হাসান 


তুমি যখন রক্তচক্ষুকে মেলে 

আমাকে ভয় দেখাও। 

তোমার আনত দৃষ্টি তখন 

অপমানিত হয় ।


আমার সমস্ত শরীর যখন। 

আপাদমস্তক তোমাকে নিরীক্ষণ করে 

তখন বুঝতে পারি। 

তুমি আমার চেয়ে তিনগুণ। 

বেশি ভয় পেয়োছো।

.............................................................................


হৃদয় গোলাপ

✍️বদরুননেসা সাজু 


এক হৃদয় একটি গোলাপ- দু'ভাগ হতে পারে না। 

করতে চাইলে পাঁপড়ি ঝরে দুমড়ে মুছড়ে যায় হৃদয় ভাগ? 

রক্ত ঝরে রক্ত ঝরে। 

জানি তুমি এসে ফিরে যাবে আজ 

প্রতীক্ষা শেষে যেভাবে ফিরে প্রেমিক 

কষ্টে আচ্ছন্ন মৌন মুখে হতাশায়, 

তোমার কর্ম উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আমার একান্ত অভিপ্রায়। 


ভালোবাসার দাবির মতো একটি দিন চেয়েছো 

কতোবার গিয়েছো নির্দিষ্ট ঐ পার্কে। 

আমার খবরের আশায়। 

আমি অপারগ, 

তুমি আমার প্রেমিক নও আশা ভঙ্গ? 

তাতে কী? 

একজন হয়তো পেয়ে যাবে। 

লেখাপড়া শেষ কর কাজ ধর 

কাজে কাজে একনিষ্ঠ হয়ে উপরের সিঁড়িতে 

পা দেবে জীবন গড়া স্বপ্ন হোক আগে 

বয়োসন্ধি তারুণ্য পেরিয়ে যুবক হও এখন 

কর্মজীবন নিয়ে এসো প্রেম আবেগ 

ভালোবাসার মহড়ায় ।

.............................................................................


অপেক্ষা

✍️বিদ্যুৎ দেব

 

কষ্ট পাওয়া সকলেই বুঝে গেছে 

লংমার্চ, না খেয়ে মরা... 

চুপি সারে বিরানি গেলা

স্নান করা। 

ক্ষমতার গোপন অঙ্ক কষা

সব-ই 

এই কানা মাছি আজ নতুন সূত্র নয়। 

তবুও খেলে গিয়ে তারা

লুকোতে চায়

ভুলাতে চায় সব সত্য 

আড়ালে বাঘ স্বীকারের আশায় 

হরিণের আজো তৃষ্ণা পেলো না 

দিন যায় মাস যায় বছর ...!

.............................................................................


তোমার জন্য

✍️বিপুল বড়ুয়া 


তোমার জন্যে ঘর আমার 

তোমার জন্যে পথ 

তোমার জন্যে ভালোবাসা 

অনন্ত দাসখত। 

খুবতো দেখি সুখেই আছে। 

খুবই ভালো আছো। 

কোথায় কবির ঘরগেরস্থি। 

পালিয়ে তুমি বাঁচো। 

তোমার জন্যে সুখ আনবে 

তোমার জন্যে কষ্ট 

ধুত্তোরি ছাই হিসাব নিকাশ 

হলাম না হয় নষ্ট। 

তোমার জন্যে ঘর আমার 

তোমার জন্যে হার। 

কী বোঝে কিছু নাতো 

কষ্ট বোঝে নার।

.............................................................................


চন্দ্রমুখী তুই কি আমার

✍️বিপ্রতীপ অপু


কোন জনমে ছিলিরে তুই আমার পাশে, 

তোর শরীরের গন্ধ যে পাই দূর্বাঘাসে। 

ছুঁয়ে দিতিস শিশির হয়ে খুব সকালে, 

ফড়িং হয়ে ঘাসের বুকে মুখ লুকালে।। 

প্রজাপতির ডানা রঙের ঝিলিক মেখে, 

রামধনু রঙ ছড়িয়ে দিতিস আমার চোখে। 

একটি পাখি ঘুলঘুলিতে দুষ্টু ভারী, 

চন্দ্রমুখী সেই পাখি কি তুই আমারি? 

ছিলিস নাকি পাখি হয়ে বুকের খাঁচায়

নাকি চড়ই-শালিক হয়ে লাউয়ের মাচায়? 

সন্ধ্যাতারার ঝিলিক নাকি পিদিম আলো, 

কোন ফাগুনের গন্ধ মেখে বাসতি ভালো?

চন্দ্রমুখী তুই কি আমার গল্প গাঁথা, 

তুই কি আমার সুখ-সুখানী দুঃখ-ব্যথা?

.............................................................................


অধিকার

✍️বিশ্বজিৎ বড়ুয়া 


খেয়ে উপপাসে মরে যাবি 

পোড়া কপালি! তাহলে মর । 

সেই মরণ আমরা চাই না। 

মরব, দিয়ে মরণ কামড়। 

রক্ত পিপাসু করছে শোষণ 

নেই তাদের চক্ষু বসন। 

নিঃস্ব নও, সটান দাঁড়াও 

ছিনিয়ে নাও নিজের আসন। 

বজ্রকণ্ঠে শপথ নিলাম 

আনব দেশে আইনের শাসন। 

চাই না কোন দীর্ঘ ভাষণ। 

চাই সবার ভরণ-পোষণ।

.............................................................................


যেভাবে জন্ম দেয় ওহি বাংলার ওষ্কার

✍️বিশ্বজিৎ সেন 


মানুষের যন্ত্রণার বাঁশি হয়ে বেজে যাবো চিরকাল। 

কবি তো খেয়ার মাঝি চেনা তার ইহ-পরকাল। 

যান্ত্রিক খাচায় থেকেও কবি মেলে অযান্ত্রিক ডানা 

সর্বকালের নভো; কারণ তার ঠিকানাটা জানা! 

মানুষের ভাবনার শেষ যেইখানে কবিদের সেইখানে শুরু 

অনেকের থাকতে পারে কিন্তু আমার নেই কোন গুরু। 

প্রকৃত অগ্রজ কবিদের প্রতি শ্রদ্ধাবনত রবো আজীবন 

সাপ্রবাদ বর্ণবাদ প্রাণের বৈরী যা কবিতায় রবে সঞ্জীবন। 

বাইরের চাকচিক্য নয় অন্য এক সুন্দর করছে আহ্বান! 

মানবমঙ্গলের পথ কুসুমাস্তীর্ণ নয়’-কে করে সাবধান?! 

বৈতরণীর বুকেই সুখ পায় বাউল কবি দুই পার দূরে! | 

সাম্পানে নামে ওহি জন্ম দেয় ওঙ্কার বাংলার বর্ণ জুড়ে।

.............................................................................


বাতাসে অভিশাপের গর্জন

✍️মঈন মুরসালিন

 

মেঘের ভেলায় চড়ে বেদের সংসারের মতো 

অপ্রত্যাশিত অনির্দিষ্ট সময়ের সওয়ার। 

অনুভবে অনুভবে কবুলের সুর বাজে 

মাছের জীবনের মতো পরলোকে বেকসুর খালাস 

লোভ কাটা গলায় আটকে ছিন্ন ভিন্ন কোমল স্পর্শ


পাহাড়ের উঁচু থেকে ছিটকে পড়ার মতোই নেমে নেমে আসে 

ধুমায়িত অবয়ব যুগল। মোরগ-মুরগির লজ্জা ঢাকার মতো 

নিজেদের গোপন করতে স্ব-সাব্যস্ত।


কিংকর্তব্যবিমূঢ়! বাতাসের স্নিগ্ধতা পুড়ে পুড়ে যায় যেনো

অপ্রত্যাশিত আগুনের ছোবলে 

বাতাসে বাতাসে অভিশাপের গর্জন।

.............................................................................


কথা

✍️মনিরুল মনির


রঙ মেখেছে ফাগুন 

আনত এক বৃক্ষের 

গায়ে লেগেছে আগুন

ভাষার মধ্যে বাতাস 

কথার মধ্যে থামছে আজ।

.............................................................................


তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি

✍️মহাদেব সাহা 


তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি 

কতবার দ্বারস্ত হয়েছি আমি 

গীতিকবিতার, 

কতদিন মুখস্ত করেছি এই নদীর কল্লোল 

কান পেতে শুনেছি ঝর্ণার গান। 

বনে বনে ঘুরে আহরণ করেছি পাখির শিস 

উদ্ভিদের কাছে নিয়েছি শব্দের পাঠ, 

তোমাকে লিখবো বলে একখানি চিঠি 

সংগ্রহ করেছি আমি ভোরের শিশির 

তোমাকে লেখার মত প্রাঞ্জল ভাষার জন্য 

সবুজ বৃক্ষের কাছে জোড় হাতে দাঁড়িয়েছি আমি 

ঘুরে ঘুরে গুহাগাত্র থেকে নিবিড় উদ্ধৃতি সব 

করেছি চয়ন, তোমাকে লিখবো বলে 

জীবনের গৃঢ়তম চিঠি হাজার বছর 

দেখো কেমন রেখেছি খুলে বুক।

.............................................................................


সার্বভৌমত্ব ফিরে পেতে চাই

✍️মুহম্মদ নুরুল আবসার


আলো আঁধারি মুখোমুখি এক সন্ধ্যায় 

বসেছিলাম শর্তযুক্ত দ্বিপাক্ষিক আলোচনায়। 

আমরা সহমত পোষণ করে চুক্তিবদ্ধ হলাম 

কেউ কারো সার্বভৌমত্ব লংঘন করবো না,

প্রভুত্বগিরিতো নয়ই।


পর্যবেক্ষণে থাকা দূর আকাশের সন্ধ্যাতারার আভায়। 

জ্বলজ্বল করে জ্বলে ওঠে প্রিয়তমার সলাজ মুখ 

দখিনা মিষ্টি হাওয়ার দুষ্টুমিতে মেতে উঠে উড়ন্ত চুল 

পিনপতন নিরবতায় চলে চোখে চোখে সহবাস।


হঠাৎ কি জানি কি হলো তার 

কালবৈশাখি ঝড়ের মতো প্রচণ্ডগতিতে 

চুমোয় চুমোয় বিপর্যস্ত করে তুলে আমাকে। 

লংঘিত হলো চুক্তি, বিধ্বস্ত শরীরে অসহায় আমি


বিচার চাইলাম-একজনের বান কি মুনের কাছে 

আমি আমার সার্বভৌমত্ব ফিরে পেতে চাই 

তিস্তা চুক্তির মতো কোন ব্যুরোক্রেসি নৃত্য 

আমার একদম ভালপ লাগে না।


আমি আমার সার্বভৌমত্ব ফিরে পেতে চাই।

.............................................................................


ডাকে মহাকাল

✍️মুহম্মদ নূরুল হুদা


কুকুরু-কু ডাকে মহাকাল

লালঝুঁটি পুণ্যাহ সকাল,

ভ্রমর করছে রেকি আমের মঞ্জরী,

ঘুরে যায় বহ্মাণ্ডের ঘড়ি।


হালখাতা বন্ধ হলে নতুন বালাম

চন্দ্রদশা মাস আনে, সূর্যগতি বছরের নাম

আপন অক্ষের উপর ঘুরতে ঘুরতে

মাতা ধরণীর কাছ থেকে সৌর এই দিবস পেলাম।


শ্রীহর্ষাব্দ, বিক্রমাব্দ, বলভাব্দ, শকাব্দ, গুপ্তাব্দ

আকবরের তারিখ-ই-ইলাহি হয়ে সবুজ বঙ্গাব্দ;

জল, ঘাম, মাটি আর বোধি ও হৃদয়

এই যৌথ চাষাবাদে বাঙালির মূল পরিচয়;

অনন্তর কৃষিকৰ্ম, নবান্ন, আমানি।

বাঙালি প্রাকৃত জাতি, ধ্যানী আর ধানী।

পদ্মা-যমুনার মতো তবু অভিমানী।


.............................................................................


হৃদয়ের ক্যানভাসে

✍️মুহাম্মদ মাসুম বিল্লাহ্


আমাকে আগলে রাখার অভিপ্রায়ে 

একটু উষ্ণতা চেয়েছিলাম 

তোমার ভয়ঙ্কর দাপটে সে মগ্ন চেতনা প্রসারিত হলো 

পোড়া উনুনে লুপ্ত হলো সবটাই । 

বিকেলে জ্যোতিও তখন আঁধারে আচ্ছাদিত 

আলোকিত মানুষের পরিচয় তখন আবছা আলোয় 

ডাইরীর বিমর্ষ পাতাগুলো ক্রমশ হলুদ হতে হতে 

স্মৃতিগুলো পড়ে রইল থরে থরে সাজানো 

প্রশ্নবাণে সরল উক্তি । 

“কার কাছে যাব আমি, কার কাছে যাব?” 

ঠিকানাবিহীন যাত্রা তাই প্রতিনিয়ত 

ভেতরে বাইরে চলতে থাকা ক্ষরণ 

তন্ন তন্ন করে খুঁজে ফিরি দুর্লভ মুহূর্তগুলো 

হৃদয়ের ক্যানভাসে স্মৃতির মিছিল 

প্রচণ্ড ক্ষরণে নিঃশেষ করে আমাকে।


তবুও তোমার বন্ধ কপাট খুলবে না! 

তোমার উঠোননা গড়াগড়ি গেলেও না! 

আর্তচিৎকারে আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হলেও না! 

তবুও খুলবে না! 

খুলবে না তোমার বন্ধ কপাট!

.............................................................................


বসন্তের আদালতে

✍️মু. গোলাম রব্বানী


গোলাপের গোলাপ কুঞ্জে অভিসার 

কানাকানি পড়ে যায় গোলাপেরই বাগানে। 

ফুলেদের এ কানাকানি আর কিছু অস্ফুট জানাজানি 

আকাশে প্রস্ফুটিত নীল কাব্যের মত দীঘল সত্য আজ। 

শন-শন করে উত্তরীয় মায়ায় উষ্ণ বাতাসে ছুঁয়ে যায় 

দক্ষিণের উত্তরমুখী বর্ষাস্নাত ফুলের নগ্ন-পাপড়ি, 

দ্বারভেদে আসা পুবের হোঁচট খাওয়া সোনালী রোদ এর স্বাক্ষী।


গন্ধ বিলানো মৌতাত ভাসে রাতের রৌদ্র জোছনায় 

মৌমাছির পাখসাটে- রাতের গোপন দীর্ঘশ্বাসে, 

সন্ধ্যার বোরকা পরা শরীর কালোর আবছায়া এর স্বাক্ষী।


লুকানো প্রেমালয় থেকে থেকে প্রকম্পিত হয় । 

কেউটের ভয়ার্ত গর্জনে, শামুকের নিবিড় গহ্বরে, 

তবুও চৈত্রের দুপুরে বিষন্ন কণ্ঠে ধ্বনিত হয়। 

অবিনাশী কবিতার শ্যামলিম পংক্তিমালা। 

আকাশের এক ফালি ছায়া-ফেলা মেঘ এর স্বাক্ষী।


এই স্বাক্ষীরা তোমরা সব আস আমার বেহালাময় সময়ের পাশে 

আর সত্য স্বাক্ষ্য দাও দ্বিধাহীন নির্মল মনে, 

আমার ভিতরে বেড়ে ওঠা প্রেমিক আজ বসন্তের আদালতে, 

আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো।


আজ স্বাক্ষ্য দাও- ঐ কানাকানি সত্য। 

আজ স্বাক্ষ্য দাও- ঐ জানাজানি সত্য। 

আমি অন্তত ভিতরে ভিতরে দণ্ডিত ফাঁসির আদেশ থেকে রেহাই পাই। 

আর, পেয়ে যাই বেকসুর খালাস।

.............................................................................


ফিরে এসেছে রবীন্দ্রনাথ

✍️মানজুর মুহাম্মদ 


ফিরে আসে রবীন্দ্রনাথ 

প্রহরের বাঁকে, রোদেল ওড়নার দোলে, প্রাণের সুখে 

প্রেম-বর্ষার জলের ঘ্রাণে, জল-জোছনার রূপোর টানে। 

হলুদ মাঠে, আমের শাখে, নদীর ঢেউয়ে, বকুল বুকে।


ছায়া ফেলে রবীন্দ্রনাথ 

নিঝুম দুপুরের চকচকে ঠোটে 

নিঃসঙ্গ শ্রান্ত দোয়েলের উদাসী চোখে 

অনন্ত রাতে কৃষ-জোনাকির সবুজ ফুলে 

টল-মল-টল চোখের জলে, হীরক-তারার কুলে।


পাশে থাকে রবীন্দ্রনাথ 

মায়ায় বাঁধে বুকের পাজর, দুঃখের ঘর 

আলতো মুছে চোখের দ্বিধা, বোবা কান্নার অমোঘ মেঘ 

মন-অন্দরের পাতাললোকে প্রবল করে সুরের বেগ।


ফিরে আসে রবীন্দ্রনাথ, ফিরে এসেছে রবীন্দ্রনাথ।

.............................................................................


শিওয়ালা

✍️মাহীরাজ মোহাম্মদ 


হ্যামিলনের বংশীবাদক, 

ছড়াল ফের সুরের মাদক, 

সুরের মোহে পিছু পিছু গোটা বাংলাদেশ

কেউ জানে না ছুটছে কোথা যাত্রা নিরুদ্দেশ! 

পাকা বাঁশিওয়ালা

সুরে প্রাণ উতলা

সুরের শুরায় মাতাল হল, ষোল কোটি প্রাণ; 

ভুলছে সকল বিজয়গাঁথা অর্জন-অম্লান। 

বৃদ্ধ যুবা সবে

মরবে নাকি ডুবে? 

তবে, কেন ছুটছে সবাই ভয়াল সাগর পানে? 

ভুলছে কেন সোনার অতীত একাত্তরের গানে? 

অন্ধ-সমকাল

বীভৎস ভয়াল। 

ভুলছে জাতি ভুলছে আজি নিজের ইতিহাস, 

দাস-সাগরে মরতে ডুবে প্রাণেতে উচ্ছ্বাস। 

মাঠ পেরিয়ে, ঘাট পেরিয়ে, 

কাটাখালির হাট পেরিয়ে 

সকল পেশার সব জনতার নামছে যেনো ঢল, 

কৃষক-শ্রমিক, ছাত্র, গুরু, নায়ক কিংবা খল। 

ছুটছে কবি

অচল ছবি 

বুদ্ধিজীবী, সুজন' যারা ফেলে নিজের কাজ, 

ছুটছে সবাই বিবেক গেছে নির্বাসনে আজ! 

কত কালের দূর? 

বাজবে এমন সুর?

কেউ জানে না হাঁটছে সবাই পথের পরে পথ! 

কেউ জানে না থামবে কোথা? 

এমন যাত্রারথ!!

.............................................................................


আত্মসমর্পন

✍️মিলন বনিক

 

প্রতিদিন সবুজের স্বপ্ন ডানায় ভয় করে। 

রঙিন সুতোয় ভালোবাসার স্বপ্ন বুনি। 

অভাবের তাড়নায় প্রিয়তমার পাংশু মুখ দেখেও 

আমার কখনও মনে হয়নি, 

বনানী, ধানমন্ডি কিংবা গুলশানের সুরম্য এপার্টমেন্টের কথা, 

যেখানে নিয়ত স্বর্গ সুখের স্বপ্ন বিলাস। 

ভেবেছিলাম সবুজ জমিনে গাঢ় লাল পাড়ের শাড়িতে 

তোমায় বেশ মানাবে। 

লাল ফিতার সাথে যদি খোপায় খুঁজে দেয় দু’টো রক্ত জবা, 

তবে তো কথাই নেই। 


নির্দিষ্ট কোন কাঁচের ফ্রেমে নয়, 

নদীর জলে খুঁজে নেব তোমার সুন্দরের সংজ্ঞা। 

বিএমডব্লিউ কিংবা মার্সিডিজে নয়, তুমি আসবে 

আলতা পায়ে বর্ষার কাদা জল মাড়িয়ে 

নদীপারের সেই পুরানো বটগাছের নীচে, 

বসে কাটাবো অখণ্ড অবসর, অলস দুপুর, দীর্ঘ সময় । 

সযত্নে গুছিয়ে দেবো বর্ষার মাতাল হাওয়ায় 

উড়তে থাকা এলোমেলো চুলগুলো। 

তোমার ভালো লাগবে ভেবে, 

উচ্চবিলাসী কোন স্বপ্ন দেখা হয়নি। 


পড়ন্ত বিকেলে গাছ পাকা আমের সাথে 

কাঁচা লংকা আর লেবু পাতা মিশিয়ে, 

মধুমাসের ফল খাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। 

স্যান্ডউইচ কিংবা ফ্রাইড চিকেন খাওয়া হয়নি। 

রাত জেগে ললাডশেডিং এর যন্ত্রণায়। 

হাঁস ফাঁস করার কোন উৎকণ্ঠাও ছিল না। 


সবুজের আঙ্গিনায় হাস্নাহেনা, শিউলী কিংবা কাঁঠালি চাপার 

গন্ধ মাখা সাদা জল জোসনায় দাঁড়িয়ে 

মধ্যরাতে দেখতাম অনন্ত অম্বর।

পদ পৃথিবীর সুখী মানুষের তালিকায় 

আমরা উঠে আসতাম এক নম্বরে। 

অতঃপর নীল কষ্টগুলো বিসর্জন দিয়ে। 

দু'চোখ ভরে দেখতাম রাতের আকাশ,

এখনি হয়তো খসে পড়বে অসংখ্য ধ্রুবতারা। 

ষে সবুজের গালিচায়, মেঘ পালকের বালিশে শুয়ে 

অনুভবে, উপলব্দিতে হতো আমাদের আত্মসমপন।

.............................................................................



বৈশাখের প্রথম প্রহর

✍️মো. হারুন অর রশিদ

 

বৈশাখ মানে রঙ বেরঙের 

পোশাক পড়া রমণী, 

বৈশাখ আসে লাল সাদা 

শাড়ি পড়া কামিনী। 

খোঁপায় বেলী ফুল আর 

গলায় মুক্তোর মালা 

কণ্ঠে রবীন্দ্র-নজরুল আর 

হাতে বরণ ডালা। 

বৈশাখ আসে রমনা বটমূলে 

জারি সারি গান আর কবিতা 

বৈশাখ আসে সবার জন্য 

সুখ সমৃদ্ধির বারতা। 

আউল বাউল গেয়ে ওঠে 

বৈশাখ এলো ভাই 

পুরনো সব কষ্ট ভুলে 

নতুনের গান গাই। 

ধুয়ে যাক মুছে যাক 

পুরনো সব জঞ্জাল 

সুখ শান্তির শুভ আগমনে 

শুরু হোক আজকের সকাল।

.............................................................................


অন্তরার জন্যে ভালোবাসা

✍️মোহাম্মদ ইলইয়াছ 


অপ্রত্যাশিতভাবে অন্তরা এলো, 

স্বপ্নের বেলাভূমে 

টুকরো টুকরো কথা, নিরব-নিভৃতে। 

হাজার স্বপ্নের মাতামাতি, 

ভেসে যায় দিন-রাত্রি 

রেখেছি হৃদয়ের বেঞ্চে, 

দৃষ্টি মাইক্রোস্কোপ লেলে।


পদ্মফোটা মুখে অন্তরার হাসি, 

যেন পুষ্প রাশি-রাশি 

অন্তরার বাগানের মতো আজও ফোটেনি 

কোন ফুল অন্তরার ভঁজভাজ এলোকেশ। 

অন্তরা সেজেছে বেশ দৃষ্টির বন্যা 

বয়- নিপ নিম্পলকে।


স্বপ্নগুলো ঘুরে ভাবনার হাটে, 

প্রত্যাশার প্রহর কাটে হৃদজমিন জুড়ে, 

অন্তরার জন্যে অন্তঃপুর পোড়। 

অন্তঃপুরের সবগুলো বাতি জ্বলে থাকবে অনন্তকাল

অন্তরার জন্যে...

.............................................................................


আবেগ

✍️মোহাম্মদ মিজান উদ্দীন 


যাই যাই দিন চলে সময়ের তালে, 

জীবনবন্দী আছে কিছু মায়া জালে। 

মনের গোপন খবর কে বা বুঝে, 

কার ভালো মন্দ কে বা খুঁজে। 

আশার বাণী খুললে চোখে জল আসে, 

এই ভূমিতে কেউ হাসে কেউ ভাসে, 

হৃদয় ভাঙা গানে কে সুর দেবে, 

ভাবি শুধু এই আবেগের কখন কি হবে। 

ক্ষয়ে ক্ষয়ে যায় শুধু সব আশা, 

বুঝেনা কেউ চোখের সুন্দর ভাষা। 

তবু স্বপ্ন গড়ি নিজের মত করে 

যা কিছু ভাবি নিই প্রাণ ভরে, 

আবেদন জানাই মনকে মন শান্ত হয় না, 

মনের গহীনে হাজার রকমের বায়না। 

জীবন যে স্রোত ধারা বয়ে যায়, 

কি পায় কি পায় না তার হিসাব কে চাই। 

আবেগ ভরা মানবতা বুঝে না কেউ 

কষ্টের কারণে হৃদয়ে অস্তিরতার ঢেউ, 

নয়নে বাধে ছোট ছোট কিছু কথা, 

একুট খুশি এলে বেরে যায় আন্তরিকতা। 

মন প্রাণ আবেগ প্রবণ হতে হয়,

চার পাশের ভালো মন্দ যেন বুঝে হৃদয়।

.............................................................................


বীরাঙ্গনা

✍️মৃনালিনী চক্রবর্তী 


বীরাঙ্গনা বলে বিদ্রুপ কর। 

বিদ্রুপের মাঝে ক্ষোভ 

আমি কি করিনি মুক্তিযুদ্ধ 

ভাঙিনি কি হায়েনাদের লোভ। 

আমাকে আমি করেছি যোদ্ধা। 

ভয়-ভীতি, মায়ার বাঁধন ছিড়ে । 

দেশকে এনেছি শক্র থেকে কেড়ে 

মুক্ত স্বাধীনতার নীড়ে। 

কত না খেয়ে, লাঞ্চিত হয়ে 

বুদ্ধির জট খুলে 

বিভীষিকায় এঁকেছে, বাংলার চিত্র যারা 

তাদের অহঙ্কার মূলে। 

করেছি আঘাত, দেখিতেছি পথ, 

বীর মুক্তিযোদ্ধার মুক্তিযোদ্ধার 

ঘরে নাম নেই আমার 

রেখেছ বিদ্রুপ করে।

.............................................................................


প্রেমের লিরিক

✍️রমজান আলী মামুন


ক.  

বৃদ্ধ হয়েছি বেশতো 

তুমি ও হয়েছে বৃদ্ধা। 

সামনে দাঁড়ালে এসে 

বুকে নেবো ভালোবেসে।


হারাবার কোন ভয় নেই 

নেই তাই উল্কণ্ঠা 

বৃদ্ধা হয়েছে বেশ তো 

তবু বাঁধা আছে মনটা

খ.


তোমায় নিয়ে ইচ্ছে করে 

স্বপ্নে মেতে উঠি

তোমার হাতে এ হাত রেখে 

সাধ জাগে আজ অনেক দূরে ছুটি

.............................................................................


অবস্থান 

✍️রহমান লতিফ


নিবু নিবু প্রদীপের মত দুটি চোখে 

বিশীর্ণ দেহের অন্ত্যজ কর্ম, 

বৃথা বেঁচে থাকার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা, 

আয়ত্তের অতীত নিকটে হাজির করা 

ভুলুষ্ঠিত সম্মানকে টেনে উত্তোলন, 

পরিচিত জনের নিকট প্রিয়তর হওয়া, 

যাহা পাইনি তাহার আশা করা, 

সর্বজনের নিকট অভিনয়ে ব্যস্ত থাকা। 

নির্লজ্জ আতিশয্য বড়ই বাহুল্য। 

আমি মনে করি- তাহা অনেক দূরে 

বিবেচক প্রাজ্ঞজনের সমীপে প্রজ্ঞা বিতরণ 

হোক তাহা খাঁটি, অথবা পুঁথিগত 

তবুও পারিনা থাকিতে মত্ত

বৈঠকি মজাদার রসালো আমেজে। 

উবে যাবে কপুরের মত 

অথবা কলকে ঘুরবে অন্যদের হাতে 

শুধু আমি ছাড়া। 

গুণীদের মাঝে নিগৃহিত হবে চরম ভাবে 

উপলব্ধির শিকড় দেশে, মর্মে হানবে আঘাত। 

অমুল্য বচন মূল্যহীন হবে। 

তাচ্ছিলতায় পাবে পরিপূর্ণতা। 

বোবার নেই কোন শত্রু, 

নেই কোন আরাধনা, 

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ নিস্পাপ জীব।

সেই বোবার হাতে নিয়ে বায়াত 

আনন্দচিত্তে প্রশান্তির উচ্চমার্গে ।

.............................................................................


না-বলা কথা

✍️রহমান রনি 


টুপটাপ বৃষ্টি পড়ছে আমি জানালা দিয়ে বৃষ্টির সাথে কথা বলতে চাই। 

যা আমি তোমাকে বলিনি, বলতে পারিনি 

আজ আমার মন কেন জানি অস্থির হয়ে ওঠেছে, আজ তোমাকে সব বলবো, 

আমাকে বলতেই হবে।

হলে যে আমি অপরাধী হয়ে যাবো নিজের কাছে 

মেঘের দুঃখ আমার চেয়ে কম নয় তাই তো অবিরাম কেঁদে চলছে, 

আমি তো কাঁদতে পারি না, 

তাহলে আমার দুঃখগুলোর কি হবে? 

মেঘ আকাশের বুকে আশ্রয় নিয়েছে কিন্তু আমি কার বুকে আশ্রয় নিবো? 

তোমাকে আমি বুঝাতে চাই আমার হৃদয়ের কথাগুলো, 

আমার স্বপ্নগুলো। 

বিন্দু বিন্দু করে তোমার জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি করেছি মনে। 

তুমি কি একবারও বুঝনি আমার ভালোবাসা, 

আমার হৃদয়ের কথাগুলো। 

তুমি তো পাষাণ নও। 

তুমি মায়াবতী তোমার মায়ায় আমি মুগ্ধ বৃষ্টি শেষের পথে 

না বলা কথাগুলো আর গোপন রইলো না।

.............................................................................


ভালোবাসি

✍️রাজীব শীল

 

রক্তে মাংসে গড়া দেহটিতে দুই অরে গঠিত শব্দটির 

অস্তিত্ব আছে বলেই মন মন্দিরে তোমার 

ভালোবাসার প্রতিমা গড়ি শতবার।


জানি না সে পালালে তুমিও রূপকথার অদৃশ্য রাণী হবে কিনা? 

তোমার কাজল অঙ্কিত দুচোখে আমি তখনো স্বপ্ন পুরুষ থাকব কিনা?

তবুও ক্ষণিকের অতিথি হওয়া অর্থহীন জীবনের 

দুঃষহ যাতনার অনলে দাঁড়িয়ে শুধু বলতে ইচ্ছে করে 

ভালোবাসি-ভালোবাসি-ভালোবাসি তোমাকে।

.............................................................................


পালা বদল

✍️রেজাউদ্দিন স্টালিন  


সৌন্দর্যের মূলসূত্র বদলে গিয়েছে অভিধানে,

সেখানে নিয়েছে ঠাই বীভৎস বিনাশ শব্দটি। 

বিবেক নিজেই দেয় অগ্নিমন্ত্র ক্রুরতার কানে, 

হৃদয়ের ষড়যন্ত্রে পুড়ে যায় সতের করোটি। 


স্বপ্নের সাহায্য নিয়ে হত্যা করা হয় কবিদের, 

প্রেমের প্রশ্রয় পেয়ে বেড়ে ওঠে গোকুলে ঘাতক। 

বদলে গিয়েছে দিন, অন্ধকার প্রিয় নবীদের; 

বৃশ্চিকের পদতলে নতজানু সিংহের জাতক।


চোখের প্রেমিক সেও হরিণের মাংস বিক্রি করে, 

সবুজ পাগল কেউ হত্যা করে বৃক্ষশিশুদের। 

ঘরের আকুতি ছিড়ে দাস হয় অন্য কারো ঘরে, 

পরদেশ ভালো লাগে গুণমুগ্ধ দেশপ্রেমিকের।


পালাবদলের পালা শেষ হতে কত মূল্য লাগে, 

সে কথা কি বুঝেছিলো বঙ্গজন গৌতমের আগে।

.............................................................................


প্রতীক্ষার সেই মুখ

✍️লাভলু চক্রবর্তী 


কেবল মুহূর্ত সময়ক্ষণ গুণে গুণে 

কত রাত কত স্বপ্ন দেখা ভোরে 

প্রতীক্ষা আর শত কল্পনায় কেটেছে 

অন্ধকারের গহীনে অবরুদ্ধ ছায়া প্রচ্ছায়া 

খুঁজেছি তোমায় তৃপ্তির স্নিগ্ধতায় ভেজাতে 

কোমল রঙিন ভালোবাসায়। চাইনি ভালোবাসার 

কালোদ্বীপে গড়বে তুমি বসত?


প্রতীক্ষার মরুভূমিতে বর্ষার বীজ বুনেছি 

কোমল তোমার ঐ দুটি চোখে আর 

পাপড়ি ভেজা ঠোটখানিতে লাজুক । 

লাজুক মুখখানি ভাসুক গভীর স্পন্দনে 

জাগুক নির্লোভ আমার বুকের চাদর। 

তোমার কাঁপন লাগা বুকে।


বটবৃক্ষের ছায়ায় চার দেয়ালের আলো আধার কিম্বা 

পাহাড়ের পাদদেশে যুগল আলাপনে বয়ে যেতে 

প্রচণ্ড ঝড় নিঃশ্বাসের। ছিলো কল্পনার রোমাঞ্চকর শতরঙ 

যেনো তুলির আঁচড়ে হতো বিশাল ক্যানভাস। 

ভালোবাসার। মনে পড়ে যায় ক্যাম্পাসের ফেলে। 

আসা ভালোবাসাময় সেই মুখ। 


লাজুক ঠোট আর চোখের আয়নায় আজো খুঁজে ফিরি 

বর্ষার গর্জন শুধু দু’জন অনুভব অভিমান 

জীবন পতাকায় মোড়া কিছু অভিযোগ 

ডাকে বারবার হাতছানি দিয়ে ডাকে আমায় 

অতঃপর..... তারপর..... তুমি আমি 

সেই প্রতীক্ষার ক্ষণ।

.............................................................................


বৈরী সময় এখন

✍️লিলি হক

 

বৃষ্টি ভেজা বাতাসে 

মিষ্টি মধুর আবেশে 

গাছের ছায়ায় মদির হাওয়ায় 

কেঁপেছিল দুটি মন 

লজ্জা-ভয় কিছুক্ষণ।


দাঁড়িয়ে ছিলাম দুর্বাঘাসে 

চোখে চোখ হির-রঙধনু পুবাকাশে, 

পথচারী পারাপার চারপাশ লাোকজন 

হুডখাোলা রিকশায় 

বড় বেশি উন্মন।


এখন এই মধ্যরাতে . 

স্মৃতির দাহে কলম হাতে, 

কবিতা আর তুমি। 

তবু হৃদয়ে ক্ষরণ 

জেনে গেছি কারণ 

আমাদের বৈরী সময় এখন।

.............................................................................


তিরস্কার যেন উপহার

✍️লীনা রহমান 


আশার তরী ঢেকে নিল কালো মেঘে তোর 

বুকে নিয়ে বেড়াবি কত ব্যথার পাহাড়? 

আপন গুণে আপন মেনে করছিস আত্মত্যাগ, 

মুখে মধু বুকে বিষ করে গেল শুধু ভোগ। 

মিথ্যা দিয়েই জোড়াতালি জ্ঞানের কলসি খালি 

চোখে লকলকে লোভ, মুখে অশ্রাব্য গালি।


তবুও ব্যক্ত করিলে হৃদয়ের ভার 

জীবনে তিরস্কার হবে যেন উপহার 

ললাহিত বরণ রবির কিরণ 

ছুঁয়ে থাক এই দ্বিধাগ্রস্ত মন।


ভেঙে খান খান হলো জীবন তরী তোর 

ভুখা ফাকা কত যেন ছাড়িয়ে একাকার 

নিশুতি রাতের কান্না শোনার মত কে আছে 

সুযোগ পেলেই উদাস চোখে প্রেম যাচে 

ছেড়া পাল ভাঙ্গা বৈঠা তোর 

ছলছল জলে ঝড় বইবার কোথায় জোর।


যেন সোনা ঝড়া রোদ সুরেলা গীতি 

থাকতে জীবন এলো রে মরণ 

চোরা বালির বাঁধ।

.............................................................................


হারানো শ্রাবণ

✍️লুৎফুন নাহার হাসি 


বর্ষা শেষ হয়ে গেছে 

শরতের মেঘগুলো লুকোচুরি খেলে 

মাঝে মাঝে আকাশ নীলে 

তারাদের আনাগোনা। 

এরি মাঝে আবার শুরু হলো 

বৃষ্টির ঝিরঝিরে হাওয়া।


ভেবেছিলেম বর্ষায় ভিজে যাওয়া সেই মন। 

পুরাতন স্মৃতির আবেগ বিহ্বল কবিতার সুর 

নিয়ে গেছে সাথে করে।


হৃদয়ের মাঝখানে রয়ে গেছে যে 

সে যেন আবার এসেছে ফিরে। 

সারাদিন রিমঝিম ঝিপ ঝিপ বৃষ্টি 

কি যে এক অনাসৃষ্টি। 


হারানো শ্রাবণ যেন ফিরে ফিরে আসে 

ভালোবাসা-ভালোলাগা স্মৃতি বিভ্রাটে 

সময় অতিক্রম করে হৃদয়ের বদ্ধ দুয়ারে 

কেবলি কড়াঘাত করে।


আমি শুধু চেয়ে থাকি 

জানালার পাশে ভিজে যাওয়া সবুজ গাছে 

ফুল নেই তবুও কি অপূর্ব সৌরভ ছড়ায় বাতাসে 

আমি পেয়েছি খুঁজে হারানো সেই শ্রাবণকে 

কষ্টগুলো ধুয়ে মুছে 

যেমন ভালোবাসা ফিরে আসে।

.............................................................................


তুমি কি চাও

✍️সুমনা সুমি


তুমি কী চাও? 

সত্যি করে বলতো 

তুমি কী চাও? 

আমার নরম হাতের স্পর্শের স্বাদ? 

আঙুলের খুনসুঁটি?


নাকি দীঘল কালো চুলের ছত্রছায়া

যেখানে বেড়ে উঠবে তোমার পুরুষালী ঘ্রাণেন্দ্রিয় 

যা এক টানে করে ফেলতে পারে আমা ছিন্ন ভিন্ন

পুড়ে অঙ্গার 

নাকি আমার চোখের পদ্ম! 

তুমিই একদিন বলেছিলে, 

আমার চোখে পদ্ম দেখো

কী জানি ছাই! 


সেদিন থেকে এ পদ্মে কত যে সাপ দেখেছি! 

অবাক হয়েছি- ডুকরে কেঁদেছি

জানি সবই পদ্মের লোভে লোভ 

দেখেছি আমার সারা অঙ্গে

পায়ের নখ থেকে গালের তিলে

সে কী লোভ রে বাবা! 

ছুঁচো বেড়ালও হার মানবে! 


পলাতক নারীর মত আমার জীবনযাপন 

রেখে ঢেকেও কত অষ্টপ্রহর বৃথা যায়

কত সৈন্য হয় কাবু, 

আমার এ রাজ্য দখল তবু যেনো শেষ হয় না। 

পালা বদলে কত রাজা আসে রাজপুত্তর আসে, 

রাক্ষস, খোকস- কও কি ছোঁয়ার আশায়, সবি বৃথা! 


আমি বেঁচে যাই বারবার

শুধু, কেউ আমার মন ছুঁতে আসে না। 

ভুল করেও না। 

ওরা জানে না- কিসে আমার ভয়! 

ওরা বোঝে না সেখানেই আমার পরাজয়'।

.............................................................................


কবিতার জন্য কবিতা

✍️সুলতানা নুরজাহান রোজী 


কবিতা তোমার জন্য আজ আমি 

বড় বেশি উতালা! 

তোমার লাল টিপ খানি অধর করেছে লাল 

আমি শুনেছি বাতাসের শোঁ-শোঁ প্রলয়ে 

তোমার কেশর কালো চুল গুলো 

বড় বেশী এলো মেলো আর দিশেহারা 

কিন্তু কেন কবিতা- তোমার। 

হরিণ চোখ দুটি অথৈই জলে ছল ছল। 

আর টইটুম্বুর। 


কবিতা তোমার কাছের কুটুমগুলো আজ

বড় বেপোয়ারা আর অগোছালো

ঝড়ের তাণ্ডবে উড়ে গেলো তোমার 

কিছু স্বপ্ন আর কোলাহল। 

কবিতা তুমি কি পারছো

তাদের মনের খোরাক মিটাতে 

নাকি তোমার ও চোখের চাউনি 

পড়েছে সুখের চাহনিতে। 

কবিতা নন্দিত ঝলসানো হাতটি তুমি। 

আর ধরো না প্লিজ কবিতা

সোডিয়াম বাতির নিচে আর দাঁড়িয়ে থেকোনা 

প্লিজ কবিতা- প্লিজ 

কবিতা তোমার পরনের শাড়িটা উজ্জ্বল 

রঙে প্রিন্ট করে নিওতো

মাকে সাদা শাড়িতে অবলা। 

আর অবহেলিত মনে হয়। 

দুয়ারে দুয়ারে উড়ছে তোমার শাড়ির সুতাগুলো 

বুননটা একটু শক্ত করে নিও 

যাতে কোন দুয়ারের খোঁচা লেগে 

ছিড়ে না যায় তোমার আঁচল। 

কবিতা পথটা তোমার বড় অসমতল। 

আর বেছে নিওনা কালো অন্ধকারে 

হুতোম পেঁচা না হয়ে।

কুঁড়িয়ে নাও তোমার সব শক্তি দিয়ে 

ধরণীর সব সুন্দর আলো।

.............................................................................


নিসর্গ

✍️সাঈদুল আরেফীন


তুমি

আমাকে পুড়িয়ে

মেরেছো ক্ষোভের আগুনে

অনাদিকাল ধরে

জ্বলিনি আমি কোনকালে

চাইনি সে আগুন জ্বলুক দাউ দাউ করে

বুকের ভেতরে।

চেয়েছি আগুন ভালোবাসার অন্তর্জালায়

পুড়বো সে আগুনে আমি

কৃষ্ণচূড়ার লালে, ভালোবাসার রঙে

যাবো তোমায় রাঙিয়ে

স্বপ্নান্বেষণে পা ফেলে

চলছি আজো সন্তর্পণে আমি।

রঙিন প্রচ্ছদে এখনো জ্বালিয়ে রেখেছো

পিদিম নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত মনোভূমিতে।

যেখানে এখনো খেলছি

আমিও তোমার ক্ষোভে।

নীল আকাশের উদার সীমানায়

দিগন্তের পাড়ে ভাবছি নূতন পৃথিবী দেবো পাড়ি

আবারো দু’জন মিলে হই আনমনা

একাকী অন্য এক নিসর্গ যাবো গড়ে।

.............................................................................


আমি কিন্তু ঝিনুক নই

✍️সাহিদা রহমান মুন্নী


আমি কিন্ত ঝিনুক নই,

তবে ঝিনুকের মতো শক্ত আবরণে ঢেকে রাখি,

মুক্তদানার মতো ছোট-বড় অনেক ধাচের কষ্ট!

কতো ধুলোবালি, কতো জলরাশি,

আর কতইনা নিষ্ঠুর ঢেউয়ের বোবা নির্যাতন হয়,

আমার এ শক্ত বাহুর উপরি পৃষ্ঠে!

আমি তবুও বিচ্যুতি হতে দেইনা।

আমার একান্ত আমার আগলে রাখা।

এ অমূল্য মুক্তদানার মতো ছোট-বড় রকমারী কষ্ট!


আমি কিন্তু ঝিনুক নই,

তবে ঝিনুকের মতো শক্ত আবরণে ঢেকে রাখি মুক্তদানার মতো অনেক ধাঁচের কষ্ট !

কেউ দেখে না, কেউ বোঝে না, কেউ জানেও না

আমি কেবলই বহতা নদীর মতো অবিরাম ছুটে চলেছি,

মুক্তদানার মতো কষ্ট চেপে গন্তব্যহীন পথে

ঝিনুক একটা পরিণত সময়ে উপচে ঢেলে দেয় তার আগলে রাখা মুক্তারাশি

নিজেকে শূন্যে ভাসার মতো কিছুটা হলেও হালকা অনুভবে অনভূত হতে পারে

আর আমি?


আমার আগলে রাখা মুক্তদানার মতো কষ্টগুলো দেখাবো

এমন কেউ একজনও নেই এই কিবা সেই ধরাতলে !

আহত এ মনের করুণ জিজ্ঞাসায় কার কাছে যাবো আমি, কার কাছে যাবো”

আজন্ম এ তুষা নিয়েই কালান্তর।

হচ্ছে এক এক করে অনেক সময়!

“বুও দেখতে হবে স্বপ্ন” জীবনের এ কান্তিকালে অমিয় এ বাণী শোনাতে,

আমার হয়ে কেউ অপেক্ষমান নেই!

আশাহত হৃদয়ে মুক্তদানার মতো কষ্টগুলো চেঁপে গন্তব্যহীন পথে ছুটেই চলেছি!


আমি কিন্তু ঝিনুক নই

তবে ঝিনুকের মতো শক্ত আবরণে মুক্তদানার মতো কষ্টগুলো আগলে রাখি

বিভিন্ন ধাচের কষ্ট! |

আমি কিন্তু ঝিনুক নই।

.............................................................................


নদী মরে গেলে

✍️সিতাংশু কর


আমি নদী এক

খরা জলাধারা

অবিরাম ছুটে চলি

গতিই জীবন।


স্থিতিতে বিনাশ

চলতে চলতে বলি।

আমার দু-ধারে

ফসলের মাঠ

বুনো ঝোপ লতাপাতা

অমল হাসিতে

মুখরিত হয়।

পুলকে দোলায় মাথা।

লাল-নীল আর

হলুদ ফুলের

বর্ণালি মেলা দেখে

অজানার পথে।

নেচে নেচে আমি

ছুটে চলি এঁকেবেঁকে।

চলতে চলতে

শুনি আমি কত

ঘুঘু শালিকের গান

জলের সেতারে।

তুলি আমি তাই

সুরের ঐকতান।

দু’পারে আমার

সুখী মানুষের।

শন-পাতা-ছাওয়া ঘর

সূর্য সেখানে

আলোর পর্দা

মেলে রাখে দিনভর।

গাঁয়ের কিশোর।

কিশোরীর দল

গড়াগড়ি দেয় ঘাসে

কত ছুটোছুটি

কত লুটোপুটি

খিলখিল তারা হাসে।


চলতে চলতে

দেখি আমি সেই

হাসি খুশি রাশি রাশি

মানুষের সুখ

মানুষের মুখ

কী যে আমি ভালবাসি!

কিন্তু লোভরা

কখনো আমার ভালবাসা বোঝে নাকো

বলে তারা নদী

ছুটে চলা নয়।

নিথর দাঁড়িয়ে থাকো।

তুমি থেমে গেলে।

দু’পারে আমরা।

কত কী গড়তে পারি।

কলকারখানা

মস্ত দালান।

অট্টালিকার সারি।

আমি তো কখনো

দাঁড়াতে শিখি নি।

ছুটে চলা শুধু জানি

লোভী মানুষের

লালসার কাছে।

তবু শেষে হার মানি।

আমাকে থামাতে

কত কৌশল।

কত চলে ছলাকলা

কেউ ভরে ফেলে।

দু’পাশ আমার।

কেউ চেপে ধরে গলা।

বোঝে না লোভরা

নদী মরে গেলে

মানুষ বাঁচে না আর

হাজার বছর।

চলছে নদী ও

মানুষের সংসার।

.............................................................................


ঘুমপন্ন

✍️সিমলা সুর


বাদামীর মূর্তি পুর্ণাঙ্গ কৃষ্ণ ঘেরা মধ্যদ্বীপ

অন্তহীন লোভ নিবিড় ভাবনায় সুপ্তজল,

মেঘের যত রঙ খেলছে আকাশ কোলে

আনমনা নিধুম সুদুরিকা,

আবার হারিয়ে যাও স্বপ্নে বিভোর

কোন সে দূরে…

চোখে আমার ঘুম, নিশ্চিত ঘুম… আর ঘুম

আমি এক ঘুমপদ্ম ।।


উদাসী ফাকে গুছিয়ে রাখ তোমাকে অনন্ত গভীরে

শত সহস্র নিশ্ৰুপ কথোপকথন,

মায়াবী প্রহরে, ঘুমপ্রিয়া বিলায় চাঁদের পরশ

অধরের ইশারা খুঁজে বেড়ায়,

সফেদ চাদরের ভাঁজে ভাঁজে ইচ্ছেরা

সৌরভ ছড়ায়


নিঘুম আর কবিতা আমার প্রিয়তম তৃষা

নেই বাধার কোন সংকেত

বিহঙ্গ সুখ কপোত চুম্বন…

সর্বত্র মিলায়ে সারা বেলা

অথৈই সুখ জ্বালা!


আর মধ্যরাতের ঘুম নির্জনে

প্রিয়? ফিরিবে না জাগ্রত ঘরে!

জানিনা… শুধু জানি আমি তোমারই বক্ষবাসি।

এই অন্তপুরে যে প্রিয়া… আমার স্বর্গঘর।

.............................................................................


সিনার ভঁজে মিনা রায়

✍️শামীম খান যুবরাজ


চোখের কোণে এ কোন্ হাসি

উছলে ওঠে কিনারায়,

মনের ভুলে উঠল দুলে

হৃদয় আমার- মিনারায়।


দুষ্টু দু’ঠোট কাঁপলে বুঝি

ধসে পড়ে মনদেয়াল,

ধূর্ত হৃদয় স্বতঃস্ফূর্ত

ডেকেই ওঠে মনশেয়াল।


হাওয়ার তোড়ে যখন ওড়ে

ওড়না তোমার ঢেউ তুলে,

পাখনা গজায় মনপাখিটার

উড়াল মারে সেও ভুলে।


ছন্দে মাতাল চলন দেখে

বুকে কী যে সৃষ্টি হয়!

প্রেমাকাশে ঝড় ওঠে ফের।

রিমঝিমিয়ে বৃষ্টি হয়।


ভাঁজ খুলো না- ভাঁজ খুলো না

সিনার ভেতর মিনা রায়,

লুকিয়ে থেকো মনকুঠুরির

প্রেমভরা সেই কিনারায়।

.............................................................................


আহ্বান

✍️শাহানা জেসমিন


কীর্তি নাশিনী নদীর মতো অপশক্তিরা উন্মাদ

কখন জ্বালাবে বাংলার রক্তাম্বর অঙ্গ শোভায়।

দুর্বোধ্য মানচিত্রের বিষাদ।


কোথাও গুলির শব্দ কোথাও মৃত্যু ফাঁদ

সন্তান হারা মায়ের বুক ফাটা আর্তনাদ

বায়ান্না জেগেছে, জেগেছে একাত্তর

শাহবাগে প্রজন্ম জেগেছে থাকবে না বন্ধুর।

আকাশে বাতাসে প্রতিধ্বনি ন্যায় বিচারের স্লোগান।

বাংলার সংসদে পাশ হচ্ছে নতুন নতুন বিধান

বাতাসে বিলীন হবে না কখনো মুখরিত শ্লোগান

চির ভাস্বর হয়ে থাকবে স্মৃতিতে অম্লান

জয় বায়ান জয় একাত্তর জয় নতুন প্রজন্মের অত্মদান

আমি শাহানা জানাই চিহ্নিত অপরাধীদের

দ্রুত বিচারের আহ্বান।

.............................................................................


সুখের দিনলিপি

✍️শাহানারা রশীদ ঝরনা


সুখ আসে না অন্ধকারে মাতাল ঘরে

সন্ধেবেলা ধূপ জ্বলে না মাদক জ্বরে

অসাবধানে উঠছে বেড়ে বিষের চারা

রক্ত খোয়াব বারুদবঅধে দেয় না নাড়া।


কৃষ্ণকলি মেঘের রঙে পলাশ রাঙে

ছাদনা তলায় কার ঝিয়ারী কোমর ভাঙে

বিদগ্ধতায় অমানবিক নকশা আঁকি

শুকনো ঝিনুক মুক্তো ভেবে শিকেয় রাখি।


সুখবালিকা পারদচোখে কাজলটানে

মেঘ-যুবারা নাগরা পায়ে ভ্রান্তি আনে

দিনলিপিতে নাই তো কোন ছলা কলা

তবু কেন মিথ্যে নিয়ে চমকে চলা?


কেউ যদি চায় ধরতে দু’হাত ধরুক তবে

মোহান্ধতার শক্ত বাধন শিথিল হবে।

ঢেউ ফ্যাশনে নাচবে নারী দুলবে মাটি

সেই আশাতেই বুকের ভেতর পুকুর কাটি।

.............................................................................


ভালোবাসার দরজা

✍️শাহাবুদ্দীন নাগরী


হাত ছোঁয়াতেই হাতে আমার জাগলো ভোরের আলো,

বুকের ভেতর আকাশ-মাটির পূর্ণতা চমকালো।

বন্ধ শরীর খুললো দুয়ার, পিঠের ওপর ডানা,

দেরাজ জুড়ে হাজার চিঠি পড়তে তো নেই মানা।

বুকের ওপর হুমড়ি খেয়ে পড়লো কালের পাখি,

পালিয়ে থাকা প্রহরগুলো করলো ডাকাডাকি।


চোখের ভেতর স্মৃতির ছবি ছুটছে ট্রেনের বেগে,

অনেক বেলা পেরিয়ে গেছে অমলধবল মেঘে।

মরচে পড়া হাতের আঙুল খুঁজছে ইতি-উতি,

নতুন পথে হাঁটতে আমার ঘটছে পদচ্যুতি।

এই ভূ-ভাগে যা আছে সব হৃদয় দিয়ে কেনা,

জমার খাতা শূন্য তবু, বাকীর খাতায় দেনা।

পুড়িয়ে দিলাম বাকীর খাতা, উপরওয়ালা হাসে,

ভালোবাসার দরজা খুলে দিলাম অনায়াসে।

.............................................................................


নীল চাঁদ

✍️শিবু কান্তি দাশ


সেদিন ঘটল অবাক ব্যাপার।

আকাশ কোলে চাঁদ উঠেছে নীল

শীতলক্ষ্যার জলের রাশি ।

করছিল ঝিলমিল।


জানি চাঁদের জোসনা সাদা

নীল হল কাল রাতে

এমন চাদের আলো পেয়ে।

রাত জাগি তার সাথে।


ছেলে বুড়ো শিশু-কিশোর

দেখছে চাদের রূপ

ঘর ছাড়া সব উৎসাহী দল

দিচ্ছে আলোয় ডুব।


শীতলক্ষ্যার দু’পাড়েতে।

বাঁধভাঙা সে ঢেউ

দেখছিল ঐ কিয়াংয়ে থাকা

বৌদ্ধ ভান্তে সেও।

.............................................................................


জীবন মানে কী

✍️হাবীব সাখায়েৎ


জীবন মানে কী?

জীবন মানে কী- যাবতীয়

সুখ-দুঃখের হিসেব-নিকেষ

আনন্দের জোয়ারে

গা ভাসিয়ে দেয়া?

নাকি

স্ত্রীর সন্তান ধারণের খবর শুনে

পেটে হাত বুলিয়ে দেখা

কিংবা

পাঁজাকোলো করে

স্ত্রীকে নিয়ে সারা ঘরময়

নাচিয়ে তোলা?

আসলে জীবন মানেটা কী?

তোমরা কে কী বুঝ।

কিংবা

কে কী বলবে।

আমার হয়তো জানা নেই। তবে

আমি যেটুকু বুঝেছি

জীবন মানে- প্রেমহীন, ভালোবাসাহীন

মৃত্যুর জন্যে

তৈরী হওয়া।

.............................................................................


তুমি সবুজ শাড়িটা পরলেই

✍️হাশিম মিলন


( তাকে, যে আমাকে বৃষ্টি নিয়ে একটা কবিতা লিখতে বলেছিল )


আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলেই উদাসী বাউল তুমি

বৃষ্টির জন্যে প্রতীক্ষা করো, প্রার্থনা করো।

বৃষ্টি আসার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে ঝড়ো হাওয়া আর

মেঘের গুড়-গুড় তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে।

তুমি তখন সবুজ শাড়িতে যেন সবুজ ঘন অরণ্য।

বৃষ্টির জন্যে যার অনন্তকালের প্রতীক্ষা।


টুপটাপ বৃষ্টি শুরু হলে

তুমিও সেতারের মতো বেজে ওঠো টুংটাং

তারপর ত্রস্ত পায়ে সিঁড়ি ভেঙে উঠে যাও ভোলা ছাদে

দালানের শহরে ছাদ ছাড়া বৃষ্টির সাথে অভিসারের

মোম জায়গাই বা কোথায়।


মধ্যদুপুরে তুমুল বৃষ্টির সাথে তুমি সখ্য গড়ো

তারপর, বৃষ্টির সাথে খেলতে খেলতে

তুমি হয়ে ওঠো বৃষ্টি-বালিকা।

তুমুল বৃষ্টিতে ভিজে যায় তোমার শাড়ি,

তোমার খোলা চুল থেকে, তোমার চিবুক ছুঁয়ে

রুপোলি স্ফটিকের মতো বৃষ্টি গড়িয়ে পড়ে অবিরাম।

তোমার পায়ের পাতায়।


বৃষ্টিতে ভিজলে তুমি হয়ে ওঠো স্নিগ্ধ, সতেজ অপ্সরা

বৃষ্টিভেজা সবুজ শাড়িটা তখন কি নিখুঁতভাবে

জানিয়ে দেয় তোমার শিল্পিত শরীরের

মোহময় প্রতিটা বাঁক, উপত্যকার মাধুর্য।

বষ্টি-বালিকা নয়, তুমি তখন হয়ে ওঠো কামনার দেবী।


তুমি সবুজ শাড়িটা পরলেই

আমার কেবলই তুমুল বৃষ্টি হতে ইচ্ছে করে।

.............................................................................



অন্বেষণ

✍️হোসনে আরা আলম


অপেক্ষা করে আছি

বর্ষ বর্ষ ধরে,

এই পৃথিবীর মাটির ওপরে।

এই নিষ্ঠুর জড়ে স্রোতে ভেসে ভেসে।

অপূর্ব অমৃত সুধাপানে, সৃষ্টির আনন্দ সৃজনে।

আসবে সে শান্তির বাণী নিয়ে

সহস্র ছায়াপথে, মায়াপথ ঘুরে

আসুক সে; অতি সঙ্গোপনে।

সহস্র রক্তপাত, গ্লানিময় হিংসা সংঘাত।

একটি ফুকারে মিশে যাবে


ওঙ্কার ধ্বনি যখনই পশিল জনান্তিকের মর্মে মর্মে।

যখনই অপেক্ষমান সহস্রাব্দের বেড়াজাল ভেঙে

রাতভর কুয়াশার অস্বচ্ছ অন্ধকারে

প্রতি নিঃশ্বাসে প্রতি পলে পলে

আমার এ নিশ্ৰুপ সংলাপ, একাকী মুখর হবে নিজের অজান্তে

সহস্র হৃদয়াবেগ, সহস্র অতৃপ্ত আকিঞ্চন

নিস্পলক চেয়ে আছে, বর্ষ বর্ষ ধরে

আমার হৃদয় ছুঁয়ে, বার বার একটি প্রতীক্ষার তরে।

সেদিন আসবে কবে। আসবে কী কভুও কখনও

হয়তো বীরের বেশে, হয়তো বা সাধারণ মানুষের মাঝে

আসবে সে একদিন। আসবে সে সকলের মাঝে।

শান্তির বাণী নিয়ে, অশান্তির জঞ্জাল সরাতে।

অভিমান বেগে, অবিরাম অন্বেষণ

এই শুধু আমার আকিঞ্চন।


.............................................................................

অনুবাদ কবিতা


ভালবাসার কথা বলতে যেও না কখননা

উইলিয়াম ব্ল্যাইক

অনুবাদক: মো. শফিউল আজম


খুঁজো না কাউকে বলতে কথা ভালোবাসার

বলা কি যায় কখননা, কথা ভালোবাসার?

দেখোনা স্নিগ্ধ বাতাস যায় বয়ে,

নীরবে, কারো কানে কথা না কয়ে।


আমি বলেছিলুম, আমি বলেছিলুম তাকে

বলেছিলুম উজাড় করে পুরো হৃদয়টাকে।

বলেছিলুম মৃত্যুসম ভয়ে, শীতে কম্পমান

আহা! তবু কি ঠেকনো গেলো তাহার প্রস্থান?


আমা হতে যেতে না যেতে

আগন্তুক এলো এক কোথা হতে?

নীরবে, দর্শনাতীতভাবে

নিয়ে গেলো তারে, কতো না সহজে!


✍️লেখক পরিচিতি: উইলিয়াম ব্ল্যাইক ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে ১৭৫৭ সালের ২৮ নভেম্বর এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তার জীবদ্দশায় তিনি তেমন জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারেননি কিন্তু দপ্তর সময়ে অনেক সমালোচকই উইলিয়াম ব্ল্যাইককে রোমান্টিক যুগের অন্যতম কবি হিসেবে বিবেচনা করেন। উইলিয়াম কখনোই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করেননি, তিনি ছোটবেলায় তার মায়ের কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁর লেখায় চিন্তাশক্তির গভীরতা দেখে অবাক হতে হয়। “ভালোবাসার কথা বলতে যেও না কখনো” কবিতাটি ইংরেজী থেকে অনুবাদ করা হয়েছে।




কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.